Lok Sabha Election 2024

‘ক্ষমা চাইতে হচ্ছে’, কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নয়, সন্দেশখালিতে অন্য প্রচার তৃণমূল নেতৃত্বের

বসিরহাট লোকসভার অন্তর্গত এই এলাকায় ‘ক্ষমা প্রার্থনা’ করে দলীয় প্রার্থীকে জেতানোর আর্জি জানাচ্ছেন তৃণমূল নেতারা। শেখ শাহজাহান, শিবু-উত্তমের ‘কৃতকর্মের’ কথা মাথায় রেখে এই কৌশলই নিয়েছে দল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সন্দেশখালি শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৪ ০৭:৩৪
Share:

—প্রতীকী ছবি।

অন্যত্র তৃণমূলের প্রচারে একশো দিন ও আবাস যোজনা নিয়ে ‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনা’র কথা উঠে আসছে। আসছে লক্ষ্মীর ভান্ডার থেকে কন্যাশ্রী প্রকল্পের কথা। সন্দেশখালিতে এসে বদলে যাচ্ছে এই ছবিটাই। বসিরহাট লোকসভা আসনের অন্তর্গত এই এলাকায় ‘ক্ষমা প্রার্থনা’ করে দলীয় প্রার্থীকে জেতানোর আর্জি জানাচ্ছেন তৃণমূল নেতারা। শেখ শাহজাহান, শিবু-উত্তমের ‘কৃতকর্মের’ কথা মাথায় রেখে আপাতত এই কৌশলই নিয়েছে দল।

Advertisement

সন্দেশখালি-২ ব্লকের বেড়মজুর-২ পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের অঞ্চল কমিটির আহ্বায়ক এবং ব্লকের নির্বাচন কমিটির সদস্য হলধর আড়ি শনিবার বলেন, ‘‘তৃণমূল নেতাদের একাংশ এত দিন এলাকায় সাধারণ মানুষের উপরে এমন অত্যাচার চালিয়েছে যে, তাঁদের কাছে গিয়ে আমাদের প্রথমেই ক্ষমা চাইতে হচ্ছে সব কিছুর জন্য। নত হয়ে তাঁদের সব ক্ষোভ শুনতে হচ্ছে।’’ হলধর আরও বলেন, ‘‘অনেক মানুষ এখনও ভয়ে আছেন। তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন গ্রেফতার হওয়া, বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতারা আবার যদি জেল থেকে বেরিয়ে এসে অত্যাচার চালায়! গ্রামের মানুষকে আশ্বস্ত করতে হচ্ছে, ওই নেতাদের হাতে দল আর ক্ষমতা দেবে না। তারা আর দলে বা দায়িত্বে ফিরবে না।’’ তাঁর আক্ষেপ, ‘‘কিছু এলাকায় মানুষ এতটাই ক্ষিপ্ত যে, সেখানে রাজ্য সরকারের ভাল কাজের সুফল মানুষ পাচ্ছেন, তা তুলে ধরার পরিস্থিতি পর্যন্ত নেই।’’

এই প্রচার চালানো হবে মূলত সন্দেশখালি, জেলিয়াখালি, দুর্গামণ্ডপ, বেড়মজুর-১ পঞ্চায়েত এলাকার সেই সব গ্রামে, যেখানে আন্দোলন বড় আকারে হয়েছে। সন্দেশখালি-২ ব্লকের নির্বাচন কমিটির সদস্য তথা মণিপুর পঞ্চায়েতের প্রধান প্রসেনজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শেখ শাহজাহান, শিবপ্রসাদ হাজরারা বাম আমলে তৈরি। তৃণমূলে এসে এরা নখ-দাঁত আরও বের করে। আমরাও ওদের ভয় পেতাম। কিন্তু এখন আমাদেরই বাড়ি বাড়ি গিয়ে নাক-খত দিয়ে প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে। এ সব কথাও মানুষকে বোঝাতে হবে।’’

Advertisement

প্রসেনজিতের দাবি মানতে নারাজ সিপিএম নেতা নিরাপদ সর্দার। তিনি বলেন, ‘‘শাহজাহান আমাদের নেতা ছিল না। দলের সদস্যও ছিল না। মানুষের উপরে অত্যাচার চালানোর সাহস পায়নি তখন। তৃণমূলেই ওঁর উত্থান ও কুকর্ম শুরু।’’ যদিও তৃণমূলের একাংশের দাবি, ২০১১ সালে সন্দেশখালি থেকে জিতেছিলেন নিরাপদ, তখনও শাহজাহান সিপিএমেই ছিল।

প্রচার তো বটেই, ভোটের কাজ পরিচালনার জন্য সন্দেশখালি বিধানসভার দু’টি ব্লকে আলাদা দু’টি নির্বাচন কমিটি তৈরি করেছে তৃণমূল। এক একটি কমিটিতে ২০-২২ জন আছেন। কমিটি দু’টির মাথায় আছেন সন্দেশখালির বিধায়ক, তৃণমূলের সুকুমার মাহাতো। তিনি বলেন, ‘‘বুথ স্তরের কর্মীদের নিয়ে বৈঠক, হোয়াটস্যাপ গ্রুপ তৈরি-সহ বিভিন্ন পদক্ষেপ করা হচ্ছে। তৃণমূল ভাল ফল করবে।’’ স্থানীয় বিজেপি নেতা বিকাশ সিংহ পাল্টা বলেন, ‘‘তৃণমূল এখন ক্ষমা চাইলেও সন্দেশখালির মানুষ আর ক্ষমা করবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন