জুলুমের নির্বাচন হচ্ছে, কমিশনকে তোপ মমতার

মঙ্গলবার দক্ষিণ ২৪ পরগনায় চারটি নির্বাচনী সভায় দলনেত্রী জোট ও বিজেপিকে আক্রমণের পাশাপাশি দলীয় গোষ্ঠীবিবাদ মেটানোর চেষ্টা করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরবর্তী পর্যায়ে নির্বাচনে রায়দিঘিতে বিরোধীরা বুথ লুঠ করতে পারেও এ দিন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৬ ০১:৪০
Share:

তিনি আসছেন...। বেতবেড়িয়াতে শশাঙ্ক মণ্ডলের তোলা ছবি।

মঙ্গলবার দক্ষিণ ২৪ পরগনায় চারটি নির্বাচনী সভায় দলনেত্রী জোট ও বিজেপিকে আক্রমণের পাশাপাশি দলীয় গোষ্ঠীবিবাদ মেটানোর চেষ্টা করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরবর্তী পর্যায়ে নির্বাচনে রায়দিঘিতে বিরোধীরা বুথ লুঠ করতে পারেও এ দিন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

Advertisement

এ দিন রায়দিঘিতে মমতা সিপিএম প্রার্থী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়কে ‘বহিরগাত’ তকমায় বিঁধতে চেষ্টা করেন মমতা। তৃণমূল প্রার্থী দেবশ্রী রায়ের বিরুদ্ধে একই সমালোচনার জবাব দিতে গিয়েই কান্তিবাবুকে যাদবপুরের বাসিন্দা বলে উল্লেখ করেন তিনি। মমতা বলেন, ‘‘কান্তিবাবু কোথায় থাকেন, তা রায়দিঘির মানুষ জানেন। কান্তিবাবু নির্বাচনের দিন বুথ লুঠ করবেন বলে দলীয় কর্মীদের সজাগ করেছেন তিনি। এ দিন তিনি দলীয় কর্মীদের বলেন, ‘‘ঠান্ডা মাথায় ভোট করুন। কোনও ভয় পাবেন না।’’ ওরা (সিপিএম-কংগ্রেস) একটা আইবি রিপোর্ট নিয়ে গুনগুন করছে। আমরা নাকি ৪০টা আসন পাব। আর ওরা নাকি ২০০টা আসন পাবে। আপনারা কোনও ভাবে বিভ্রান্ত হবে না।’’ তাঁকে ‘বহিরাগত’ বলা নিয়ে কান্তিবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘উনি জানেন না যে আমি গত দশ বছর রায়দিঘিতে বাড়ি করে রয়েছি। বছরের অধিকাংশ সময়ই রায়দিঘিতেই থাকি। এলাকার মানুষ অবশ্য তা জানেন।’’ বুথ দখলের আশঙ্কার প্রেক্ষিতে কান্তিবাবু বলেন, ‘‘এখানে মানুষ ভোট দেবে। ২০১১ সালের পর থেকে শাসক দল নির্বাচনের দিন বুথ দখল ছাড়া কিছু ভাবতে পারে না। এখন ভুল করে বিরোধীদের নাম বলছে। ওটা হয় তো নিজেদের কর্মীদের ওই বুথগুলি লুঠ করার নির্দেশ দেওয়ার ছিল। ভুল করে বিরোধীরা লুঠ করবে বলে ফেলেছেন।’’


ক্যানিংয়ে বেতবেড়িয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।মঙ্গলবার।-শশাঙ্ক মণ্ডল

Advertisement

এ দিন বারুইপুর ও রায়দিঘির সভায় নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর অতিসক্রিয়তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মমতা বলেন, ‘‘গত কাল নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী তাণ্ডব করেছে। আমাদের ক্যাম্প অফিস ভেঙে দেওয়া হয়েছে।’’

তবে পরবর্তী পর্যায় নির্বাচনের প্রেক্ষিতে বারুইপুরের সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনারা আমার জন্য ওপরওয়ালার কাছে প্রার্থনা করুন। আর আমার পাশে থাকুন।’’

এ দিন ভাঙড়ের সভায় দলের অন্দরেরকোন্দলের কথা মাথায় রেখে মমতা বলেন, ‘‘আরাবুল ইসলাম-কাইজার আহমেদের কথা শুনে কিছু করবেন না। এই কেন্দ্রে আমাকে ভোট দিন। আমি রেজ্জাক মোল্লাকে প্রার্থী করেছি। উনি গরিব চাষিদের নিয়ে লড়াই করেন।’’

এ দিন চারটি সভাতেই নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘জুলুমের নির্বাচন করা হচ্ছে। সিপিএম আর কংগ্রেস একজোট হয়ে এখানে আমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। আর মোদী সরকার দিল্লি থেকে পুলিশ পাঠিয়ে নির্বাচনের সময় জুলুম করছে।’’ সনিয়া গাঁধী বা বিজেপিকেও এ দিন কটাক্ষ করতে ছাড়েননি মমতা।

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পারভেজ সেলিম ও রায়দিঘি থানার ওসিকে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগে সরিয়ে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশের প্রেক্ষিতে মমতা বলেন, ‘‘কয়েক জন অফিসারকে সরিয়ে দিলেঅই কি ভোটে জিতে যাবে জোটপ্রার্থীরা? নির্বাচনের পরে বিরোধীরা বাঁচাও বাঁচাও করবে। আর আমরা ওদের বাঁচাবো।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন