sishir adhikary

WB election 2021 : দুপুরে শিশির-পতনের যোগ! সাংসদ শক্তির যোগ-বিয়োগে তৃণের সমান হওয়ার আশা পদ্মে

রবিবার পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় সমাবেশ অমিত শাহর। সেই সভায় উপস্থিত থাকার জোরাল সম্ভাবনা কাঁথির তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারীর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২১ ০৯:৫৭
Share:

শিশির অধিকারী।

রবিবার পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় সমাবেশ অমিত শাহর। সেই সভায় উপস্থিত থাকার জোরাল সম্ভাবনা কাঁথির তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারীর। তিনি নিজে কী করছেন, তা এখনও জানাননি কাঁথির ‘শান্তিকুঞ্জ’-এর বড় কর্তা। কিন্তু এখন বৃদ্ধ পিতা যাঁকে ‘অভিভাবক’ মানেন, তাঁর সেই মেজপুত্র নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী এমন কথানিজেই জানিয়েছিলেন। তা সত্যি হলে বদলে যাবে রাজ্যের প্রধান যুযুধান দুই রাজনৈতিক দলের সাংসদ শক্তির হিসাবের সমীকরণ। লোকসভার সাংসদ সংখ্যায় সমান-সমান হয়ে যাবে তৃণমূল এবং বিজেপি। শিশিরের কথায়, ‘‘আমন্ত্রণের চিঠি পেয়েছি। কথা বলছি।’’

Advertisement

গত লোকসভা নির্বাচনে এই রাজ্য থেকে তৃণমূলের সাংসদ হয়েছিলেন ২২ জন। অন্য দিকে, বিজেপি-র ১৮ জন জয় পান। ইতিমধ্যেই বর্ধমান পূর্বের তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডল বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন। খাতায়কলমে লোকসভায় এখনও তিনি তৃণমূলের সাংসদ। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তিনি পদ্মশিবিরে। সুনীলের যোগদানের পরেই রাজ্য বিজেপি দাবি করে, বাংলা থেকে লোকসভায় তাদের সাংসদ সংখ্যা ১৯ হয়ে যায়। তৃণমূল কমে ২১। এ বার শিশিরও বিজেপি-র পথে হাঁটলে সেই হিসেবে তৃণমূলের শক্তি আরও একটু কমে হয়ে যাবে ২০। অন্য দিকে, বিজেপি-ও ২০ জন সাংসদের দাবিদার হয়ে উঠবে। বিজেপি শিবিরের আশা, চলতি সপ্তাহের মধ্যেই তৃণমূলের আরও এক সাংসদ শিশিরের সেজ পুত্র দিব্যেন্দু আসতে পারেন বিজেপি-তে। সে কথা একেবারে অস্বীকার না করলেও ‘শীঘ্রই সিদ্ধান্ত নেব’ বলে জানিয়েছেন দিব্যেন্দু। তা হলে লোকসভায় বাংলার সাংসদ শক্তিতে তৃণমূলকে টপকে যাবে বিজেপি। পদ্মের সংখ্যা হবে ২১ আর জোড়াফুলের সাংসদ ১৯ জন।

অনেক আগে থেকেই শোনা গিয়েছিল, আগামী বুধবার কাঁথিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমাবেশে হাজির থাকতে পারেন শিশির। তার জন্য বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় আমন্ত্রণ জানিয়ে আসেন। গত ১৩ মার্চ ‘শান্তিকুঞ্জে’ দ্বিপ্রাহরিক ভোজন ও শিশির-সাক্ষাৎ শেষে লকেট অবশ্য জানিয়েছিলেন, আমন্ত্রণ জানাতে নয়, নেহাত সৌজন্য জানাতেই গিয়েছিলেন প্রবীণ সাংসদের কাছে। তবে শনিবার ঘোষিত ভাবেই শিশিরকে অমিতের সভায় আসার আমন্ত্রণ জানিয়ে এসেছেন কেন্দ্রীয় জাহাজ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য। একই সঙ্গে দিব্যেন্দুকেও তিনি বিজেপি-র সমাবেশে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

Advertisement

মোদীর সভায় শিশির আসতে পারেন বলে যখন জল্পনা শুরু হয়, তখনই শিশির জানিয়েছিলেন, মেজছেলের (শুভেন্দুর) নির্দেশে পেলেই তিনি মোদীর সভায় যাবেন। এমনও বলেছিলেন যে, তিনি ‘শান্তিকুঞ্জ’-এর গৃহকর্তা হলেও এখন সব সিদ্ধান্ত নেন তাঁর মেজপুত্রই। এর পরে পরেই গত বুধবার চণ্ডীপুরে একটি জনসভায় শুভেন্দু বলেন, ‘‘শিশিরবাবু থাকবেন মোদী’জির সভায়। অপেক্ষা করুন। আমি তো বলব, আরও আগে অমিত’জির সভায় চলে যেতে। ২১ তারিখ এগরায় ওই সভা আছে।’’ শুভেন্দুর ওই মন্তব্যের পর থেকেই পদ্মশিবির নিশ্চিত যে, শিশির আসছেন তাদের দলে এবং বাংলায় দলের সাংসদ সংখ্যা বাড়ছে।

শিশির বিজেপি-তে যোগ দিলেও খাতায়কলমে তিনি অবশ্য লোকসভায় তৃণমূল সদস্য হিসেবেই থেকে যাবেন। যেটা হয়েছে সুনীলের ক্ষেত্রেও। গত ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুরে অমিতের সভাতেই বিজেপি-তে যোগ দেন সুনীল। আর তার পরে পরেই দলত্যাগ বিরোধী আইনে তাঁর সাংসদপদ খারিজের দাবি জানায় তৃণমূল। লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লার কাছে সেই মর্মে চিঠি জমা দেন লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার শিশির বা দিব্যেন্দু বিজেপি-তে এলেও তেমন পদক্ষেপ করতেই পারে তৃণমূল। কিন্তু রাজ্য বিজেপি নেতারা এখন সে সব নিয়ে চিন্তিত নয়। বরং, উৎফুল্ল বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের শক্তিবৃদ্ধি এবং শাসক তৃণমূলের ‘ভাঙন’ নিয়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন