উপাচার্যের ইস্তফার দাবিতে সুর চড়ালেন যাদবপুরের শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
গত এক মাস ধরে তাঁদের দাবি ছিল, ক্যাম্পাসে পুলিশ ডেকে ছাত্রছাত্রীদের পিটিয়েছেন যে উপাচার্য, তাঁকে পদত্যাগ করতে হবে। এ বার আরও এক ধাপ এগিয়ে উপাচার্য পদে অভিজিত্ চক্রবর্তীর যোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুললেন তাঁরা।
মঙ্গলবার গণ কনভেনশন করে যে ‘শ্বেতপত্র’ প্রকাশ করেছে জুটা, তার বক্তব্য, অভিজিত্বাবু উপাচার্য পদের যোগ্যই নন। ওই শ্বেতপত্রে জুটার অভিযোগ, উপাচার্য অন্যের গবেষণাপত্র থেকে টুকেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে টাকা খরচের ব্যাপারে অনিয়ম করেছেন, নিয়োগে দুর্নীতি করেছেন। ৬২ পাতার ওই শ্বেতপত্র আচার্য তথা রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী এবং শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দেওয়া হবে বলে এ দিন জানিয়েছেন জুটার সাধারণ সম্পাদক নীলাঞ্জনা গুপ্ত। অভিজিত্বাবু অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে জুটা-র তোলা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সঙ্কীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থেই এই সব অভিযোগ তোলা হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গাঁধী ভবনে ওই কনভেনশনে যাদবপুরের ছাত্র, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, আধিকারিক, প্রাক্তনী, অভিভাবক-সহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে যান উপাচার্য। কনভেনশনে শ্বেতপত্রটি প্রকাশ করে জুটার সাধারণ সম্পাদক অভিযোগ করেন, রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির নতুন আইন অনুযায়ী যে সব যোগ্যতা থাকলে এক জন উপাচার্য হতে পারেন, তার কোনওটিই অভিজিত্বাবুর নেই।
এ দিনের কনভেনশনে যাদবপুরের এমেরিটাস অধ্যাপক সুকান্ত চৌধুরী বলেন, “নকলের অভিযোগ যদি সত্যি হয়, তা হলে আর কিছু বলার নেই! এর পরেও যদি আচার্য মনে করেন, উপাচার্য হিসেবে অভিজিত্বাবুরই থাকা উচিত, তা হলে আমরা কী করব, জানি না। কারণ শিক্ষাজগতে এর থেকে বড় অভিযোগ হয় না।” অভিজিত্বাবু অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে জুটা-র তোলা সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, “মনে হচ্ছে, আমাকে কালিমালিপ্ত করতে সঙ্কীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থে ইচ্ছাকৃত ভাবে এই ধরনের অভিযোগ আনা হচ্ছে। আমি এর নিন্দা করছি।”
এ দিনের কনভেনশনে সুকান্তবাবুর মতো বেশ কয়েক জন এমেরিটাস অধ্যাপক যেমন ছিলেন, তেমনই ছিলেন প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ সুজন চক্রবর্তী, বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারেরাও। তাঁরা অবশ্য ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী। ছিলেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য পবিত্র সরকার, রাজ্য মহিলা কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারপার্সন মালিনী ভট্টাচার্য। মঙ্গলবার সাধারণ সভার বৈঠক করে পড়ুয়ারা জানান, বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে যাদবপুরে জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছে। উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি নিয়ে আগামী ৩০ ও ৩১ অক্টোবর গণভোট হবে।