সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে নামার ৮৪ দিন পরে প্রভাবশালীদের নাম বাদ দিয়েই কেলেঙ্কারির একটি মামলার চার্জশিট পেশ করল সিবিআই। বুধবার কলকাতার নগর দায়রা আদালতে সারদা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস-এর মামলায় প্রথম চার্জশিট পেশ করেছে তারা। তাতে অভিযুক্ত হিসেবে সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন, সারদার অন্যতম ডিরেক্টর দেবযানী মুখোপাধ্যায় এবং সারদার গ্রুপ মিডিয়া সিইও কুণাল ঘোষের নাম রয়েছে। সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা অবশ্য জানিয়েছেন, সারদা কেলেঙ্কারির আরও তিনটি মামলা তাদের হাতে রয়েছে। এটা প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে দেওয়া চার্জশিট। পরবর্তী কালে সমাজের বহু প্রভাবশালী ব্যক্তির নামেও চার্জশিট দেওয়া হতে পারে বলে তদন্তকারীদের বক্তব্য।
সিবিআই সূত্রের খবর, সারদা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস-এর এই মামলায় সারদার আরও তিনটি সংস্থার নাম রয়েছে। এই তিনটি সংস্থা হল: সারদা রিয়েলটি, সারদা হাউজিং ও সারদা গার্ডেন হোটেলস অ্যান্ড রিসর্টস। চার্জশিটে নাম রয়েছে কুণাল ঘোষের সংস্থা স্ট্র্যাটেজি মিডিয়া সংস্থারও। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই প্রাইজ, চিট অ্যান্ড মানি সার্কুলেশন স্কিমস (ব্যানড) আইন ও ভারতীয় দণ্ডবিধির প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গ ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র ধারায় অভিযুক্ত করেছে সিবিআই। সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা বলছেন, সারদার অন্যতম শীর্ষপদে (গ্রুপ মিডিয়া সিইও) ছিলেন কুণাল। সেই সূত্রেই তিনি অভিযুক্ত। কিন্তু সারদা কেলেঙ্কারিতে তাঁর সংস্থার নাম এসেছে অন্য কারণে। কী সেই কারণ?
তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, কুণাল ঘোষের এই সংস্থা একটি বাংলা সিনেমা প্রযোজনা করেছিল। তাতে সারদা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের কয়েক কোটি টাকাও ঢালা হয়েছিল বলে গোয়েন্দাদের দাবি। সেই সূত্রেই স্ট্র্যাটেজি মিডিয়া সংস্থাকে চার্জশিটের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
সিবিআই সূত্রের খবর, সুদীপ্ত, দেবযানী, কুণালদের প্রাইজ, চিট অ্যান্ড মানি সার্কুলেশন আইনে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তদন্তকারীদের ব্যাখ্যা, সারদা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস প্রতি মাসে কিস্তি হিসেবে টাকা জমা নিত। তার বিনিময়ে বছর শেষে আমানতকারীদের কোনও ভ্রমণ প্যাকেজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিত। প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা তোলা এবং প্রতারণার অভিযোগেই সুদীপ্তদের প্রাইজ, চিট অ্যান্ড মানি সার্কুলেশন আইনে অভিযুক্ত করা হয়েছে। সিবিআই সূত্রের খবর, এই সংস্থার সঙ্গেই চুক্তি হয়েছিল রেলের সংস্থা আইআরসিটিসি-র। প্রভাবশালী কারও হস্তক্ষেপে নিয়মকানুনের কোনও তোয়াক্কা না করেই রেলের সঙ্গে সারদার এই চুক্তি হয়েছিল বলে তদন্তকারীদের সন্দেহ। এই তদন্তের কাজও এখনও শেষ করতে পারেনি সিবিআই। তাই এ ক্ষেত্রেও একটি অতিরিক্ত চার্জশিট পেশ করতে পারে এই তদন্তকারী সংস্থা।