জল্পনা ছিল আগেই। শুক্রবার সেই জল্পনারই অবসান ঘটালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ দিন বিধানসভায় আলিপুরদুয়ারকে পৃথক জেলা হিসেবে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী ২৫ জুন থেকে পশ্চিমবঙ্গের নবতম জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে আলিপুরদুয়ার। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ওই দিন থেকে জলপাইগুড়ি জেলাকে দু’ভাগে ভাগ করা হবে। জলপাইগুড়ি সদর আর মাল মহকুমা নিয়ে জলপাইগুড়ি জেলা। আর সাবেক আলিপুরদুয়ার মহকুমা নিয়ে হবে আলিপুরদুয়ার জেলা।
এই ঘোষণার পর থেকেই গোটা জেলা জুড়ে খুশির হাওয়া বইছে। দিকে দিকে আবির খেলায় মেতেছেন আলিপুরদুয়ারবাসী। শুরু হয়েছে মিষ্টি বিতরণ। এ ভাবে ভাগ করা হলে মানুষের লাভ হবে এবং প্রশাসন জনগণের আরও কাছে যেতে পারবে বলেই মনে করছেন আলিপুরদুয়ারের কংগ্রেস বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়। এ দিন তিনি বলেন, “রাজ্যের ১৯তম জেলা হচ্ছে আলিপুরদুয়ার। এই সিদ্ধান্তের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ। আগামী ২৫ তারিখ থেকে একটা নতুন অধ্যায়ের সূচনা হচ্ছে। ওই দিন মুখ্যমন্ত্রী আলিপুরদুয়ারে এলে দলমত নির্বিশেষে তাঁকে সম্বর্ধনা দেওয়া হবে।”
সত্তরের দশক থেকেই জলপাইগুড়ি জেলা ভেঙে আলিপুরদুয়ারকে পৃথক জেলা হিসেবে ঘোষণা করার দাবি উঠেছিল। কিন্তু নানা কারণে এই দাবি কার্যকর হওয়া থেকে পিছিয়ে যায়। ২০০৯ সালে রেলমন্ত্রী থাকার সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আলিপুরদুযারকে পৃথক জেলা হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানান। ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর জলপাইগুড়ি জেলাসাসকের দফতরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে নিয়ে বৈঠক করে সরকারি নথিপত্র তৈরি করা হয়। এর পরে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় ফের জেলা ঘোষণা করার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। ফলে মানুষের প্রত্যাশা আরও বাড়ে।
কেন ভাগ করা হচ্ছে এই জেলা?
আলিপুরদুয়ার মহকুমা থেকে জলপাইগুড়ি জেলা কার্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ১০১ কিলোমিটার। এই মহকুমার অন্তর্গত কুমারগ্রাম ব্লক জেলাসদর থেকে প্রায় ১৪৩ কিলোমিটার দূরে। এ ছাড়াও এই মহকুমার কালচিনি, মাদারিহাট, বীরপাড়া, আলিপুর এক ও দুই ব্লকের দূরত্ব জেলাসদর থেকে কম-বেশি ১০০ কিলোমিটার। এত বেশি দূরত্বের ফলে বিভিন্ন পরিষেবা পেতে এই সব এলাকার বাসিন্দাদের যথেষ্ট অসুবিধায় পড়তে হয়।