আবাসিকদের উপর অত্যাচারের অভিযোগে ফের কাঠগড়ায় সরকারি হোম। শুক্রবার লিলুয়ার সরকারি হোম থেকে পালানোর চেষ্টা করেন ৪০-৪৫ জন মহিলা আবাসিক। এঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। গত ২১ জুলাই এই হোম থেকেই পালানোর চেষ্টা করেন ২৫ জন বাংলাদেশি মহিলা। তাঁদের মধ্যে ২৩ জনকে উদ্ধার করা গেলেও দু’জন এখনও অধরা।
ঠিক কী ঘটেছিল এ দিন?
পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ হোমের গেট ভেঙে বেরিয়ে যান কয়েক জন মহিলা আবাসিক। হোম থেকে বেরিয়ে পিছনের একটি বন্ধ কারখানার মধ্যে ঢুকে পড়েন তাঁরা। মহিলাদের বেরিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে পুলিশে খবর দেন হোম কর্তৃপক্ষ। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই কারখানাটি ঘিরে ফেলে পুলিশ। মহিলাদের বেরিয়ে আসতে বললে পাল্টা পুলিশের উপরেই ইঁট-পাটকেল ছুঁড়তে শুরু করেন তাঁরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে পাঁচটি থানার বিশাল পুলিশবাহিনী। এরই মধ্যে কারখানা থেকে বেরিয়ে পালাবারও চেষ্টা করেন অনেকে। চল্লিশ জনেরও বেশি মহিলা ওই কারখানায় লুকিয়ে ছিলেন বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের। পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, মোট কত জন হোম থেকে বেরিয়েছিলেন এবং সবাইকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে কী না তা খতিয়ে দেখার কাজ চলছে।
পুলিশের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে পৌঁছন রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণ দফতরের বিভিন্ন কর্তাও। রাজ্যের মহিলা ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, “পুরো ঘটনাটা জানতে পেরেছি। আমি নারী ও সমাজকল্যাণ দফতরের কর্তাদের ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। পুরো ঘটনার তদন্ত হবে। মহিলারা কেন হোমে থাকতে চাইছেন না তা খতিয়ে দেখা হবে।”
লিলুয়ার ওই সরকারি হোমে মোট আবাসিক সংখ্যা ২৩৭। তাঁদের মধ্যে অনেকে অনুপ্রবেশকারী, কেউ বা বিচারাধীন বন্দি। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই এই মহিলাদের উপর নানাভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চলত। আবাসিকদের কথায়, ঠিক মতো খেতে দেওয়াও হত না আবাসিকদের। এমনকী পরিবারের লোকেদের সঙ্গে দেখা করার অনুমতিও মিলত না। হোমের পুরুষ কর্মীরা যৌন হেনস্থার চেষ্টা করতেন বলে জানান হোমেরই এক মহিলা আবাসিক। পুলিশ জানায়, এক মহিলা আবাসিকের উপর শারীরিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগে গত মাসে শঙ্কর কুমার নামে ওই হোমেরই এক কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়।