দলের প্রতীক চেনাতে হবে, বার্তা শুভেন্দুর

মানুষ তৃণমূল নেত্রীকে পছন্দ করেন। নেত্রীকে পছন্দ করেন বলেই মানুষ তৃণমূলকে ভোট দিতে চান। কিন্তু মালদহে এখনও অনেকেই তৃণমূলের প্রতীক চেনেন না। ফলে তাদের প্রতীক চেনানোর ব্যবস্থা করতে হবে বলে কর্মীদের নির্দেশ দিলেন সাংসদ তথা মালদহের পর্য়বেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চাঁচল শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৬ ০২:৩৫
Share:

হরিশ্চন্দ্রপুরে শুভেন্দু অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র

মানুষ তৃণমূল নেত্রীকে পছন্দ করেন। নেত্রীকে পছন্দ করেন বলেই মানুষ তৃণমূলকে ভোট দিতে চান। কিন্তু মালদহে এখনও অনেকেই তৃণমূলের প্রতীক চেনেন না। ফলে তাদের প্রতীক চেনানোর ব্যবস্থা করতে হবে বলে কর্মীদের নির্দেশ দিলেন সাংসদ তথা মালদহের পর্য়বেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী।

Advertisement

মালদহে দলের সংগঠন বেড়েছে বলে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা দাবি করেন। কিন্তু দল বাড়লেও এই জেলায় সাংগঠনিক ত্রুটি যে রয়ে গিয়েছে তা পর্যবেক্ষক হিসেবে অজানা নয় সাংসদের। আর সে জন্য যে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও অনেকাংশেই দায়ী তাও শুভেন্দুবাবুর অজানা নয় বলে দলীয় সূত্রের খবর। দলে কর্মীর তুলনায় যে নেতা বেশি তাও তৃণমূলের অন্দরে কান পাতলেই শোনা যায়। তাই নির্বাচনের মুখে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এড়িয়ে সাংগঠনিক কাজে মনোযোগ দিতেই কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বার্তা দিলেন বলে দলের একাংশের অভিমত।

রবিবার মালদহের চাঁচলের মালতীপুরের রুদ্ধদ্বার কর্মিসভায় সাধারণ মানুষের তৃণমূলের প্রতীক না চেনার প্রসঙ্গ তুলে শুভেন্দুবাবু নির্দেশ, ‘‘প্রতিটি বুথে ২০ জন করে সক্রিয় কর্মী চাই। যাঁরা মানুষকে দলের প্রতীক চেনানোর পাশাপাশি তৃণমূল সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের বার্তাও মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেবেন।’’ এ দিন মালতিপুর ও হরিশ্চন্দ্রপুরে দুটি কর্মিসভায় যোগ দেন শুভেন্দুবাবু। দুপুরে মালতিপুরে একটি বেসরকারি লজে ও পরে বিকেলে হরিশ্চন্দ্রপুর সংগঠন সমিতির হলে কর্মিসভা দুটির আয়োজন করা হয়। মালতিপুরের কর্মিসভায় গত বিধানসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে কংগ্রেসকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে আখ্যা দেন তিনি। গত বিধানসভা নির্বাচনে মালতিপুর কেন্দ্রে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট হয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেস সেখানে গোঁজ প্রার্থী দিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে। ফলে ওই আসনে আরএসপি প্রার্থী জয়ী হন বলে অভিযোগ তোলেন শুভেন্দুবাবু।

Advertisement

কর্মিসভায় শুভেন্দুবাবু ওই প্রসঙ্গ টেনেই বলেন, ‘‘শাসকদলের বিধায়ক না থাকায় রাজ্যজুড়ে যে উন্নয়ন হয়েছে তার ছোঁয়া মালতীপুরে পৌঁছয়নি। এমনকী, পাঁচ বছরে আরএসপি বিধায়ক কোনও উন্নয়নই করতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর দাবি, মালতীপুরের বাম বিধায়ক পাঁচ বছরে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কোনও সুপারিশই করেননি। এলাকার উন্নয়নের জন্য কিছু চাইলে তিনি অবশ্যই পেতেন বলেও দাবি তাঁর।

শুভেন্দুবাবুর দাবি, ‘‘যেখানেই শাসকদলের বিধায়ক ছিলেন সেখানেই উন্নয়ন হয়েছে। মালতীপুরে উন্নয়ন না হলেও হরিশ্চন্দ্রপুরের ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর কয়েক মাসে ওই এলাকায় ৫০ কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। যা গত পাঁচ বছরেও তজমুল হোসেন করতে পারেননি।’’ নারদ-প্রসঙ্গ সরাসরি না তুললেও সাংসদ বলেন, ‘‘রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের নামে কুত্সা চলছে। নির্বাচন আসলেই এ সব করা হয়। কিন্তু এতে কোনও লাভ হবে না। ফের তৃণমূল ক্ষমতায় ফিরবে। আর ওই মন্ত্রিসভায় আমিও থাকব। আপনারা দেখা করতে যাবেন! কোনও স্লিপ লাগবে না। আপনাদের এলাকার কাজ করার সুযোগ আমারও থাকবে।’’ এলাকার উন্নয়ন করতে হলে শাসকদলের বিধায়ক থাকা দরকার বলেও দাবি করেন তিনি! বামেরা ক্ষমতায় ফিরলে যে রাজ্যে সাম্প্রদায়িক অশান্তির পরিবেশ হবে, ফের সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম হবে বলেও দাবি করেন তিনি।

শুভেন্দুবাবু তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক। কিন্তু কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি মালদহ। আবার দুটি আসন বাদে জোটও হয়েছে জেলায়। তাই লড়াই কঠিন জেনে নির্বাচনের মুখে ক্ষমতায় ফেরা-সহ শাসকদলের বিধায়ক থাকলে উন্নয়নের বহরের কথা দলকে তিনি তাতাতে চাইছেন বলে কটাক্ষ করেছেন বিরোধীরা। মালতিপুরের আরএসপি প্রার্থী আব্দুর রহিম বক্সি শুভেন্দুবাবুর বক্তব্যকে মিথ্যে বলে দাবি করে পাল্টা অভিযোগ করেন, ‘‘এ রাজ্যে কোন পথে উন্নয়ন হয় তা নারদ-কাণ্ডে রাজ্যবাসী দেখছেন। আমি কী করেছি তা এলাকার মানুষ জানেন।’’ জেলা কংগ্রেস সভানেত্রী মৌসম নুরের কটাক্ষ, ‘‘কারা বিশ্বাসঘাতক তা মানুষ ভালই জানেন। তাই শাসক দলকে নির্বাচনের মুখে প্রতীক চেনানোর কথা বলতে হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন