বোলপুর আদালত চত্বরে দোষীসাব্যস্তরা। ছবি: বিশ্বজিত্ রায়চৌধুরী
লাভপুর গণধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত মাঝি-হাড়াম (মোড়ল)-সহ ১৩ জন অভিযুক্তকে শুক্রবার দোষী সাব্যস্ত করলেন বোলপুরের অতিরিক্ত জেলা জজ সিদ্ধার্থ রায়চৌধুরী। সরকারি আইনজীবী মহম্মদ সামসুজ্জোহা বলেন, “ওই মামলায় চিকিৎসক, তদন্তকারী অফিসার এবং অন্যেরা মিলিয়ে মোট ৩১ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে আদালত। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬গ ধারায় গণধর্ষণ, ৩২৩ ধারায় ইচ্ছাকৃত মারধর করা এবং ৩৪২ ধারায় বেআইনি ভাবে আটকে রাখার অভিযোগ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হয়েছে।” শনিবার বিচারক দোষীদের সাজা ঘোষণা করবেন বলে তিনি জানান।
গত ২০ জানুয়ারি বীরভূমের লাভপুর থানার সুবলপুর গ্রামে ভিন্ জাতের এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্কে রাখার ‘অপরাধে’ ওই আদিবাসী তরুণী ও তাঁর সঙ্গীকে রাতভর গাছে বেঁধে মারধর করা হয়। পর দিন সালিশি বসিয়ে দু’জনকে জরিমানা করা হয়। অভিযোগ ছিল, তরুণীর পরিবার জরিমানার টাকা দিতে না পারায় গ্রামের মাঝি-হাড়াম বলাই মাড্ডি কয়েক জন যুবককে ওই মেয়েটিকে নিয়ে ‘ফূর্তি’ করার নিদান দেন। ওই রাতেই তরুণীকে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার কথা প্রকাশ্যে এলে তাঁকে খুন এবং গ্রামছাড়া করার হুমকিও দেওয়া হয়। ২২ তারিখ মোড়ল-সহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন ওই তরুণী।
সেই থেকে ওই তরুণী গ্রামছাড়া। সুবলপুরের পাশের গ্রামে সরকারের বানিয়ে দেওয়া বাড়িতেও তিনি যাননি। সিউড়ির একটি হোমে এখনও তিনি মায়ের সঙ্গে থাকেন। এই আট মাসেও মেয়েটিকে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়নি। এ বার কি তাঁকে গ্রামে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে? জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী বলেন, “মেয়েটি যখনই চাইবেন, আমরা তাঁকে ফেরানোর ব্যবস্থা করব।”