Lok Sabha Election 2024

কার্যকর সিএএ, সংখ্যালঘু বৃত্তে লাভ হবে তৃণমূলের?

গত পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, এই বলয়ে সিপিএমের ভোট ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রাপ্ত প্রায় ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ২০ শতাংশে।

Advertisement

সুস্মিত হালদার

কৃষ্ণনগর  শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২৪ ০৬:৪৯
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

দেশ জুড়ে নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) কার্যকর হওয়ার পর ভোটের অঙ্ক কষা শুরু করে দিয়েছে সমস্ত রাজনৈতিক দল। কারা ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন, কী ধরণের ক্ষতি হতে পারে, কারা সিএএ থেকে ফায়দা তুলবে তা নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা। লোকসভা ভোটে যে এর বড়সড় প্রভাব পড়তে চলেছে তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তবে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল বাড়তি সুবিধা পাবে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।

Advertisement

কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের ফল বররাবরই সংখ্যালঘু ভোটে নির্ধারিত হয়। গত বার অন্যান্য বিধানসভা কেন্দ্রে পিছিয়ে থাকলেও সংখ্যালঘু প্রভাবিত চাপড়া, পলাশিপাড়া ও কালীগঞ্জ বিধানসভা ভোটে এগিয়ে থাকার সুবাদেই জয়ের মুখ দেখেছিলেন তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র। কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের মোট ভোটারের প্রায় ৪৫ থেকে ৪৮ শতাংশ সংখ্যালঘু বলে রাতনৈতিক দলগুলির দাবি। এই ভোট যখন যার দিকে গিয়েছে, তারাই জয়ের মুখ দেখেছে।

গত পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, এই বলয়ে সিপিএমের ভোট ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রাপ্ত প্রায় ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ২০ শতাংশে। তাদের ভোটবৃদ্ধি মূলত সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকাতেই বেশি হয়েছে। ২০১৯ সালে কংগ্রেসের পাওয়া প্রায় তিন শতাংশ ভোটও বেড়ে সাড়ে ছয় শতাংশে পৌঁছেছে। সেই বৃদ্ধিও মূলত সংখ্যালঘু এলাকাতেই। অর্থাৎ পঞ্চায়েত ভোটে সংখ্যালঘুদের একটা অংশ তৃণমূল থেকে সিপিএম ও কংগ্রেসের দিকে মুখ ফিরিয়েছিলেন বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।

Advertisement

তৃণমূলের সমস্যা হল, সংখ্যালঘু ভোট ভাগ হলে লড়াই তাদের কাছে অনেকটাই কঠিন হয়ে যাবে। কিন্তু দেশ জুড়ে সিএএ জারি হওয়ায় হিুসাব পাল্টে যেতে পারে। নদিয়ার এক তৃণমূল বিধায়কের কথায়, “যে সংখ্যালঘু ভোট সিপিএম ও কংগ্রেসের দিকে গিয়েছিল, সিএএ-র আতঙ্কে বিজেপিকে রুখতে তা আবার আমাদের দিকেই ফিরবে।” যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব আপাতত সতর্ক ভাবে এগোতে চাইছেন। চাপড়ার বিধায়ক তথা তৃণমূলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমান বলেন, “এ বিষয়ে যা বলার ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব বলবেন। এখনই আমি কিছু বলব না।”

আবার বিজেপি নেতাদের একাংশের ধারণা, সিএএ কার্যকর হওয়ায় একদিকে যেমন সংখ্যালঘু ভোট একজোট হবে, আবার হিন্দু ভোটও তাদের ঝুলিতে এসে জড়ো হবে। যদিও দলেরই অনেকে সেই ধারণার সঙ্গে সহমত নন। বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস বলেন, “অঙ্কটা এত সহজ নয়। আমাদের কিছু চিন্তাভাবনা আছে। অপেক্ষা করুন, দেখার অনেক কিছু বাকি আছে।” আর, সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে-র বক্তব্য, “বিজেপি মানুষকে সন্ত্রত করে আতঙ্কিত করে ভোট পেতে চাইছে। বিভাজনের এই রাজনীতির ফায়দা নিতে চাইছে তৃণমূল। আমরা বলছি, নাগরিকত্ব দিতে হলে এই বাংলায় বসবাসকারী সবাইকে দিতে পরে। বামপন্থীরা এটা মানুষকে বোঝাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন