Lok Sabha Election 2024

গুরুংকে পাশে নিয়ে মনোনয়ন বিস্তার

সকালে রাজু বিস্তা মহাকাল মন্দিরে পুজো দিয়ে ম্যালে জমায়েতে অংশ নেন। দলের জোট-সঙ্গীদের পাশে বসিয়ে তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে বিজেপির সকল স্তরের নেতৃত্বের কাছে কৃতজ্ঞ।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী ও নীতেশ বর্মণ

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:০৪
Share:

নমিনেশন জমা দেওয়ার পথে, রাজু-বিমল। বুধবার দার্জিলিংয়ে তোলা ছবি। —নিজস্ব চিত্র।

Advertisement

গত মাসে শিলিগুড়ি এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছিলেন, গোর্খাদের দাবিদাওয়া নিয়ে কাজ শেষের দিকে। বুধবার বিমল গুরুংকে পাশে নিয়ে মনোনয়ন জমার আগে দার্জিলিং শহরে মিছিল, সভা করে বিজেপির রাজু বিস্তা জানালেন, ৪ জুন লোকসভা ভোটের ফলাফলের পরে, পাহা়ড়ের দাবি ‘বাউন্ডারি ক্রস’ করে যাবে। আশ্বাস দিলেন দার্জিলিঙের নতুন করে দুর্নীতিমুক্ত উন্নয়ন, পরিকাঠামো গড়ে তোলার। তবে উল্লেখযোগ্য ভাবে, ম্যাল চৌরাস্তা থেকে দীর্ঘদিন পরে দার্জিলিংবাসী গুরুংয়ের বক্তব্য শুনলেন, আওয়াজ উঠল আলাদা রাজ্য, গোর্খাল্যান্ডেরও। তবে দলীয় প্রার্থীর মনোনয়নে গেলেন না বিজেপির সমতলের ‘বিক্ষুব্ধদের’ একাংশ। দলীয় সূত্রে খবর, দলের বিক্ষুব্ধদের মনোনয়নে যেতে বলাই হয়নি।

সকালে রাজু বিস্তা মহাকাল মন্দিরে পুজো দিয়ে ম্যালে জমায়েতে অংশ নেন। দলের জোট-সঙ্গীদের পাশে বসিয়ে তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে বিজেপির সকল স্তরের নেতৃত্বের কাছে কৃতজ্ঞ। তিনি বলেন, ‘‘ভোটের ফলের পরে পাহাড়ের দাবির বিষয় বাউন্ডারি পার হবে। আগামী পাঁচ বছরে আশ্বাস বাস্তবে পরিণত করার কাজ চলবে।’’

Advertisement

মঞ্চ থেকে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি গুরুং বিজেপি প্রার্থীর কাছে গোর্খাদের ‘স্বাভিমান’ বাঁচানোর আবেদন করলেন। শুধু তা-ই নয়, আগামী ৫ বছরের মধ্যে সাংসদ হয়ে পাহাড়ে দাবিদাওয়া যাতে সাংসদ পূরণ করেন, সেই অনুরোধও রাখলেন। যা শুনে গুরুং ও বিজেপির বিরোধীরা পাহাড়ে বলছেন, ‘‘ভোট আসতেই নতুন করে ঝুলি থেকে আলাদা রাজ্যের দাবি সামনে চলে এল।’’

গুরুং অবশ্য এ দিন সভায় একাধারে আলাদা রাজ্যের সমর্থনে স্লোগান ও ১১ জনজাতির তফসিলি উপজাতির স্বীকৃতির কথা তোলেন। কেন্দ্র পাহাড়ে ষষ্ঠ তফসিল দিলে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই বলেও গুরুং জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘রাজু বিস্তাকে গোর্খাদের আত্মসম্মান রক্ষা করতে হবে। বাকি দাবিদাওয়া নিয়েও সাংসদকে কাজ করতে হবে।’’ যা শুনে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা সভাপতি অনীত থাপা বলেছেন, ‘‘আলাদা রাজ্য, ষষ্ঠ তফসিল, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল— গত ১৫ বছরে কিছু আর শোনার বাকি নেই। সামান্য ১১ জনজাতির দাবির স্বীকৃতি এরা দেয়নি। ভোট আসতেই ফের সদলবলে ভাঁওতাবাজি শুরু করে দিয়েছেন।’’ একই ভাবে হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড জানিয়ে দিয়েছেন, বিজেপিকে পাহাড়ে ভোট নয়। তিন দফায় লোকসভায় সুযোগ পেলেও তারা পাহাড়ের জন্য কিছু করেনি।

অন্য দিকে, সমতলের বিজেপি নেতা-কর্মীদের অনেকে এ দিন দার্জিলিঙে রাজুর মনোনয়নে যাননি বলে অভিযোগ। জেলা বিজেপির বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর এক নেতার কথায়, ‘‘মনোনয়নে আমাদের ডাকাই হয়নি। যা ভিড় দেখা গিয়েছে তাতে সমতলের অংশগ্রহণ নেই বললেই চলে।’’ শিলিগুড়ি জেলা বিজেপির সভাপতি অরুণ মণ্ডল বলেন, ‘‘মনোনয়ন জমা করতে সমতল থেকে নেতা, কর্মীদের নিয়ে যাওয়া হয়নি। শুধু পদাধিকারী কয়েকজন ছিলেন। পাহাড়ের মানুষই সেখানে যথেষ্ট। দলীয় কোন্দলের কোনও বিষয় নেই।’’

দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন কার্শিয়াঙের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। এ দিন তাঁর দাবি, ‘‘পাহাড়ের মানুষ রাজুর সঙ্গে নেই। আলাদা রাজ্যের আশ্বাসে প্রতারণা করা লোকগুলি মনোনয়নে ছিলেন, মানুষ ছিলেন না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন