মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
স্টং-রুমে আলো নিভিয়ে ইভিএম যন্ত্র বদল বা কারচুপি যাতে না হয়, সে জন্য দলীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের সতর্ক করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর এই আশঙ্কার প্রেক্ষিতে বিজেপির পাল্টা কটাক্ষ, তৃণমূলের পরাজয় নিশ্চিত জেনেই নেত্রী ওই মন্তব্য করেছেন। গত মঙ্গলবার কল্যাণীর জনসভায় মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরই জেলার রাজনীতিতেও শুরু হয়েছে চাপানউতোর।
কল্যাণী শহরে গত মঙ্গলবার দুপুরে বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাসের সমর্থনে সভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই দিনের সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মমতা বলেন, ‘‘স্ট্রং-রুমের আলো যাতে না নেভে, সে দিকে নজর রাখতে হবে।’’ তার পরেই তাঁর বক্তব্য, ‘‘ইভিএম যাতে ওরা বদলাতে না-পারে, সে জন্য পুলিশ ও দলের আয়োজকদেরও সতর্ক থাকতে হবে।’’
মমতার এমন ভাবনায় জোর চর্চা শুরু হয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে। অনেকেই টেনে আনছেন, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময় তমলুক ভোট গণনাকেন্দ্রে আলো নিভে যাওয়ার প্রসঙ্গ। ভোটগণনার পর দেখা যায়, বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীর কাছে পরাজিত হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টি নিয়ে মমতা পরবর্তীতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তৃণমূলের একাংশের দাবি, পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকেই মমতা স্টং-রুমের বিষয়ে সতর্কবাণী শুনিয়েছেন। যদিও সেই সতর্কবাণীর সঙ্গে একমত নন নির্বাচনের কাজে যুক্ত থাকা আধিকারিকেরা। তাঁদের অনেকেই বলছেন, স্ট্রং-রুমে নিরাপত্তা দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। সেখানে সশস্ত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী ২৪ ঘণ্টা অতন্ত্র প্রহরাই থাকে। ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলায় ও ক্লোজ় সার্কিট ক্যামেরায় মুড়ে ফেলা হয় স্ট্রং-রুম। তা ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এজেন্টদের সই করার পর ইভিএম যন্ত্র গালা সিল হয়ে অক্ষত অবস্থায় স্টং রুমে আনা হয়। গণনার দিনও ওই যন্ত্র অক্ষত অবস্থায় রয়েছে কি না, এমনকি রাজনৈতিক দলের এজেন্টেরা যে সই করেন তা মিলিয়ে দেখেই শুরু হয় গণনার কাজ।
মমতার ওই বক্তব্যকে কটাক্ষ করে রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার বলেন, ‘‘তৃণমূলের পরাজয় নিশ্চিত। এটা ওদের নেত্রী বুঝতে পেরেই এমন আশঙ্কা করছেন। ওদের দলের তরফে স্টং-রুমের নজরদারি হোক, তাতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই।’’
পাল্টা রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশীষ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিজেপি মানুষের জনসমর্থন অর্জন করতে পারেনি। তাই অসৎ উপায়ে ওরা জয়ী হওয়ার কৌশল নিতে পারে। ভোটের দিন কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের ভোট দিলেও, সেই ভোট বিজেপিতে পড়ছে, যে কারণেই নেত্রী আমাদেরকে সতর্ক করেছেন। এতে বিজিপি
কেন ভয় পাচ্ছে?’’