Lok Sabha Election 2024

বাহিনীর টহল সত্ত্বেও ভোট দেওয়া নিয়ে উদ্বেগ বহাল

দিল্লির দৌড়ে কে কোথায়? কোন দল কী ভাবে ঘর গোছাচ্ছে? কোথায় কোন কাঁটা বেগ দিচ্ছে কাকে? লোকসভা ভোটের আগে বিধানসভা ভিত্তিক খোঁজখবর। সেই সঙ্গে কোন বিষয়গুলি মাথায় রেখে বুথমুখী হবেন ভোটার, সে দিকে নজর রাখল আনন্দবাজার। আজ, ক্যানিং পশ্চিম।

Advertisement

প্রসেনজিৎ সাহা

ক্যানিং শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:০০
Share:

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

এ বার কি সবাই ভোট দিতে পারবেন!

Advertisement

প্রশ্নটা ঘুরছে ক্যানিং পশ্চিমে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হয়নি এ তল্লাটে। রাজনৈতিক হানাহানি দেখেছিলেন বহু মানুষ। অনেকের ভোট দেওয়ার সুযোগটুকুই মেলেনি বলে অভিযোগ ছিল। শাসকদলের অত্যাচারে বিরোধীরা মনোনয়নই জমা দিতে পারেননি, এ অভিযোগও উঠেছিল। তৃণমূল অবশ্য কোনও অভিযোগ মানেনি।

বছর ঘুরে এ বার লোকসভা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি চলছে এই বিধানসভা এলাকায়। জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের এ তল্লাটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহল চলছে বেশ কিছুদিন ধরেই। এ বার অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। তা সত্ত্বেও গ্রামবাসীদের সংশয় যাচ্ছে না।

Advertisement

সুজিত সর্দার, মলিনা মৃধার মতো কিছু গ্রামবাসীর খেদ, ‘‘গত বিধানসভা নির্বাচনেও ভোট দিতে পারিনি। বুথের মধ্যে যাওয়ার আগেই শুনলাম, আমাদের ভোট হয়ে গিয়েছে। আর পঞ্চায়েত ভোট তো হয়ইনি। এ বার কি আদৌ ভোট দিতে পারব?” সুবোধ মণ্ডল বলেন, ‘‘বাহিনী যতই আশ্বাস দিক না কেন, ভোটের দিন কী হয়, সেটাই দেখার!”

ভোটের এখনও প্রায় দু’মাস বাকি। পঞ্চায়েত ভোটের মতোই বিরোধী দলের কর্মীদের উপর ইতিমধ্যেই শাসকদলের অত্যাচারের অভিযোগ ইতিউতি শোনা যাচ্ছে। উঠছে দেওয়াল দখলের অভিযোগও। ভোট যত এগিয়ে আসবে ততই অশান্তি বাড়বে বলেই মনে করছেন এলাকার সাধারণ মানুষ।

বিজেপির জয়নগর সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক বিকাশ সর্দার বলেন, “ ক্যানিং পশ্চিমে সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল। আমাদের কর্মীদের উপর হামলা হচ্ছে, দেওয়াল লিখতে দিচ্ছে না। আসলে ওরা ভয় পেয়েছে।” প্রায় একই অভিযোগ আইএসএফ প্রার্থী মেঘনাদ হালদারেরও।

তৃণমূল প্রার্থী করেছে প্রতিমা মণ্ডলকে। কোনও রকম অত্যাচারের অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূল বিধায়ক পরেশরাম দাসের দাবি, ‘‘বিরোধীদের সংগঠন নেই। আর তৃণমূলের উন্নয়নে এখানকার মানুষ যথেষ্ট খুশি। পায়ের তলায় মাটি পাচ্ছেন না বিরোধী নেতারা। প্রচারে থাকতে তাই আমাদের বদনাম করছেন।”

জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত অবশ্য বলেন, ‘‘অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করানোই আমাদের মূল লক্ষ্য। বিভিন্ন এলাকার ঘুরে ঘুরে সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে আমরা কথা বলছি। সমস্যা থাকলে সমাধান করা হবে।”

তৃণমূলের পাশাপাশি বিজেপি, আইএসএফ ও এসইউসিও অবশ্য প্রচার শুরু করছে। তবে, তৃণমূলের দেওয়াল লিখন, মিটিং-মিছিল বেশি চোখে পড়ছে। বিজেপি প্রার্থী অশোক কান্ডারি কিছুটা হলেও প্রচারে পাল্লা দিচ্ছেন তৃণমূল
প্রার্থীর।

তাঁর অভিযোগ, ‘‘সন্ত্রাসের রাজত্ব চলছে এখানে। বিজেপির দেওয়াল জোর করে দখল করে নেওয়া হচ্ছে। আমাদের প্রচারে বাধার সৃষ্টি করা হচ্ছে।” অভিযোগ মানতে চাননি তৃণমূল প্রার্থী প্রতিমা। তাঁর দাবি, ‘‘তৃণমূলের শক্তিশালী সংগঠন দেখে ভয় পেয়েছে বিজেপি। মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উন্নয়নকে সামনে রেখে ভোট দেবেন। কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন বলেই আমার বিশ্বাস।”

২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর থেকে এখানে কংগ্রেস-সিপিএমের তেমন কোনও সংগঠন চোখে পড়ে না। মাঝেমধ্যে সামান্য কিছু মিটিং-মিছিল করলেও সে ভাবে তাঁদের প্রচারে জোর আসেনি। প্রার্থী ঘোষণাও হয়নি। তবে, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট হলে দুই ফুলের লড়াই-ই জোরদার হবে বলে মনে করছেন গ্রামবাসীরা। ক’দিন আগেই সভা করে গিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন