Lok Sabha Election 2024

গোষ্ঠীকোন্দল মেটাতে শুভেন্দুর বৈঠক

কোন্দল মেটাতে রবিবার গাইঘাটার ঠাকুরনগরে মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে বৈঠক করেন শুভেন্দু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৪ ০৮:৪২
Share:

শান্তনু ও সুব্রতকে পাশে নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী।  ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক ।

লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি নেতৃত্বের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলায় দলের গোষ্ঠীকোন্দল। লোকসভা ভোটে বনগাঁ কেন্দ্রের প্রার্থী হিসাবে ইতিমধ্যেই বর্তমান সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের নাম ঘোষণা করেছে বিজেপি। তারপরেও কিছু বিধায়ক, নেতা শান্তনুর সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলেছেন বলে অভিযোগ। এরই মধ্যে শান্তনুর দাদা, গাইঘাটার বিজেপি বিধায়ক সুব্রত ঠাকুরকে নিয়ে গুঞ্জন ছড়িয়েছিল, তিনি নাকি তৃণমূলে যোগদান করতে চলেছেন। শান্তনু এবং সুব্রত ঠাকুরের মধ্যে অনেক দিন হল কার্যত কথাবার্তা বন্ধ বলেই দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে এ বার দলের দু’পক্ষকে এক ছাতার তলায় এনে দলের মধ্যে ঐক্যের বাতাবরণ তৈরি করতে পদক্ষেপ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কোন্দল মেটাতে রবিবার গাইঘাটার ঠাকুরনগরে মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে বৈঠক করেন শুভেন্দু। সেখানেও অবশ্য গরহাজির থাকলেন বিজেপির বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক স্বপন মজুমদার, বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া, হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকার।

স্বপন বলেন, ‘‘পূর্ব পরিকল্পিত ব্যক্তিগত কাজে কলকাতায় থাকায় বৈঠকে উপস্থিতি থাকতে পারিনি।’’ বৈঠকে অনুপস্থিত এক বিজেপি নেতার কথায়, ‘‘আমার এখনও এত খারাপ সময় আসেনি যে ঠাকুরবাড়িতে গিয়ে শান্তনুর সঙ্গে বৈঠক করতে হবে।’’

Advertisement

এ দিন বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ শুভেন্দু ঠাকুরবাড়িতে আসেন। সুব্রত ঠাকুরের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন। কথা বলেন সুব্রতের বাবা মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরের সঙ্গেও। এ দিন শান্তনু-সুব্রত ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডল এবং কল্যাণীর বিধায়ক অম্বিকা রায়।

বৈঠক শেষে শান্তনু এবং সুব্রতকে দু’পাশে বসিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন শুভেন্দু। তাঁর তৃণমূলে যোগদানের গুঞ্জন নিয়ে সুব্রত সেখানে বলেন, ‘‘মাসখানেক ধরে তৃণমূলের থেকে এই গুজব ছড়ানো হচ্ছে। সাধারণ মানুষ এবং বিজেপি কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াতে এমন করা হচ্ছে।’’

এ বিষয়ে শুভেন্দুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘এই গুজব সম্পূর্ণ মিডিয়ার তৈরি করা (প্ল্যান্টেড)। সুব্রত ঠাকুর মোদী পরিবারের একনিষ্ঠ সদস্য। খুবই শৃঙ্খলাপরায়ণ।’’ এ দিন দেবদাস এবং সুব্রত ঠাকুরের আমন্ত্রণে ঠাকুরবাড়িতে এসেছেন বলে জানান বিরোধী দলনেতা।

অন্য বিধায়কদের দেখা গেল না কেন? শুভেন্দু জানান, সন্দেশখালির কর্মসূচিতে অশোক কীর্তনিয়া এবং অসীম সরকার ছিলেন। স্বপন মজুমদারের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। বিধায়কদের অনুপস্থিতির বিষয়ে দেবদাসের বক্তব্য, ‘‘অশোক ও অসীম সন্দেশখালিতে ছিলেন বলে আসতে দেরি হয়েছে। স্বপনের ব্যক্তিগত কাজ ছিল বলে আসতে পারেননি। সকলের সঙ্গেই ভিডিয়ো কলে কথা হয়েছে। বিজেপির মধ্যে কোনও মতানৈক্য নেই। আমরা সকলে মিলে ভোটে লড়াই করে শান্তনু ঠাকুরকে ২ লক্ষের বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়ী করব।’’ শান্তনু এ দিন বলেন, ‘‘তৃণমূল ঠাকুরবাড়িতে গোলমাল বজায় রাখতে মমতা ঠাকুরকে রাজ্যসভার সাংসদ করেছে।’’

শুভেন্দুর বৈঠক এবং সেখানে কয়েক জন বিধায়ক-নেতার অনুপস্থিতি নিয়ে তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস (বনগাঁ কেন্দ্রে সদ্যঘোষিত তৃণমূল প্রার্থী) পরে বলেন, ‘‘আপাতমস্তক গোষ্ঠীকোন্দলে ডুবে থাকা একটা দল বিজেপি। এরা মানুষের পাশে থাকে না। লোকসভা ভোটের পরে বনগাঁয় ওদের দলটাই উঠে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন