ভোটের দু’দিন আগেই রাম নবমীর আবিরে লাল হয়ে উঠেছিলেন ইসলামপুরের কংগ্রেস প্রার্থী কানাইয়ালাল অগ্রবাল। রবিবার ভোটের দিন সকাল থেকেই সন্ধ্যা অবধি সেই লাল আবিরের ছোঁয়াই যেন লেগে থাকল কানাইয়ালালবাবুর চোখে-মুখে।
কংগ্রেস-সিপিএম জোটের বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াইয়ের আসনগুলির মধ্যে ইসলামপুর অন্যতম। শেষপর্যন্ত সিপিএম নিজে না লড়ে জেডি(ইউ)কে আসনটি ছেড়ে দেওয়ায় সিপিএম কর্মীদের এক বড় অংশের সমর্থন পেয়েছিলেন কানাইয়ালালবাবু। তবে মুখে সিপিএম নেতারা অন্য কথা বললেও ভোটের দিন বুথে বুথে লাল রঙের ছটা যে লাগছে, তা সকালে পুর এলাকা থেকে ঘুরতে শুরু করে টের পেয়ে যান কংগ্রেস প্রার্থী। গ্রামের দিকেও তার জোরদার প্রভাবও ছিল।
একাধিক বুথে কখনও কংগ্রেসিদের পাশে কখনও দূরে থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে দেখা গিয়েছে বামপন্থী বন্ধুদের। রাতে জেতার বিষয়ে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত বলে কংগ্রেস প্রার্থী জানিয়েও দেন। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষের জোট ভোটে কাজ করেছে। সিপিএমের সমর্থন আমি পেয়েছি।’’ কংগ্রেসের জোটবন্ধু সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক ভট্টচার্যও বলেন, ‘‘ইসলামপুরে কংগ্রেস প্রার্থী ভাল ভোট করেছেন। উনি জিততেও পারেন বলে শুনেছি।’’
তবে হাল ছাড়ার পাত্র ছিলেন না ইসলামপুরের ৯ দফার বিধায়ক তথা গত রাজ্য সরকারের মন্ত্রী আবদুল করিম চৌধুরীও। শহরের অপ্সরা রোড লাগোয়া বাড়িতে সকাল থেকে একাধিক ফোন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন ছেলে মেহেতাব চৌধুরী। বিভিন্ন এলাকায় পোলিং এজেন্ট ঠিকঠাক বসেছে কি না, বুথ অফিস কার্যকরী কি না, টানা তার খোঁজ নিয়ে গিয়েছেন। শেষে অবশ্য সন্ধ্যার পর টেলিফোন তিনি বন্ধ করে দেন। আর করিম সাহের শহর থেকে ভোট দিয়ে শুরু করে ১১টি পঞ্চায়েত এলাকায় বুথে বুথে ঘুরে বেড়ান। ভোটারদের সঙ্গে দেখা করা ছাড়াও কেমন ভোট হচ্ছে তার খোঁজও। তিনি বলেন, ‘‘ভোট ভালই হয়েছে। ইসলামপুরবাসীর আর্শীবাদ আবার আমি পাব বলে আশাবাদী।’’
শহর ইসলামপুর কেন্দ্রে সকাল থেকেই দুই পক্ষের স্নাযুর যুদ্ধ যখন চলছে, তখন গ্রামীণ কেন্দ্র গোয়ালপোখরে ভোটের দিন চলছে এলাকার দখল রাখার লড়াই। তৃণমূল প্রার্থী গোলাম রব্বানির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কংগ্রেস প্রার্থী আফজল হোসেন নেইমি দিনভর চড়কি কেটে গিয়েছেন। বুথে জোর করা ঢোকানো, ভিড় করা থেকে ভুটভুটিতে লোক আনা নিয়ে দুই পক্ষের বচসা, বিক্ষিপ্ত কিছু গোলমাল হয়েছে। আফজল হোসেন বলেছেন, ‘‘ওঁরা কয়েকটা জায়গায় গোলমালের চেষ্টা করেছে। আমরা রুখে দিয়েছি। আমি জিতছি।’’
কংগ্রেসের ঘাঁটি বলে পরিচিত উত্তর দিনাজপুর জেলায় জোটই জিতবে তা জোর গলায় জানিয়ে দিয়েছেন রায়গঞ্জের সাংসদ মহম্মদ সেলিমও। দক্ষিণবঙ্গে ভোটের কাজে থাকার ফাঁকে দিনভর খোঁজ রেখেছেন নিজের সাংসদ এলাকার কেন্দ্রগুলিতে। সেলিম বলেন, ‘‘চোপড়ার একটি বুথ ছাড়া ওঁরা তেমন কিছু করতে পারেনি। কংগ্রেস, সিপিএম কর্মীরা একজোট ছিলেন। তৃণমূল শূন্য হবে এ জেলা।’’