জঙ্গলে নিরাপত্তাবাহিনীর মাওবাদী দমন অভিযান। — ফাইল চিত্র।
দেশব্যাপী মাওবাদী দমন অভিযানে বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৯২ কোটি টাকার সম্পত্তি। শনিবার এক বিবৃতিতে এমনটাই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হওয়ায় মাওবাদীদের অর্থের জোগান উল্লেখযোগ্য ভাবে ধাক্কা খেয়েছে বলেই দাবি কেন্দ্রের। একই সঙ্গে ‘শহুরে মাওবাদী’দেরও মনোবল ধাক্কা খেয়েছে বলে মনে করছে সরকার।
আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যে দেশ থেকে মাওবাদ নির্মূল করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্র। সেই লক্ষ্যে গত কয়েক মাসে মাওবাদী প্রভাবিত এলাকাগুলিতে ধারাবাহিক অভিযান চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। একই সঙ্গে চলছে আত্মসমর্পণের পর্বও। কেন্দ্র জানাচ্ছে, আগামী বছরের মার্চ মাসের সময়সীমার কথা মাথায় রেখে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-য় একটি পৃথক দল গঠন করা হয়েছে। এনআইএ-র ওই দল ৪০ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে সাম্প্রতিক সময়ে।
এ ছাড়া বিভিন্ন রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও ৪০ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করছে। পাশাপাশি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর অভিযানেও বাজেয়াপ্ত হয়েছে প্রায় ১২ কোটি টাকার সম্পত্তি। তবে কোন সময়কালের মধ্যে এই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়েছে, তা নির্দিষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়নি সরকারি বিবৃতিতে।
বিবৃতিতে কেন্দ্র জানিয়েছে, একযোগে এই অভিযানের ফলে শহুরে মাওবাদীদের মনোবলেও আঘাত করা গিয়েছে। মাওবাদী প্রভাবিত জেলার সংখ্যা যে অনেকটা কমে এসেছে, তা-ও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে কেন্দ্র। ২০১৪ সালে দেশে মাওবাদী প্রভাবিত জেলা ছিল ৩৬টি। বর্তমানে তা কমে হয়েছে মাত্র তিনটি। বস্তুত, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন সরকারি ও দলীয় সভায় এই পরিসংখ্যান তুলে ধরতে দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে।
সরকারি হিসাবে চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর বিভিন্ন অভিযানে ৩১৭ জন মাওবাদী নিহত হয়েছেন। গ্রেফতার হয়েছেন ৮৬২ জন মাওবাদী। এ ছাড়া অনেকে আত্মসমর্পণও করেছেন। এ বছরে এখনও পর্যন্ত ১৯৭৩ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছেন।
বস্তুত, গত বছরে মাওবাদীদের কেন্দ্রীয় কমিটির এক শীর্ষ নেতা নিহত হন। চলতি বছরে নিহত হন কেন্দ্রীয় কমিটির আরও পাঁচ জন। দু’বছর মিলিয়ে মাওবাদীদের ২৮ জন শীর্ষ নেতা নিহত হন। পর পর এই ঘটনাগুলির জেরে আত্মসমর্পণের ঢলও বৃদ্ধি পেয়েছে।