তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী এবং বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকার। —নিজস্ব চিত্র।
বাঁকুড়ার দু’টি লোকসভা আসনে ভোটগ্রহণ ২৫ মে। হাতে এখনও প্রায় দু’মাস। কিন্তু প্রচারে খামতি রাখছেন না কোনও প্রার্থীই। রবিবার বাঁকুড়ায় সেই প্রচার অন্য মাত্রা পেল। নিজের লোকসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কাজের খোঁজে শহরে আসা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে আড্ডা দিয়ে প্রচার সারলেন বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকার। অন্য দিকে বাঁকুড়া শহরের গোপীনাথপুর এলাকায় মুড়ির দোকানে বসে সকলের সঙ্গে জমিয়ে মুড়ি খেতে খেতে আড্ডার ঢঙে প্রচার সারলেন তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হেভিওয়েট প্রার্থী প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে লক্ষাধিক ভোটে হারিয়েছিলেন সুভাষ। গত নির্বাচনে জয়ের ব্যবধান যা-ই থাকুক না কেন, রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রে এ বার সুভাষের সঙ্গে অরূপের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে চলেছে। তাই একে অপরকে প্রচারে টক্কর দিতে মরিয়া। দিনভর দুই প্রার্থীই কার্যত চষে বেড়াচ্ছেন লোকসভা কেন্দ্রের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত। রবিবার সাতসকালেই সুভাষ হাজির হন বাঁকুড়ার রানিগঞ্জ মোড়ে। প্রতি দিনের মতো লোকসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই রানিগঞ্জ মোড়ে কাজের খোঁজে আসা জনমজুরদের সঙ্গে বেশ কিছুটা সময় কাটান সুভাষ। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে রাজ্যের কর্মসংস্থানের এই পরিস্থিতির জন্য কাঠগোড়ায় তোলেন এ রাজ্য সরকারকে। পরে সুভাষ বলেন, ‘‘এ রাজ্যে কাজের কোনও ব্যবস্থা নেই। লেখাপড়া ও কারিগরি কাজ শিখে রাজ্যের হাজার হাজার মানুষকে অন্য রাজ্যে কাজের জন্য চলে যেতে হচ্ছে। এ রাজ্যের শাসক দলের সিন্ডিকেট আর তোলাবাজির কারণে শিল্পপতিরা আসতে চাইছেন না। শাসক দলের দুর্নীতি আর স্বজনপোষণের চক্রে পড়ে কাজ পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। এ রাজ্যের মানুষ এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চাইছেন।’’
প্রচারে বেরিয়ে বাঁকুড়ার তৃণমূল প্রার্থী হাজির হন বাঁকুড়া শহরের গোপীনাথপুর এলাকায়। পুনো বাঁকুড়া হিসাবে পরিচিত ওই এলাকায় দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে প্রচার সেরে সটান বসে পড়েন স্থানীয় একটি চপ, মুড়ি, বেগুনির দোকানে। ওই দোকানে তখন স্থানীয় অনেকেই সকালের জলখাবার খাচ্ছিলেন। কাগজের বাটিতে চপ, বেগুনি, কাঁচালঙ্কা সহযোগে মুড়ি খান অরূপও। মুড়ি খাওয়ার মাঝে স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপচারিতাও সেরে ফেলেন। চলে গল্পগুজবও। পরে অরুপ বলেন, ‘‘বাঁকুড়ার মানুষ আমি। আর পাঁচ জনের মতো আমিও মুড়ি খেতে ভালবাসি। আমি বিরোধীদের মতো লাটসাহেব নই। তাই প্রচারের ফাঁকে খিদে পেতেই এই দোকানে এসে মুড়ি খাচ্ছি।’’