আরাবুল জমানা শেষ করে ভাঙড়ে রেজ্জাকই

তিনি ভাঙড়ের মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ। বিজয়ী ঘোষণা হওয়ার পর গণনা কেন্দ্রের বাইরে এসে জানালেন ‘চাষার ব্যাটা’ আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৬ ০৩:২২
Share:

তিনি ভাঙড়ের মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ। বিজয়ী ঘোষণা হওয়ার পর গণনা কেন্দ্রের বাইরে এসে জানালেন ‘চাষার ব্যাটা’ আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা।

Advertisement

সাত সকালেই গলায় গামছা জড়িয়ে সোনারপুর কলেজের গণনা কেন্দ্রে হাজির হন রেজ্জাক মোল্লা। গণনা কেন্দ্রের এক পাশে চেয়ারে হেলান দিয়ে ঘনিষ্ঠদের কাছে খবর নিচ্ছিলেন। গণনার প্রথম দিকে এক-একবার পিছিয়ে যাচ্ছিলেন, কখনও আবার এগোচ্ছিলেন। চোখে মুখে একটু অস্থির ভাব ফুটে উঠছিল।

গণনাকেন্দ্রে ছিলেন কাইজার আহমেদ, ওইদুল ইসলাম, নানু হোসেন। কিন্তু ধারে কাছে ছিলেন না আরাবুল ইসলাম। বাইরে তৃণমূল কর্মীদের মুখেও নাম নেই আরাবুলের। সপ্তম রাউন্ডের পর তখন অনেকটা এগিয়ে গিয়েছেন রেজ্জাক। কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছেন। কিন্তু গণনা কেন্দ্রের ভিতর থেকে খবর এল পোলেরহাট ২ নম্বর পঞ্চায়েত এলাকায় রেজ্জাক হেরেছেন। শুনে রেজ্জাক বললেন, ‘‘ওটা তো হারামজাদার (পড়ুন আরাবুল) এলাকা। ওখানে তো কম হবেই!’’ ভাঙড় দু’নম্বর পঞ্চায়েত এলাকার চালতাবেড়িয়া ও ভগবানপুর এলাকায় বিপুল সংখ্যায় ভোট পাওয়ার খবর আসতেই একটু নড়েচড়ে বসলেন রেজ্জাক। তার পর প্রায় তরতর করে এগিয়ে গিয়েছেন।

Advertisement

ভাঙড়ের এক তৃণমূল নেতার কথায়, ভাঙড় দু’নম্বর ব্লকে আরাবুলের প্রভাব রয়েছে। ওখানকার কয়েকটি পঞ্চায়েত নিয়ে রেজ্জাক সাহেবের চিন্তা ছিল। ভাঙড় তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, আরাবুল বাহিনীর এলাকার বুথেও রেজ্জাক এগিয়েছেন। কারণ আরাবুলের ইন্ধন থাকলেও তাঁর বাহিনী সব জায়গায় কাজ করেনি বলে মনে হচ্ছে। ওই নেতার ব্যাখ্যা, প্রচারে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরাবুলকে তাঁর বাহিনীর সামনেই সতর্ক করায় কাজ হয়েছে। আরাবুল
চাপ দিলেও তাঁর বাহিনী দল বিরোধী কাজ করেনি।

এ দিন আরাবুল অবশ্য নিজের এলাকা পোলেরহাটেই ছিলেন। রেজ্জাক সাহেবের জয়ের প্রসঙ্গে আরাবুল বলেন, ‘‘আমার সম্পর্কে অন্তর্ঘাতের অভিযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু ফলাফলই বলে দিল আমি ওই সবে নেই। ভাঙড়ের মানুষ যা করবে, তাই হবে। সেটাই হয়েছে। মানুষ রেজ্জাক মোল্লাকে ভোট দিয়েছে। উনি জিতেছেন।’’ আরাবুল এ-ও বলেন, ‘‘ভাঙড়ের কয়েক জন নেতা নিজেদের স্বার্থ বজায় রাখতে আমার বিরুদ্ধে রেজ্জাক সাহেবের কানে নানা মন্ত্র দিচ্ছেন।’’ তবে আরাবুলকে রেজ্জাক সাহেব বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তিনি বলেন, ‘‘ব্যানড্ আইটেম। ব্যাটারি ফুরিয়ে গিয়েছে। রিচার্জ হবে কি না বলতে পারছি না।’’ রেজ্জাক-ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল নেতার কথায়, কৌশলে রেজ্জাক সাহেব জানিয়ে দিয়েছেন, যে আরাবুলের জমানা শেষ। ভাঙড়ে এখন শুধু রেজ্জাক মোল্লা।

জয়ী হওয়ার পর এ দিন কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এসেছেন বলে জানালেন রেজ্জাক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন