‘মমতাকে বিশ্বাস করে বাংলার মুসলিমরা প্রতারিত বোধ করছেন’

সংখ্যালঘুদের একটা অংশকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করতে গিয়ে রাজ্যে গুন্ডামি, মস্তানি, খুনোখুনি বাড়িয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিস্ফোরক অভিযোগ সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিমের। আনন্দবাজার ওয়েবসাইটের জন্য অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে সেলিমের দাবি, মমতাকে বিশ্বাস করে বাংলার মুসলিমরা প্রতারিত বোধ করছেন এখন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৬ ২০:৪১
Share:

সংখ্যালঘুদের একটা অংশকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করতে গিয়ে রাজ্যে গুন্ডামি, মস্তানি, খুনোখুনি বাড়িয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিস্ফোরক অভিযোগ সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিমের। আনন্দবাজার ওয়েবসাইটের জন্য অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে সেলিমের দাবি, মমতাকে বিশ্বাস করে বাংলার মুসলিমরা প্রতারিত বোধ করছেন এখন।

Advertisement

সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য তা হলে কী স্বীকার করে নিলেন যে সিপিএমের উপর থেকে বিশ্বাস উঠে গিয়েছিল এ রাজ্যের সংখ্যালঘুদের? মুসলিমদের বিশ্বাস জিতে নিতে পেরেছিলেন মমতা, এ কথা মেনে নিল বামেরা?

না। সেলিম তা মানছেন না। বললেন, ‘‘খুব খারাপ সময়েও কিন্তু সব সংখ্যালঘু তৃণমূলের দিকে যাননি। মু্র্শিদাবাদে, মালদায়, উত্তর দিনাজপুরে কী হল? এগুলো তো সংখ্যালঘুবহুল জেলা। সেখানে তাঁরা শুধু নির্ণায়ক শক্তি নন, তাঁরাই প্রধান। সেই মুসলামরা কিন্তু প্রণব মুখোপাধ্যায়কে, অধীর চৌধুরীকে ভোট দিয়েছেন। দীপা দাশমুন্সিকে ভোট দিয়েছেন। কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছেন। সিপিএমকে ভোট দিয়েছেন।’’

Advertisement

মহম্মদ সেলিমের এই মন্তব্যে কংগ্রেস-বাম জোটবার্তা আরও মজবুত।

প্রথমত, যে দীপা দাশমু্ন্সিকে রায়গঞ্জের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইতে হারিয়ে তিনি আজ সংসদে, উত্তর দিনাজপুরের সংখ্যালঘুরা যে সেই দীপাকে নেত্রী হিসেবে মানেন, তা অকপটে বলে দিলেন সেলিম!

দ্বিতীয়ত, সংখ্যালঘু ভোট কংগ্রেসের ঝুলিতে পড়া মানে যে বামেদের ঝুলিতেই পড়া, বাম-কংগ্রেস যে এখন এক-হাঁড়ি, তা আরও স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিলেন।

সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য যা-ই বলুন, দক্ষিণবঙ্গে মুসলিমদের বড় অংশ যে তৃণমূলের সঙ্গে থেকেছে গত পাঁচ বছর বা আর একটু বেশি সময় ধরে, তা বিভিন্ন ভোটের ফল বিশ্লেষণ করলেই স্পষ্ট। সেলিম মানছেন সে কথা। এবং এই পরিস্থিতির কারণটাও ব্যাখ্যা করছেন কোনও রাখঢাক ছাড়াই। বললেন, ‘‘মুসলিমদের মধ্যে একটা বঞ্চনার বোধ ছিলই। আমরাও সবটা করে উঠতে পারিনি তাঁদের জন্য। ভূমিসংস্কার করেছি,সামাজিক নিরাপত্তা দিয়েছি। কিন্তু শিক্ষা, চাকরি-বাকরি-সহ জীবনের নানা ক্ষেত্রে সংখ্যালঘুদের সমান অংশীদারিত্ব পাইয়ে দেওয়া বাকি ছিল। সেটা পাওয়ার বাসনা সংখ্যালঘুদের মনে ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংখ্যালঘুদের কলকাতা কেন্দ্রিক একটা অংশকে ব্যবহার করে সেই বাসনাটাকে ছিনিয়ে নেওয়ার মানসিকতায় পৌঁছে দিলেন— লড়কে লেঙ্গে। তাতে কী হল? গুন্ডামি, মস্তানি, খুনোখুনি আরও বেশি বাড়ল।’’

আরও পড়তে ক্লিক করুন
‘বাড়িতে ঢুকে ধর্ষণ করবে বলছিল, ঝান্ডা লুকিয়ে রাখতে বলেছিলাম’

সেলিমের মতে, মমতা জমানায় সংখ্যালঘুদের উন্নয়নে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বাঙালি হিন্দু পরিবর্তনের রূপ দেখে হতাশ বোধ করছেন। কিন্তু বাঙালি মুসলমান পরিবর্তনের রূপ দেখে প্রতারিত বোধ করছেন। গত পুর নির্বাচনে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের একমাত্র মুসলিম-বহুল ওয়ার্ডে বামেদের জয় এবং বিধাননগরের চারটি সংখ্যালঘু-প্রধান ওয়ার্ডেই বাম ও কংগ্রেস প্রার্থীদের জয় সংখ্যালঘু মহল্লায় হাওয়া বদলের ইঙ্গিত দিচ্ছে, দাবি মহম্মদ সেলিমের। সেই বদলে যাওয়া হাওয়া বিধানসভা নির্বাচনে ঝড়ের রূপ নিয়েছে বলেও বিশ্বাস করছেন রায়গঞ্জের সিপিএম সাংসদ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন