Lok Sabha Election 2024

‘খলিস্তানি’ বিতর্ক কি কাঁটা হবে, সংশয়ে বিজেপি 

আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে মোট ভোটারের প্রায় ৮ শতাংশ শিখ সম্প্রদায়। তাঁদের সিংহভাগ আসানসোল উত্তর ও দক্ষিণ, রানিগঞ্জ, কুলটি বিধানসভার বাসিন্দা।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:২৭
Share:

কুলটিতে বৈশাখী অনুষ্ঠানে সপরিবার সুরেন্দ্র। ছবি: পাপন চৌধুরী।

‘খলিস্তানি’ মন্তব্য নিয়ে পুরনো বিতর্ক উঠে এল আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার প্রচারেও। তাতে শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজনের ভোট কতটা তাদের দিকে যাবে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে বিজেপির অন্দরে। কারণ, রাজ্য নেতৃত্ব প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাইলে বিজেপির কোনও বার্তা শোনা হবে না বলে ওই বিতর্কের সময় থেকে দাবি করে আসছেন শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজন। তবে বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, ওটা সাময়িক বিষয়। শিখেরা তাঁদের পক্ষেই রয়েছেন।

Advertisement

আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে মোট ভোটারের প্রায় ৮ শতাংশ শিখ সম্প্রদায়। তাঁদের সিংহভাগ আসানসোল উত্তর ও দক্ষিণ, রানিগঞ্জ, কুলটি বিধানসভার বাসিন্দা। সুরেন্দ্রকে প্রার্থী করে বেশি সংখ্যায় তাঁদের ভোট নিজেদের পক্ষে রাখতে সচেষ্ট বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু কাঁটা হিসেবে থাকছে সম্প্রতি সন্দেশখালিতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ওঠা ‘খলিস্তানি’ মন্তব্যের অভিযোগ। ফেব্রুয়ারিতে অগ্নিগর্ভ সন্দেশখালিতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু-সহ বিজেপি নেতারা। তখন কর্তব্যরত এক আইপিএস অফিসারের উদ্দেশে শুভেন্দু ওই মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ ওঠায় তোলপাড় হয় রাজ্য-রাজনীতি।

শনিবার কেন্দ্রীয় গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটির সভাপতি তেজেন্দ্র সিংহ বল অভিযোগ করেন, সন্দেশখালিতে কর্তব্যরত এক আইপিএস অফিসারকে ধর্মের নাম তুলে কুমন্তব্য ও দুর্ব্যবহার করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। এর প্রতিবাদে দু’টি দাবিতে কলকাতায় ধর্না-অবস্থানে বসেছিলেন শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজন। দাবি ছিল, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে হবে এবং শিখদের সঙ্গে রাজনীতি সম্পর্কিত সুসম্পর্ক রাখতে হলে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকে প্রকাশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। প্রথম দাবি মেনে নিয়ে বিধানসভার স্পিকারের কাছে অভিযোগ জানানোর প্রস্তাব দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা। কিন্তু দ্বিতীয় দাবি এখনও পূরণ হয়নি বলে তাঁদের অভিযোগ। তিনি বলেন, “লোকসভা ভোটের জন্য বিজেপি নেতৃত্ব গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটির কাছে আবেদন করছেন, তাঁদের প্রার্থী গুরুদ্বারে এসে বার্তা দিতে চান। এ বিষয়ে আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য, বিজেপি নেতৃত্ব গুরুদ্বারে আসতে পারেন। কিন্তু নিঃশর্ত ক্ষমা না চাইলে তাঁরা মাইক ব্যবহার করে কোনও বার্তা দিতে পারবেন না।”

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে, শনিবার কুলটির থানা মোড় মাঠে শিখ সম্প্রদায়ের ‘বৈশাখী’ অনুষ্ঠানে যোগ দেন সুরেন্দ্র। তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন অনেকেই। কিন্তু অনুষ্ঠান মঞ্চের মাইক তাঁকে ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি। তাই ভোটের মুখে শিখ সম্প্রদায়ের সমর্থন বিজেপির দিকে কতটা থাকবে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। সুরেন্দ্র বলেন, “এ ঘটনা যখন ঘটেছিল, তখন দুর্গাপুরে জানিয়েছিলাম, শিখকে খলিস্তানি বলে কেউ মন্তব্য করে থাকলে তিনি মূর্খ। তবে আমি বিশ্বাস করি, যাঁর নামে এই অভিযোগ উঠেছে, তিনি এত বড় ভুল করবেন না। ওই পুলিশ অফিসারও কিন্তু কারও নাম বলেননি।”

বিজেপির জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, এটা সাময়িক ক্ষোভের বিষয়। শিখ মানুষজনের সঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বের বরাবর সুসম্পর্ক রয়েছে। এ বারও তাঁদের সমর্থন পাবে দল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন