Lok Sabha Election 2024

সংখ্যালঘু প্রশ্নে সরব অগ্নিমিত্রা

বৃহস্পতিবার দিনভর খড়্গপুর শহরে চষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন মেদিনীপুর লোকসভা আসনের বিজেপি প্রার্থী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:০১
Share:

খড়্গপুরে চড়া রোদে প্রচারে বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল। নিজস্ব চিত্র।

লোকসভা আসনের একপ্রান্তে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীর সমর্থনে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রীর জনসভা। সেই বিজেপি প্রার্থীকে ‘সেজেগুজে ঘুরে বেড়াবেন’ বলে কটাক্ষ করে নিজের প্রার্থী জুন মালিয়াকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানাচ্ছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় গরমের লাল সতর্কতা উপেক্ষা করেই লোকসভা কেন্দ্রের আরেক প্রান্ত রেলশহরে ঘুরে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেই সুর চড়ালেন বিজেপি প্রার্থী। সমাজের ‘লজ্জা’ বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধে সংখ্যালঘুদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী কী করেছেন সেই প্রশ্ন তুললেন বিজেপি রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল।

Advertisement

বৃহস্পতিবার দিনভর খড়্গপুর শহরে চষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন মেদিনীপুর লোকসভা আসনের বিজেপি প্রার্থী। এ দিন সকালে শহরের ১৬নম্বর ওয়ার্ড থেকে শুরু হয় অগ্নিমিত্রা পালের প্রচার কর্মসুচি। কখনও হুড খোলা গাড়িতে কখনও পায়ে হেঁটে জনসংযোগ চালিয়েছেন। তীব্র দাবদাহে প্রচার নিয়ে প্রশ্নে অগ্নিমিত্রা বলেছেন, “গরম আছে। কিন্তু এটা আমাদের বাঁচা মরার লড়াই। জিততেই হবে।” এ দিন অবশ্য গরমের লাল সতর্কতার মধ্যেই এই লোকসভা কেন্দ্রের এক প্রান্তে দাঁতনে সভা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অগ্নিমিত্রার প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়ার সমর্থনে ছিল মুখ্যমন্ত্রীর ওই জনসভা। সেখানে মমতা আবেদন করেন, “এই মেদিনীপুরে এক ইঞ্চি জমিও আপনারা দেবেন না বিজেপিকে।” এর পরেই বিজেপি প্রার্থীকে কটাক্ষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিজেপি পাঁচবছর ভোট নিয়ে গিয়েছে। কিছু করেনি। আর যে দাঁড়িয়েছে তিনি সেজে-গুজে ঘুরে বেড়াবেন। কিন্তু তিনি কাজ করবেন না। আর জুন মাটির মেয়ে। জুন কিন্তু কাজটা করবে।” পাল্টা এ দিন প্রচারের ফাঁকে তাঁর লোকসভা কেন্দ্র থেকে মুখ্যমন্ত্রীর প্রচারসভা সম্পর্কে প্রশ্নে বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা বলেন, “যে চুরি হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের ভবিষ্যৎ শেষ করে দিয়েছে, যার নেতৃত্বে এই দুর্নীতি হয়েছে, যিনি মহিলাদের অত্যাচারে চুপ করে থাকেন, তিনি সমাজের লজ্জা।”

এ দিন প্রচারের ফাঁকে ৮নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচনী কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন বিজেপি প্রার্থী। সেখানে রাজ্যে সংখ্যালঘুদের কথা তৃণমূল মুখে বললেও আসলে তারা সংখ্যালঘুদের পাশে নেই বলে দাবি করেন তিনি। এমনকি গুজরাত ও পশ্চিমবঙ্গে সরকারি চাকরিক্ষেত্রে কী হারে সংখ্যালঘুদের নিয়োগ হচ্ছে সেই পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। অগ্নিমিত্রা বলেন, “আমাদের বিশ্বাস যে এই রাজ্যের সরকার সংখ্যালঘুদের পাশে নেই। সিএএ তো নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন। নাগরিকত্ব দিলে অনুপ্রবেশকারী ঢোকা মুশকিল হয়ে হয়ে যাবে। তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অসুবিধা। কারণ এই অনুপ্রবেশকারীরা কলকাতা-সহ বাংলায় বসবাস শুরু করেছে এটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোট ব্যাঙ্ক।” তিনি খড়্গপুর শহরের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ওয়ার্ডগুলিতে প্রচারে যাবেন? অগ্নিমিত্রা মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধে বলেন, “প্রতিটি ওয়ার্ডে যাব। মুসলমান ভাই-বোনেদের গিয়ে বলতে হবে মুখ্যমন্ত্রী তোমাদের মাদ্রাসায় পড়িয়ে বিজ্ঞানের শিক্ষা দেননি। মুখ্যমন্ত্রী বলুন না আপনার যে এত মন কাঁদে সাচার কমিটির রিপোর্টের একটাও তা হলে কার্যকর করেননি কেন!” তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, "আমরা সর্বধর্মে বিশ্বাসী। কোনও সম্প্রদায়কে আলাদা করে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি তৃণমূল করে না।" এ দিন খড়্গপুরে তাঁর প্রচারের আগে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে লাগানো ব্যানার, পোস্টার ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন অগ্নিমিত্রা। তৃণমূলের নির্বাচনী কমিটির সভাপতি তথা পুরপ্রধান কল্যাণী ঘোষ বলেন, “বিজেপির মতো ব্যানার পোস্টার ছেঁড়ার রাজনীতি করে না তৃণমূল।”

Advertisement

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন