নির্বাচন কমিশনের কাছে ফের ধাক্কা খেল রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর। পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল আরও এক আইপিএস পদমর্যাদার অফিসারকে। মাওবাদী দমন বাহিনীর প্রধান ভারতী ঘোষকে জঙ্গলমহল থেকে সরিয়ে সোজা ভবানী ভবনে পাঠিয়ে দেওয়া হল। নির্বাচনী প্রক্রিয়ার অংশ না হয়েও, নির্বাচনের কাজে নাক গলাচ্ছিলেন তিনি। এমনই অভিযোগে সরিয়ে দেওয়া হল ভারতী ঘোষকে।
রাজ্য পুলিশে শাসক দল তথা মুখ্যমন্ত্রীর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ অফিসার যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ভারতী ঘোষ একেবারে প্রথম সারিতে। দীর্ঘ দিন পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার পদ এক সঙ্গে ধরে রেখেছিলেন ভারতী। গোটা পশ্চিম মেদিনীপুরে শাসক দলকে অবাধে সন্ত্রাস কায়েম করতে দিচ্ছেন ভারতী ঘোষ, এমন অভিযোগ বিরোধীরা বহু বার তুলেছে। মিথ্যা মামলায় বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ফাঁসিয়ে দেওয়া, ভয় দেখানো, অপহরণ করানোর অভিযোগ পর্যন্ত শোনা গিয়েছে। বাম, কংগ্রেস এবং বিজেপির স্থানীয় নেতারা কটাক্ষের সুরে বলতেন, ভারতী ঘোষই জেলা তৃণমূলের আসল সভাপতি।
নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার আগে রাজ্য পুলিশে শেষ যে বড় রদবদল ঘটালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাতে ভারতীকে পুলিশ সুপার পদ থেকে সরানো হয়। কিন্তু তার বদলে গোটা জঙ্গলমহলেই তাঁকে কাজে লাগানোর ব্যবস্থা পাকা করা হয়। বিশেষ আধিকারিক, মাওবাদী দমন পদে বসানো হয় তাঁকে। ওই পদে থাকায় নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে ভারতী ঘোষের সরাসরি কোনও সংযোগ ছিল না। কিন্তু তা সত্ত্বেও জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনের কাজে ভারতী ঘোষ নানা ভাবে হস্তক্ষেপ করছিলেন বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করে। নির্বাচন কমিশন সূত্রেই সে খবর জানা গিয়েছে। নির্বাচনের কাজে অযথা নাক গলানোর অভিযোগ ওঠার জেরেই শনিবার দুপুরে নির্বাচন কমিশন ভারতী ঘোষকে বিশেষ আধিকারিক, মাওবাদী দমন পদ থেকে সরিয়ে দেয়। তাঁকে বিশেষ আধিকারিক হিসেবেই ভবানী ভবনে কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
ঘুষ-তদন্তে মুকুলকে বাঁধতে তৎপর সিপিএম
দিন কয়েক আগেই পুলিশ ও প্রশাসনের ৩৭ জন আধিকারিককে বদলি করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তাঁরা সবাই নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। ভারতী ঘোষই প্রথম, যিনি নির্বাচনের কাজে সরাসরি যুক্ত না থাকা সত্ত্বেও কমিশনের খাঁড়ার মুখে পড়লেন।