ব্যাঙ্ক ডাকাতির ঘটনায় ধৃতেরা।—নিজস্ব চিত্র।
তমলুকের পর এ বার রামনগর। ফের শিকেয় ব্যাঙ্কের নিরাপত্তা। যদিও বৃহস্পতিবার সকালে রামনগর বাজারের মধ্যে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ডাকাতি করতে গিয়ে ধরা পড়েছে দুই দুষ্কৃতী। মঙ্গলবার তমলুকের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ডাকাতির ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের রামনগরের এই ঘটনায় রীতিমতো নড়েচড়ে বসেছেন পুলিশ প্রশাসন-সহ ব্যাঙ্কের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। এমনকী তমলুকে ব্যাঙ্ক ডাকাতিতে যুক্ত সন্দেহভাজন দুষ্কৃতীদের স্কেচের সঙ্গে এ দিনের ধৃত দুই দুষ্কৃতীর মুখের মিলও আছে বলে মনে করছে পুলিশ।
কী ঘটেছিল এ দিন?
তখন সকাল পৌনে ১১টা। ব্যাঙ্কের কাজকর্ম সবে শুরু হয়েছে। হঠাত্ই ক্যাশ কাউন্টারের পিছনের দরজা দিয়ে হাত বাড়িয়ে কেউ টাকা তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। ঘটনাটি প্রথম লক্ষ করেন ব্যাঙ্কের ক্যাশিয়ার রণেন মিত্র। রণেনবাবুর কথায়, ১০০ টাকার নোটের ১০ লক্ষ টাকার একটি বান্ডিল তুলে নিয়ে পালাবার চেষ্টা করছিল এক দুষ্কৃতী। সময় নষ্ট না করে দুষ্কৃতীকে ধাওয়া করেন রণেনবাবু ও ব্যাঙ্কের অন্য কর্মচারীরা। ব্যাঙ্কের পিছনের দরজা দিয়ে নেমে ছুটতে শুরু করে ওই দুষ্কৃতী। তার সঙ্গে আরও এক জন ছিল বলে জানিয়েছেন রণেনবাবু। বাজারের ঠিক মাঝামাঝি জায়গায় দুই ডাকাতকে ধরে ফেলেন এলাকার বাসিন্দারা। ধৃতদের ব্যাঙ্কের মধ্যে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেন রণেনবাবু।
পুলিশ জানায়, ধৃতদের কাছ থেকে কিছু টাকা উদ্ধার হলেও কোনও অস্ত্রের হদিশ পাওয়া যায়নি। তমলুকের ডাকাতির ঘটনায় জড়িত চার দুষ্কৃতীর মধ্যে যে দু’জনের স্কেচ প্রকাশ করা হয়েছিল তাদের সঙ্গে এ দিনের ডাকাতির ঘটনায় ধৃতদের মুখের মিল রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের একজনের কাছ থেকে সচিত্র ভোটার কার্ড পাওয়া গিয়েছে। এই কার্ডের মধ্যে যে ঠিকানা আছে তা কেরলের। এই কার্ড দেখেই পুলিশ মনে করছে ধৃতরা দক্ষিণ ভারতীয়। তবে এই ঠিকানার সত্যতা যাচাই করছে পুলিশ।
রামনগর বাজারের মধ্যে একটি পুরনো বাড়ির দোতলায় এই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা। তমলুকের হাসপাতাল মোড়ের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মতো এই শাখাতেও এ দিন কোনও নিরাপত্তারক্ষীই ছিলেন না। ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দুয়েকে আগে নিরাপত্তারক্ষী থাকলেও তাদের দুর্গাচক শাখায় বদলি করে দেন ব্যাঙ্কের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। তার পর থেকে প্রহরীবিহীন অবস্থাতেই এত দিন ব্যাঙ্কের কাজকর্ম চলছিল।