Lok Sabha Election 2024

লক্ষ্মীর সাজে স্কুল ছাত্রীরা, বিতর্ক

বিরোধীদের দাবি, ‘লক্ষ্মী’র সাজে মঞ্চে উঠে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছে মহিষাদলের তৃণমূল বিধায়ক তিলক চক্রবর্তীর ভাইঝিও। সে নবম শ্রেণির ছাত্রী।

Advertisement

কেশব মান্না

মহিষাদল শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৩৮
Share:

মমতার সভায় লক্ষ্মীর সাজে। নিজস্ব চিত্র।

‘মা লক্ষ্মী’র সাজে স্কুলের ছাত্রীরা নাকি হাজির মুখ্যমন্ত্রীর ভোট প্রচারের সভায়। তারা যেন রাজ্যের ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের ‘ম্যাসকট’! বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী জনসভায় ওই উপস্থিতি ঘিরে বেধেছে বিতর্ক।

Advertisement

২৫ বছর বয়স হয়েছে, এমন বিবাহিত মহিলাদের ‘লক্ষ্ণীর ভান্ডার’ প্রকল্পে প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে দিত রাজ্য। লোকসভা ভোটের আগে চলতি মাস থেকে টাকার পরিমাণ দ্বিগুণ (তফসিলি মহিলাদের জন্য ১,২০০ টাকা) করা হয়েছে। তৃণমূলের নির্বাচনী প্রচারেও থাকছে সে কথা। দলের মহিলা কর্মীরা লক্ষ্মীর সাজে হাতে লক্ষ্মীর ভাঁড় নিয়ে বাড়ি বাড়িও যাচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার মহিষাদলে মুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী জনসভা সে ভাবেই বেশ কয়েকজনকে ‘লক্ষ্মী’র বেশে সাজানো হয়েছিল। সভার ডানদিকে বসেছিল তারা। পরনে লালপাড়-সাদা শাড়ি, গয়না, মুকুট। বিজেপির অভিযোগ, ওই এক ঝাঁক লক্ষ্মীর মধ্যে একাধিকস্কুল ছাত্রীও ছিল।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রের খবর, মহিষাদল ব্লকের ১১টি অঞ্চল থেকে ২০ জনকে ‘লক্ষ্মী’র বেশে সাজানো হয়েছিল। তাঁরা স্থানীয় গড় কমলপুর এবং বেতকুন্ডু গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা। মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের এক সদস্যা সুচিত্রা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দুই ভাইয়ের বউ এবং জা লক্ষ্মী সেজেছিলেন। পরে একজনের ঘাটতি হওয়ার কারণে আমিও নিজে লক্ষ্মী সাজি।’’ তবে বিরোধীদের দাবি, ‘লক্ষ্মী’র সাজে মঞ্চে উঠে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছে মহিষাদলের তৃণমূল বিধায়ক তিলক চক্রবর্তীর ভাইঝিও। সে নবম শ্রেণির ছাত্রী। এ ছাড়াও আরেক স্কুল ছাত্রীও লক্ষ্মী সেজেছিল বলে দাবি। তিলকের ভাইঝির মা সুপর্ণা কাঞ্জিলালের অবশ্য দাবি, ‘‘মেয়ে লক্ষ্মী সাজেনি। বিধায়ক জেঠুর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় গিয়েছিল শুধু।’’

মুখ্যমন্ত্রী সভার দায়িত্বে থাকা তৃণমূলের স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য সীমা মাইতির দাবি, ‘‘লক্ষ্মী সাজার জন্য অনেকেই উৎসাহী ছিল। জায়গার সঙ্কটে সকলকে সুযোগ দেওয়া যায়নি।’’ সেই দলে স্কুল ছাত্রীদের থাকার কথা প্রকারান্তরে মেনে নিয়ে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ মানস পন্ডার ব্যাখ্যা, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, আগামী দিনে ১৩ বছর বয়স থেকে মেয়েরা লক্ষ্মীর ভান্ডার পাবে। তাই দুজন স্কুলছাত্রী আগাম উৎসাহিত হয়ে লক্ষ্মী সেজেছিল।’’

লক্ষ্মীর ভান্ডারের জনপ্রিয়তার সঙ্গে লড়তে এ বার ভোট প্রচারে ঝাঁপিয়েছে বিজেপি। রাজ্যে ক্ষমতায় এলে এমন প্রকল্পে ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এ বার মমতার সভায় স্কুল ছাত্রীদের লক্ষ্মী সাজানোর বিতর্কে তৃণমূলকে বিঁধতে ছাড়ছে না বিজেপি। দলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক আনন্দময় অধিকারী বলছেন, ‘‘শুধুমাত্র লোক দেখাতে এসব করা হচ্ছে। পোশাক, গয়না সব কিছু কোনও ডেকরেটার্স থেকে আনানো। এত খরচ কী ভাবেজোগাড় হচ্ছে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন