Lok Sabha Election 2024

ওড়িশায় বিজেপির রোষে নবীনের লুঙ্গি

মায়ানমারের জাতীয় পোশাক এই লুঙ্গি বা লোঙ্গাই, ইন্দোনেশিয়া থেকে আফ্রিকার সুদান, ইয়েমেন বা সোমালিয়া— সর্বত্রই বিপুল জনপ্রিয়। ভারতের তামিলনাড়ু, কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্নাটকে এই লুঙ্গির প্রকারভেদই আবার মুন্ড।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:০৯
Share:

ভুবনেশ্বরে দলের দফতরে লুঙ্গি পরে দুই বিজেডি নেতা সুস্মিত পাত্র এবং স্বয়মপ্রকাশ মহাপাত্র। —নিজস্ব চিত্র।

ওড়িশায় ভোটের লড়াইয়ে এখন সব চেয়ে আলোচিত পুরুষদের একটি আন্তর্জাতিক পোশাক, যা ঘরোযা ভাবে দেশের প্রায় সর্বত্রই পরা হয়। মায়ানমারের জাতীয় পোশাক এই লুঙ্গি বা লোঙ্গাই, ইন্দোনেশিয়া থেকে আফ্রিকার সুদান, ইয়েমেন বা সোমালিয়া— সর্বত্রই বিপুল জনপ্রিয়। ভারতের তামিলনাড়ু, কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্নাটকে এই লুঙ্গির প্রকারভেদই আবার মুন্ড।

Advertisement

ওড়িশায় বিজু জনতা দলের প্রধান এবং পর পর পাঁচ বারের মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক সম্প্রতি দলের প্রতীক শঙ্খের দু’টি কাটআউট দু’হাতে ধরে ভোটারদের ভিডিয়ো-বার্তা পাঠিয়েছেন, ওড়িশার উন্নয়নের স্বার্থে লোকসভা ও বিধানসভায় তাঁরা যেন এই ‘জোড়ি শঙ্খ’ (জোড়া শঙ্খ)-এ ভোট দেন। একই ভাবে একই বার্তা পাঠিয়েছেন কার্যত দল ও সরকারের দ্বিতীয় ব্যক্তি ভি কার্তিকেয়ন পান্ডিয়ান। আমলার চাকরি ছেড়ে শাসক দলে যোগ দেওয়া পান্ডিয়ানকে এই ভিডিয়োয় প্যান্ট-শার্টে দেখা গেলেও বর্ষীয়ান নবীনবাবুর পরনে সাদা পাঞ্জাবির সঙ্গে ছিল খয়েরি লুঙ্গি। তা নিয়েই টেরাবেঁকা মন্তব্য করে নানা প্রাদেশিক ও ধর্মীয় ইঙ্গিত ছুড়ে দিয়েছেন ওড়িশা থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা ধর্মেন্দ্র প্রধান। ধর্মেন্দ্রর
কথায়, ওড়িশায় লুঙ্গির কোনও সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা নেই। কেউ কেউ ঘরে পরেন। কিন্তু একটি বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায়কেই এই পোশাকটি বেশি পরতে দেখা যায়। লুঙ্গি পরে ভিডিয়ো শুটিং করে মুখ্যমন্ত্রী ওড়িশার ঐতিহ্যকে জলাঞ্জলি দিয়েছেন। ধর্মেন্দ্র এর পরেই নাম না করে পান্ডিয়ানের প্রসঙ্গ টেনে মন্তব্য করেন— তবে সম্ভবত মুখ্যমন্ত্রীকে এই কাজ তাঁর এক ‘গোমস্তা’ করিয়েছেন, যিনি ওড়িশার লোক নন। তিনি যে প্রদেশের (তামিলনাড়ু) মানুষ সেখানে লোকে লুঙ্গিই পরেন বটে।

সম্প্রতি বিজেডি নেতা পান্ডিয়ান ধর্মেন্দ্র প্রধানের সমালোচনা করে বলেছেন, উনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসাবে ওড়িশার জন্য কখনও কিছুই করেননি। অথচ তাঁর উপরে মানুষের অনেক প্রত্যাশা ছিল। সুযোগ পেয়েই লুঙ্গি নিয়ে সেই পান্ডিয়ানকে নবীনের ‘গোমস্তা’ বলে পাল্টা দিয়েছেন ধর্মেন্দ্র। তবে ভোটের মুখে বিজেডি তাঁদের নেতাদের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ নিয়ে ছেড়ে কথা বলতে রাজি নয়। দলের পক্ষে বলা হয়েছে, লুঙ্গি ওড়িশায় আরামের পোশাক হিসাবে জনপ্রিয়। ঘরোয়া পোশাকেই মুখ্যমন্ত্রী ‘জোড়ি শঙ্খ’-এ ভোট দেওয়ার ভিডিয়োটি করেছেন। তাঁর কাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ না পেয়ে পোশাকের মতো অকিঞ্চিৎকর বিষয় নিয়ে বিভেদের তাস খেলছে বিজেপি। বিজেডির পাল্টা প্রশ্ন— লুঙ্গি কি অশালীন পোশাক?

Advertisement

এর পরে দেখা যায় একের এক বিজেডি নেতা দলের দফতর ‘শঙ্খ ভবন’-এ আসছেন রংবেরঙের লুঙ্গি পরে। নবীনবাবুর কাটআউটের পাশে পোজ় দিয়ে তাঁরা যেমন নিজস্বী তুলছেন, আলোকচিত্রীদের আবদারও মেটাচ্ছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন