Lok Sabha Election 2024

কেন্দ্রীয় বাহিনীর আগমনে পঠনপাঠনে ক্ষতি, প্রতিবাদে অভিভাবকেরা

এ দিন বেথুন কলেজিয়েট স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলের এক দিক টিন দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর স্কুলে ঢোকা-বেরোনোর রাস্তাও আলাদা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৪ ০৫:৪৩
Share:

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই স্কুলে কেন্দ্রীয় বাহিনী আসার প্রতিবাদে এ বার একজোট হলেন বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের অভিভাবকেরা। মঙ্গলবার তাঁরা স্কুলের সামনে একজোট হয়ে দাবি জানান, এ ভাবে মাসের পর মাস স্কুলে কেন্দ্রীয় বাহিনী রেখে পঠনপাঠনের ক্ষতি করা যাবে না। তাঁদের দাবি, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে রাখার জন্য বিকল্প জায়গার ব্যবস্থা করা হোক। অভিভাবকেরা জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তাঁরা নির্বাচন কমিশন এবং শিক্ষা দফতরে ইতিমধ্যেই চিঠি দিয়েছেন।

Advertisement

এ দিন বেথুন কলেজিয়েট স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলের এক দিক টিন দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর স্কুলে ঢোকা-বেরোনোর রাস্তাও আলাদা। অভিভাবকেরা জানাচ্ছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রবেশপথ আলাদা হলেও স্কুলের বেশ কয়েকটি ক্লাসঘর তারা ইতিমধ্যেই নিয়ে নিয়েছে। ফলে সব শ্রেণির পুরো ক্লাস নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

ওই স্কুলের অভিভাবক সমিতির প্রেসিডেন্ট মালঞ্চ মজুমদার বলেন, ‘‘স্কুল পুরোপুরি বন্ধ হয়নি ঠিকই, কিন্তু ক্লাসঘরের অভাবে এখন ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের সপ্তাহে মাত্র দু’দিন করে ক্লাস হচ্ছে। ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারা কেন এখন থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য পড়াশোনার ক্ষতি করবে?’’

Advertisement

মালঞ্চের মতে, ‘‘ভোট শেষ হওয়ার পরেও ফল ঘোষণা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী হয়তো স্কুলেই থাকবে। অর্থাৎ তাদের থাকার সময়সীমা অন্তত এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত হয়ে যাবে। তা হলে এখন থেকে প্রায় দু’মাস এমন অনিয়মিত ভাবেই ক্লাস হবে। তার পরে মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে গরমের ছুটি শুরু হলে প্রায় টানা তিন মাস পঠনপাঠনের ক্ষতি হচ্ছে।’’

ওই স্কুলের অভিভাবক সমিতির সেক্রেটারি সুব্রত দত্ত বলেন, ‘‘শহরে এত কমিউনিটি হল আছে, ক্লাব রয়েছে। সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে রাখার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। ক্লাসঘরের অভাবে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির যে ক্লাস হচ্ছে, তাতে দু’টি সেকশনের মেয়েরা একসঙ্গে গাদাগাদি করে ক্লাসে বসছে। আগামী তিন মাস ধরে কেন এ ভাবে কষ্ট করে ক্লাস করবে ওরা?’’

বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা শবরী ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী তাদের স্কুলের অনেকগুলি ভবনের মধ্যে একটি ভবনের পুরোটাই নিয়ে নিয়েছে। সেই ভবনে সাত-আটটি ক্লাসঘর তারা ব্যবহার করছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকার কারণে ওই ভবনের বাকি ক্লাসঘরগুলি তালাবন্ধ করে রাখতে হয়েছে। ফলে কিছু ক্লাসঘর কম পড়ছে।

শবরী বলেন, ‘‘প্রাথমিক বিভাগে সোম, বুধ, শুক্রবার স্কুলে আসছে প্রথম, তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়ারা। মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনিবার আসছে প্রাক্‌-প্রাথমিক, দ্বিতীয়, চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়ারা। প্রাথমিকের অভিভাবকদের সম্মতি নিয়েই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় থানা আমাদের স্কুলের নিরাপত্তা নিয়ে যথেষ্ট তৎপর।’’

তবে মালঞ্চ বলছেন, ‘‘শুধু এই স্কুলেই নয়। শহরের অন্য যে সব স্কুলে এই ভাবে পঠনপাঠনের ক্ষতি হচ্ছে, সেই সব স্কুলের অভিভাবকদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করছি। প্রয়োজনে একজোট হয়ে আমরা ফের নির্বাচন কমিশনে চিঠি দেব।’’ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রের খবর, এর মধ্যে কোথাও কোনও পরীক্ষা চলছে বা পরীক্ষার কাজ ব্যাহত হচ্ছে কি না, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন