কোচবিহারে ভোট দিচ্ছেন তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। ছবি: হিমাংশু রঞ্জন দেব।
উত্তরবঙ্গের চারটি কেন্দ্র দিয়ে রাজ্যে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হল লোকসভা ভোট। এ দিন ভোট হচ্ছে কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে। কেন্দ্রগুলিতে দুপুর ১টা পর্যন্ত গড়ে ৬০% ভোট পড়েছে। দুপুর পর্যন্ত চারটি কেন্দ্রের বিভিন্ন জায়গায় কিছু বিক্ষিপ্ত গণ্ডগোলের খবর পাওয়া গিয়েছে।
রাজগঞ্জের কুকুরজান এলাকার বৈরাগীপাড়ায় একটি বুথে সিপিএম কর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় গুরুতর জখম অবস্থায় এক জনকে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সিপিএমের জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, রাজগঞ্জের সরকারপাড়া, হরিপালপাড়া ও বৈরাগীপাড়ায় তৃণমূল কর্মীরা সিপিএম সমর্থকদের বাড়িতে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছে। অন্য দিকে, কোচবিহার-আলিপুরদুয়ারে বাম কর্মী ও পোলিং এজেন্টদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের বিরুদ্ধে। এ দিন কালিম্পংয়ে তিনটি জায়গায় তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে বুথ জ্যাম করার অভিযোগ করেন মোর্চা নেতা বিনয় তামাঙ্গ।
এ দিন শিলিগুড়ির গজলডোবা এলাকার একটি বুথে তৃণমূল, কংগ্রেস ও সিপিএম সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গিয়েছে। এই ঘটনায় এক জন সিমিএম সমর্থক-সহ ১২ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, তৃণমূলের তরফ থেকে সিপিএমের ২৭ সমর্থকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ঘটনা প্রসঙ্গে এলাকার তৃণমূল প্রার্থী বিজয় চন্দ্র বর্মন বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে তাঁকেও হেনস্থা করেছে সিপিএমের কর্মীরা।
এ দিন সকালে তুফানগঞ্জে শাসক দলের বিরুদ্ধে তাঁদের পোলিং এজেন্টকে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করে ফরওয়ার্ড ব্লক। জলপাইগুড়ির বাম প্রার্থী মহেন্দ্র রায় বিভিন্ন জায়গায় দলের কর্মীদের আটকে দেওয়ার অভিযোগ করেন শাসক দলের বিরুদ্ধে। যদিও দু’ক্ষেত্রেই অভিযোগ খারিজ করেছে তৃণমূল। দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ির বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ৩০টি বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্র (ইভিএম) খারাপ হয়ে যাওয়ায় ভোট পর্ব শুরু হতে কিছু দেরি হয়। কোচবিহারেরও কয়েকটি বুথে ইভিএম খারাপ থাকায় কিছুটা দেরিতে শুরু হয়েছে ভোট। আলিপুরদুয়ারে সকাল থেকেই চা বাগানগুলিতে ঘুরে ভোটারদের মন বোঝার চেষ্টা করেছেন তৃণমূল ও বাম প্রার্থী যথাক্রমে দশরথ তিরকে ও মনোহর তিরকে। এই কেন্দ্রেও শান্তিপূর্ণ ভাবেই চলছে ভোট পর্ব। এ বারের ভোটে উত্তরবঙ্গের চার কেন্দ্রে মোট প্রার্থী ৪৭ জন। এঁদের মধ্যে তিন জন মহিলা। তৃণমূল, বাম, কংগ্রেস, বিজেপি ও বিএসপি চারটি কেন্দ্রেই প্রার্থী দিয়েছে।
কেন্দ্র
প্রার্থী
ভোটের হার
বিকেল ৫টা পর্যন্ত
গত বারের বিজয়ী
দার্জিলিং
ভাইচুং ভুটিয়া (তৃণমূল), সমন পাঠক (বামফ্রন্ট)
সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া (বিজেপি), সুজয় ঘটক (কংগ্রেস)
৭১.৫০ শতাংশ
যশবন্ত সিংহ
(বিজেপি)
২৫৩২৮৯ ভোটে
আলিপুরদুয়ার
দশরথ তিরকে (তৃণমূল), মনোহর তিরকে (বামফ্রন্ট)
বীরেন্দ্রবড়া ওরাওঁ (বিজেপি), জোশেফ মুণ্ডা (কংগ্রেস)
৮০ শতাংশ
মনোহর তিরকে
(আরএসপি)
১১২৮২২ ভোটে
জলপাইগুড়ি
বিজয়ভূষণ বর্মণ (তৃণমূল), মহেন্দ্র রায় (বামফ্রন্ট)
সত্যলাল সরকার (বিজেপি), সুখবিলাস বর্মা (কংগ্রেস)
৮২.৭৪ শতাংশ
মহেন্দ্রকুমার রায়
(সিপিএম)
৮৮৩৭১ ভোটে
কোচবিহার
রেণুকা সিংহ (তৃণমূল), দীপক রায় (বামফ্রন্ট)
হেমচন্দ্র বর্মন(বিজেপি), কেশবচন্দ্র রায় (কংগ্রেস)
৮২ শতাংশ
নৃপেন্দ্র নাথ রায়
(ফরওয়ার্ড ব্লক)
৩৩৭৪৯ ভোটে