টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক আঙিনা থেকে অবসর নিয়েছিলেন বছর দুয়েক আগেই। কিন্তু দুবাই টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেই টি-টোয়েন্টির ঢঙেই ব্যাট করে রবিবার ছুঁলেন ২৮ বছর আগেকার স্যর ভিভ রিচার্ডসের বিশ্বরেকর্ড। ব্যাটসম্যান: মিসবা-উল হক। বয়স: ৪০ বছর ১৫৮ দিন। কিছু দিন আগে টেস্টে ক্রিকেট থেকেও যাঁর অবসরের জল্পনা শুরু করেছিলেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
দুবাইতে শতরানের পথে টেস্টে দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরির নতুন রেকর্ড আগেই গড়েছিলেন। এ বার ১৭৭.১৯ স্ট্রাইক রেটে টেস্ট ক্রিকেটের দ্রুততম শতরানের বিশ্বরেকর্ডও ছুঁলেন পাকিস্তানের টেস্ট অধিনায়ক। এর সঙ্গেই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১৯৯৪ সালের পরে এই প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়ের হাতছানির সামনে দাঁড়াল পাকিস্তান। অস্ট্রেলিয়ার সামনে ৬০৩ রানের বিশাল টার্গেট রাখার পিছনে মূল কারিগর মিসবা ছাড়াও ছিলেন আজহার আলি। দ্বিতীয় ইনিংসে যাঁর শতরানের দৌলতে আরও একটি অভিনব রেকর্ড গড়ল পাকিস্তান। একই টেস্টের দুই ইনিংসেই দ্বিতীয় বার জোড়া শতরান করল কোনও এক দল। এর আগে টেস্ট ইতিহাসে এই রেকর্ড ছিল কেবলমাত্র অস্ট্রেলিয়ার দখলে। ১৯৭৪ সালে ওয়েলিংটনে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ইয়ান ও গ্রেগ—চ্যাপেল ভাইয়েরা দুই ইনিংসেই জোড়া শতরান করেছিলেন। দুবাই টেস্টেও প্রথম ইনিংসে শতরান করেছিলেন মিসবা ও আজহার আলি। সঙ্গে ছিল ইউনিস খানের ডাবল সেঞ্চুরি।
রবিবার দুবাইয়ের শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে মাত্র ৫৬ বলে শতরান করেন মিসবা। ১৯৮৬ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্টে সমসংখ্যক বলে শতরান করেছিলেন স্যর ভিভ। এই রেকর্ড ছাড়াও ২৩ মিনিটে মাত্র ২০ বলে হাফ সেঞ্চুরি করে জাক কালিসের রেকর্ড ভাঙলেন মিসবা। ২০০৫ সালে নিউল্যান্ডে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে মাত্র ২৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন দক্ষিণ আফ্রিকার কালিস। ৫টি ছয় ও ১১টি চার দিয়ে সাজানো ইনিংসে এক বার জীবন পান মিসবা। ব্যক্তিগত চার রানের মাথায় তাঁর সহজ ক্যাচ মিস করেন পিটার সিডল। তবে এর পরে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। শেষমেশ স্টিভেন স্মিথের বলে আউট হওয়ার আগে ৭৪ মিনিটে নিজের শতরান পূর্ণ করেন মিসবা।
মিসবার এই কীর্তিতে উচ্ছ্বসিত তাঁর সতীর্থ-সহ বিশ্বক্রিকেট। টুইটারে মিসবাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন শাহিদ আফ্রিদি, ভি ভি এস লক্ষ্ণণ, ডিন জোন্সের মতো বহু ক্রিকেট তারকা।