বাধ্য হয়ে জোট করতে হয়েছে। না হলে অত্যাচার রোখা যেত না। আনন্দবাজার ওয়েবসাইটের জন্য অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে অধীর চৌধুরী বললেন এ কথা। ডাকাবুকো নেতা হিসেবেই যাঁর খ্যাতি, ভাবমূর্তি যাঁরা বরাবরই বেপরোয়া, সেই অধীরই বলছেন, চাপে পড়ে জোট করতে হয়েছে! কী সেই চাপ? খুলেই বললেন অধীর।
রাজনৈতিক জীবনে অনেক বাঁক পেরতে হয়েছে প্রদেশ কংগ্রেসের বর্তমান সভাপতিকে। বাঁকের ও পারে কী অপেক্ষায় রয়েছে, তা ভেবে থেমে যাননি কোনও দিন। বার বার চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উতরেও গিয়েছেন। সেই অধীর বলছেন, জোট করার পিছনে চাপ কাজ করেছে? চাপের কাছে মাথা নত করার মতো নেতা তো তিনি নন? অধীর বুঝিয়ে দিলেন, চাপ যখন দলেরই সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের তরফ থেকে আসে, তখন নেতৃত্বকেও মাথা নত করতে হয়। বহরমপুরের সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর অকপট স্বীকারোক্তি, ‘‘এই প্রথম কর্মীদের চাপে নেতৃত্বকে সিদ্ধান্ত নিতে হল। আমরা এটাকে বেঙ্গল ফেনোমেনা বলছি। নেতৃত্ব এখানে কর্মীদের সম্মিলিত দাবির সামনে মাথা নত করতে বাধ্য হল। এত দিন নেতারা সিদ্ধান্ত উপর থেকে চাপিয়ে দিতেন। এই প্রথম নিচুতলা থেকে সিদ্ধান্ত উঠে এল।’’ কংগ্রেস এবং বাম, দুই শিবিরের কর্মীরাই কি এই জোট চাইছিলেন? অধীর বললেন, ‘‘কংগ্রেসের কর্মীরা তো চাইছিলেনই। বামেদের কর্মীরাও চাইছিলেন। না হলে আমাদের আলোচনা শেষ হওয়ার আগেই কর্মীরা যৌথ প্রচারে নেমে পড়বেন কেন?’’
বাম-কংগ্রেস জোটকে অনেকে সুবিধাবাদী জোট বলছেন। সাক্ষাৎকারে নিজেই সে প্রসঙ্গ টেনে আনলেন অধীর। বললেন, ‘‘আপনি বলবেন, তা হলে কি এরা সুবিধাবাদী শক্তি? বলতে পারেন। আমি বলব, এই জোট পশ্চিমবঙ্গের বাস্তবতা।’’
কংগ্রেস এবং বামেদের মধ্যে এ রাজ্যে সুসম্পর্কের ইতিহাস তো তেমন নেই। তা সত্ত্বেও দুই শিবিরের কর্মীদের মধ্যে হঠাৎ জোট বাঁধার তাগিদ কেন এল? অধীর চৌধুরী বলছেন, ‘‘তৃণমূলের আক্রমণ কংগ্রেস বা বামেরা একা একা রুখতে পারবে না। তৃণমূল এখন অনেক বড় বিপদ। তাই দু’দলের কর্মীরাই বলছেন, ভাই ঠিক আছে, আমরা এক সময় পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়েছি। কিন্তু এই বিপদ থেকে বাঁচতে, চল আমরা এক হই।’’
দেখুন ভিডিও