সুষ্ঠু নির্বাচনের দায় সরকারের, চিঠি কমিশনের

ভোটের সময়েও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের। নির্বাচন কমিশনারের নির্দেশে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার এই মর্মে চিঠি দিলেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবকে। ওই চিঠিতেই কমিশনের তরফে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে— অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের পরিবেশ তৈরির দায়িত্বও রাজ্য সরকারের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৬ ০৩:০৭
Share:

আলোচনার পর নবান্ন থেকে বেরিয়ে আসছেন মুকুল রায় এবং সুব্রত বক্সী। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।

ভোটের সময়েও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের। নির্বাচন কমিশনারের নির্দেশে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার এই মর্মে চিঠি দিলেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবকে। ওই চিঠিতেই কমিশনের তরফে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে— অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের পরিবেশ তৈরির দায়িত্বও রাজ্য সরকারের। ভোটের প্রচারে রাজনৈতিক দল, প্রার্থী, এমনকী সাধারণ মানুষের জন্য আতঙ্কহীন পরিবেশ রাজ্যকেই তৈরি করে দিতে হবে।

Advertisement

শুক্রবার তৃণমূলের সহ-সভাপতি মুকুল রায় রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের সঙ্গে দেখা করার পরে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘‘গত ২৪ ঘণ্টায় তৃণমূলের ব্লক স্তরের ৬ নেতা-কর্মীর খুনের ঘটনার কথা মুখ্য নির্বাচনী অফিসারকে জানিয়েছি। কমিশন তো বলছে, ভোটের সময় তারাই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ করবে। এর পর আমাদের কোনও কর্মী খুন হলে তাঁর দেহ নিয়ে চলে আসব সিইও-র অফিসে।’’

মুকুলবাবুর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বর্ধমান ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসককে কমিশন এ দিন সতর্ক করে দিয়েছে। ওই দুই জেলাশাসকের দেওয়া রিপোর্টও স্বরাষ্ট্রসচিবের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী অফিসার দিব্যেন্দু সরকার।

Advertisement

সিইও দফতর থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে মুকুল রায়কেও। কোথায় কোথায় তাঁর দলের ৬ কর্মী খুন হয়েছে, কী তাঁদের নাম— তার তালিকা চাওয়া হয়েছে। অবশ্য ভোটের মুখে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত ৬ জন তৃণমূল কর্মীর নাম-ধাম পুলিশও জানাতে পারেনি। পুলিশের এক কর্তার কথায়, মুকুলবাবু তো ৬ জন খুন হয়েছে বলে নালিশ ঠুকেই খালাস। এ বার তিনিই তালিকা দিন কমিশনকে।

প্রশাসনের ওপর চাপ বাড়াতে মুকুল রায় ও সুব্রত বক্সী এ দিন নবান্নে এসে স্বরাষ্ট্রসচিব মলয় দের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। রাজ্য পুলিশের ডিজি জিএমপি রেড্ডিও ছিলেন সেখানে।

ভোটের মুখে শাসক দলের পছন্দের লোক বলে পরিচিত রাজ্য পুলিশের বহু অফিসারকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছে কমিশন। ভোটের অনেক আগে থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনীও মোতায়েন হয়েছে। কেবল তাই নয়, তাদের কোথায়, কী ভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে, তার রিপোর্টও প্রতিদিন তলব করছে কমিশন। পাশাপাশি, রাজ্যে ভোট-পরিবেশ খতিয়ে দেখতে একের পর এক পর্যবেক্ষক পাঠাচ্ছে দিল্লির নির্বাচন সদন। কমিশনের এই উদ্যোগ যে শাসক দল মোটেই ভাল চোখে দেখছেন না, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোট প্রচারে বেরিয়ে বার বার তা বুঝিয়ে দিচ্ছেন। কমিশনকে চাপে রাখতেই তাদের দফতরে দলীয় কর্মীর মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার হুমকি মুকুলবাবু দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রশাসনের ওপর চাপ বজায় রাখতেই এ বার নবান্ন অভিযানে শাসক দলের।

এই পরিস্থিতিতে চিঠি দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বের কথা রাজ্য প্রশাসনকে মনে করিয়ে দিল কমিশন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন