Narendra Modi

​​​​​​​‘কালো হাত’ সাদা হল কী ভাবে, ফের বামকে খোঁচা মোদীর

এর আগে হলদিয়ায় বিজেপির সভা থেকে মোদী বলেছিলেন, বাম ও কংগ্রেস আসলে তৃণমূলের ‘গোপন বন্ধু’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২১ ০৭:০৪
Share:

ব্রিগেড সমাবেশের মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।

ব্রিগেড সমাবেশের মঞ্চে দাঁড়িয়ে বাম ও কংগ্রেসের জোটকে ফের নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ বার তাঁর আক্রমণ, কংগ্রেসের যে ‘কালো হাত’ ভেঙে দেওয়ার কথা বলত বামপন্থীরা, সেই হাত ধরেই এখন জোট হয়েছে!

Advertisement

এর আগে হলদিয়ায় বিজেপির সভা থেকে মোদী বলেছিলেন, বাম ও কংগ্রেস আসলে তৃণমূলের ‘গোপন বন্ধু’। বাম ও কংগ্রেসের জোটকে ভোট দেওয়া মানে আসলে তৃণমূলকেই সাহায্য করা। এ বার ব্রিগেডে এসে মোদী প্রথমে বলেছেন, ‘‘এক দিকে তৃণমূল, বাম ও কংগ্রেস রয়েছে, অন্য দিকে পরিবর্তন চেয়ে বাংলার মানুষ কোমর বেঁধেছেন।’’ বাম ও কংগ্রেসকে বিজেপির সঙ্গে এক বন্ধনীতে ফেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে আক্রমণ করে থাকেন, সেটাই উল্টে দিয়ে পাল্টা দাবি করেছেন মোদী।

তৃণমূলকে বাদ দিয়েও বাম ও কংগ্রেসকে আলাদা করে এ দিন আক্রমণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, স্বাধীনতার পর থেকে দীর্ঘ দিন বাংলায় কংগ্রেসের শাসন ছিল। তারা মানুষের উপরে অত্যাচার করেছিল, পরে ক্ষমতায় এসে বামেরাও সেই ধারা চালিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। এই সূত্রেই মোদী বলেন, ‘‘বামপন্থীরা এক সময় বলতেন কংগ্রেসের কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও! এই স্লোগানবাজির দৌলতেই ক্ষমতা দখল করেছিল তারা। প্রায় সাড়ে তিন দশক ক্ষমতায় ছিল। আমি জানতে চাই, আজ সেই কালো হাতের কী হল? কালো হাত ফরসা হয়ে গেল কী ভাবে?’’ মোদীর আরও সংযোজন, ‘‘যে হাতকে বামপন্থীরা কালো ভাবতেন, আজ তা সাদা হল কী ভাবে? যে হাত গুঁড়িয়ে দিতে চাইতেন, আজ সেই হাত ধরেই এগোচ্ছেন!’’ তবে বামেদের বিরুদ্ধে ‘পরিবর্তনের’ স্লোগান তুলে ‘মা-মাটি-মানুষের’ জন্য কাজ করবেন বলে ক্ষমতায় এসে মমতাও প্রতিশ্রতি রেখেছেন কি না, কটাক্ষের সুরেই সেই প্রশ্ন তুলেছেন মোদী।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব দাবি করেছেন, রাজ্যে বিজেপির ক্ষমতায় আসার রাস্তা কঠিন হচ্ছে বলে মোদী ‘ভয়’ পেয়েছেন। তৃণমূলও আতঙ্কে আছে। তাই মোদী-দিদি দু’জনেই বাম ও কংগ্রেসকে বারবার আক্রমণ করছেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘এই কথার উত্তর তো ২০১৬ সাল থেকেই আমরা দিয়ে আসছি। যা করছি প্রকাশ্যে, কোনও গোপনীয়তা নেই। বিজেপি ও তৃণমূল, এই দুই ভূতের হাত থেকে বাংলাকে উদ্ধার করতে হবে! বাম ও কংগ্রেসের জোটই হল সেই ওঝা, যে এই ভূত তাড়াতে পারে!’’ পাশাপাশিই অধীরবাবুর প্রশ্ন, ‘‘মোদী তো এখানে দিদিকে হঠানোর কথা বলছেন। কেন্দ্রে বিজেপির এনডিএ মন্ত্রিসভায় কি দিদি ছিলেন না? রেলমন্ত্রীর কী নাম ছিল?’’

একই সুরে সিপিএমের পলিটবুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমের মন্তব্য, ‘‘যে মঞ্চে দাঁড়িয়ে মোদী এ সব বলছেন, তার পিছন দিকে লাইন দিয়ে যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা সব তৃণমূল থেকে আসা। অথচ ডাক দিচ্ছেন তৃণমূল হঠাও! এই রাজ্যেই ২০১৬ সালে প্রচারে এসে মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারীদের দুর্নীতির কথা বলেছেন। এখন তাঁদের হয়েই প্রচার করছেন! বুঝে-শুনে স্মৃতিভ্রম হয় ওঁদের?’’ সেলিম ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘কালো হাত ভেঙে দাও’ স্লোগানের উৎপত্তি হয়েছিল জরুরি অবস্থার বিরোধিতায়। সেই অবস্থান থেকে বামপন্থীরা সরে আসেনি। বিধান ভবনে এ দিন বিরোধী দলের সচেতক, কংগ্রেসের মনোজ চক্রবর্তীও কটাক্ষ করেছেন, ‘‘চুরি করে বিজেপিতে গেলে সব ওয়াশিং মেশিনে সাফ! শুধু অন্যদের বেলায় অন্য কথা!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন