চলছে নির্বাচন, তবু শুরু হল বিড়ি ধর্মঘট

টোব্যাকো আইন সংশোধনের দাবিতে সোমবার থেকে ফের বিড়ি শিল্পে ধর্মঘটে নামলেন বিড়ি মালিকেরা। এর ফলে বিধানসভা নির্বাচনের মুখে কাজ হারালেন মুর্শিদাবাদ জেলার প্রায় ১১ লক্ষ বিড়ি শ্রমিক। গত ফেব্রুয়ারি মাসেও এই দাবিতেই ১০ দিনের ধর্মঘটে নামেন বিড়ি মালিকেরা। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার একটি সংসদীয় কমিটিও গঠন করে। কিন্তু তাদের সুপারিশ কার্য্কর করতে গড়িমসি করছেন কেন্দ্রীয় সরকার বলে অভিযোগ তুলেছেন বিড়ি মালিকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৬ ০২:১৮
Share:

টোব্যাকো আইন সংশোধনের দাবিতে সোমবার থেকে ফের বিড়ি শিল্পে ধর্মঘটে নামলেন বিড়ি মালিকেরা। এর ফলে বিধানসভা নির্বাচনের মুখে কাজ হারালেন মুর্শিদাবাদ জেলার প্রায় ১১ লক্ষ বিড়ি শ্রমিক।

Advertisement

গত ফেব্রুয়ারি মাসেও এই দাবিতেই ১০ দিনের ধর্মঘটে নামেন বিড়ি মালিকেরা। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার একটি সংসদীয় কমিটিও গঠন করে। কিন্তু তাদের সুপারিশ কার্য্কর করতে গড়িমসি করছেন কেন্দ্রীয় সরকার বলে অভিযোগ তুলেছেন বিড়ি মালিকেরা।

১ এপ্রিল থেকেই ২০১৪ সালের সংশোধনী-সহ “টোব্যাকো আইন ২০০৩” কার্যকর করার নির্দেশ জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় আইনে বলা হয়েছে, বিড়ির প্যাকেটের উপর ৮৫ শতাংশ জুড়ে সচিত্র সতর্কীকরণ দিতে হবে। বিড়ি মালিকদের বক্তব্য, ২৫টি বিড়ি নিয়ে তৈরি একটি প্যাকেটের ৮৫ শতাংশ জায়গা জুড়ে ছবি-সহ সতর্কীকরণ ছাপানো হলে অবশিষ্ট ১৫ শতাংশ জায়গায় বিড়ির নাম, কোম্পানির পরিচিতি ইত্যাদি তথ্য প্রকাশ করা সম্ভব নয়।

Advertisement

অরঙ্গাবাদ বিড়ি মালিক সংগঠনের সম্পাদক রাজকুমার জৈনের বক্তব্য, “টোব্যাকো আইন পুনর্বিবেচনার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার একটি সংসদীয় কমিটি গঠন করেছে। সম্প্রতি তারা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রিপোর্টও দাখিল করেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিড়ির প্যাকেটের উপর ৮৫ নয়, ৫০ শতাংশ জুড়ে সচিত্র সতর্কীকরণ বিধি নিষেধ ছাপা যেতে পারে। কিন্তু দিল্লিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করেও ফল হয়নি। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে ১ এপ্রিলের পর কোনও বিড়ি প্যাকেজিং করতে গেলে তাতে নতুন আইন মেনে ৮৫ শতাংশ জুড়েই ছাপতে হবে সতর্কীকরণ। এর প্রতিবাদে আমাদের উৎপাদন বন্ধ করতেই হয়েছে। যত দিন না আইন সংশোধন করা হবে, তত দিন বন্ধ থাকবে বিড়ির উৎপাদন। ”

সিটু অনুমোদিত সংগঠন রাজ্য বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আবুল হাসনাত খান বলেন, “স্বাস্থ্যের কারণে টোব্যাকো আইন ২০০৩ বাতিল করার পক্ষপাতী আমরা নই। কিন্তু শ্রমিকদের ভাতে মেরে বিড়ি মালিকদের এই ধর্মঘট সমর্থন করা যায় না। বিধানসভা নির্বাচনের আগে ফের ধর্মঘট শুরু হওয়ায় শুধু জঙ্গিপুরে ৬ লক্ষ শ্রমিক রুজি হারাবে। আমরা সমগ্র পরিস্থিতির কথা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে তাদের হস্তক্ষেপ চেয়েছি।”

আবুল হাসনাতের আশঙ্কা, রুজি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হাহাকার দেখা দেবে শ্রমিকদের মধ্যে। কাজ না পেয়ে জঙ্গিপুর-সহ গোটা মুর্শিদাবাদ জেলায় অর্থনৈতিক সঙ্কট বাড়বে, যা উদ্বেগজনক হয়ে উঠবে প্রশাসনের কাছেও। শিল্প অচল করে শ্রমিকদের পথে বসিয়ে এই আন্দোলনের ফলে শ্রমিকেরা রোজ সাড়ে চারশো কোটি টাকা মজুরি থেকে বঞ্চিত হবেন। নির্বাচনের মুখে আর্থিক সমস্যায় পড়বে গোটা মুর্শিদাবাদ জেলা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন