প্রথম দফার ভোটে বামেরা এগিয়ে অভিযোগে, দ্বিতীয় শাসক তৃণমূল, ‘শক্ত ঘাঁটি’ হলেও পিছিয়ে নেই পদ্ম
রাজ্যে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ শেষ হল। উত্তরবঙ্গের তিন লোকসভা কেন্দ্রে ভোট ছিল শুক্রবার। ভোট শেষে বিশেষ সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব।
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
জলপাইগুড়িতে ভোটগ্রহণ। নজরদারিতে কেন্দ্রীয় বহিনীর জওয়ান। শুক্রবার দুপুরে। ছবি: পিটিআই।
মূল ঘটনা
কোন রাজনৈতিক দল বেশি অভিযোগ করেছে?
রাজনৈতিক দলের তরফে যে সমস্ত অভিযোগ কমিশনের কাছে এসেছে, তার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে সিপিএম। শুক্রবার ভোট সংক্রান্ত মোট ৩৭টি অভিযোগ দায়ের করেছে তারা। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে শাসকদল তৃণমূল। দলীয় ভাবে মোট ২০টি অভিযোগ দায়ের করেছে তারা। অভিযোগ করেছে কংগ্রেসও। উত্তরবঙ্গে ভোট সংক্রান্ত মোট ২টি অভিযোগ দায়ের করেছে তারা। আর উত্তরবঙ্গে শক্ত ঘাঁটি যে বিজেপির, তারা দায়ের করেছে ১৪টি অভিযোগ।
অভিযোগে শীর্ষে কোন কেন্দ্র?
কমিশনের কাছে আসা অভিযোগের সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে কোচবিহার। এই লোকসভা কেন্দ্র থেকে মোট ২৬৯টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আলিপুরদুয়ার, ১৬২টি অভিযোগ এসেছে। জলপাইগুড়ি থেকে ১২৫টি অভিযোগ এসেছে কমিশনের কাছে।
মোট কত অভিযোগ, কত সমাধান, কত খারিজ?
মোট ৫৫৬টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। যার মধ্যে ৩৫৬টির সমাধান করা হয়েছে। ৯৯ টি অভিযোগ খারিজ হয়েছে।
কত অভিযোগ দায়ের?
ন্যাশনাল গ্রিভেন্স অ্যাড্রেসাল সিস্টেমে মোট ৩৭১টি অভিযোগ জমা পড়েছিল। এর মধ্যে আলিপুরদুয়ারে ৯৯, কোচবিহারে ১৬৯ এবং জলপাইগুড়িতে ১০৩টি।
সিভিজিল অ্যাপে দায়ের হয়েছে ১০৩টি অভিযোগ। এর মধ্যে আলিপুরদুয়ারে ৫৯, কোচবিহারে ২৬ এবং জলপাইগুড়িতে ১৮টি।
ইমেল বা ফোন মারফত কমিশনের কাছে অভিযোগ এসেছে ৮২টি। এর মধ্যে আলিপুরদুয়ার থেকে ৪টি, কোচবিহার থেকে ৭৪টি এবং জলপাইগুড়ি থেকে ৪টি অভিযোগ এসেছে।
ভোটপর্বে দুর্ঘটনা
যে বিক্ষিপ্ত দুর্ঘটনাগুলি ঘটেছে, তার মধ্যে একটি কোচবিহারে। কোতোয়ালি এবং রাজপুরে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
মাথাভাঙায় এক প্রিসাইডিং অফিসারকে সরাতে বাধ্য হয় কমিশন। কারণ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।
এক কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। ভোটের আগের রাতে তিনি স্নানঘরে পড়ে গিয়েছিলেন। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, সেখানে আঘাত লেগেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে পুরোপুরি বোঝা যাবে।
কোথায় কোথায় উদ্ধার হল বোমা?
মোট ১০টি বোমা উদ্ধার হয়েছে। সবগুলো ক্রুড বোমা। তবে কোথায় কোনও বোমা ফাটানো হয়নি। রাস্তার ধারে বোমা ছিল। সব বোমা উদ্ধার করে সব বোমা নিষ্ক্রিয় করেছে পুলিশ। সব বোমা উদ্ধার হয়েছে কোচবিহার থেকেই।
কতগুলি কুইক রেসপন্স টিম ছিল?
কোনও ঘটনার খবর পেয়েই সেখানে ছুটে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল কুইক রেসপন্স টিম। শুক্রবার উত্তরবঙ্গে মোট ১২১টি কুইক রেসপন্স টিম কাজ করেছে। যার মধ্যে কোচবিহারে ৪৫টি ছিল। ২৭টি ছিল আলিপুরদুয়ারে, ৪৩টি জলপাইগুড়িতে।
কত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে?
রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক জানালেন, যে কয়েকটা বিক্ষিপ্ত ঘটনার খবর এসেছে, তার জেরে ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সবাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে কোচবিহার থেকেই।
শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে বলে জানালেন আরিজ
সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক জানালেন, শুক্রবার মোট ৫৮১৪ বুথে ভোটগ্রহণ হয়েছে। ১০০ শতাংশ বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল। সব বুথের ওয়েব কাস্টিং হয়েছে। ২৭ হাজার ৯০৭ ভোটকর্মী কাজ করেছেন। ৫৮১ মাইক্রো অবজ়ার্ভার ছিল। তিন আসনে মোট ৩৭ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। নির্বাচন হয়েছে শান্তিপূর্ণ ভাবেই। যদিও কয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনার খবর এসেছে।
প্রথম দফার ভোট শেষে বিশেষ সাংবাদিক বৈঠক
রাজ্যে প্রথম দফার ভোটের পর সাংবাদিক বৈঠক করছেন বাংলার মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব।