West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls: বোমাবাজি, ভোটদানে বাধার অভিযোগকে ঘিরে উত্তপ্ত নন্দীগ্রাম

চার জেলাতে ভোট হলেও দ্বিতীয় দফার এই ভোটে কিন্তু উত্তাপ বাড়াচ্ছে নন্দীগ্রাম। বৃহস্পতিবার রায় দিতে সকাল থেকেই বুথে বুথে হাজির নন্দীগ্রামবাসী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২১ ০৮:৪৫
Share:

নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের দাউদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ১৮৩-১৮৬ নম্বর বুথে মেশিন খারাপ হওয়ায় ভোটের অপেক্ষায় দীর্ঘ লাইন। নিজস্ব চিত্র।

ভোট শুরু হতেই বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই নন্দীগ্রামের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কোথাও বোমাবাজি, কোথাও আবার বুথে ভোটদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগকে ঘিরে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। বিজেপি-র বিরুদ্ধে ভোটদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বয়ালের ১৩, ১৪, ১৮, ১৯, ২০ বুথে। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। পাল্টা তৃণমূলের বিরুদ্ধে বুথ দখলের অভিযোগ এনেছে তারা।

Advertisement

অন্য দিকে বয়ালের ৭ নম্বর বুথে তৃণমূল এবং বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে ভোট ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। দু’পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে রীকিমতো হাতাহাতি হয়। বিজেপি-র অভিযোগ, বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসে গন্ডগোল পাকানো হচ্ছে। বিজেপি-র বিরুদ্ধে পাল্টা ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা। রানিচকে শুভেন্দুর গাড়ি ঘিরে গো ব্যাক স্লোগান দেয় তৃণমূল কর্মীদের। ঘটনা ঘিরে একটা চাপা উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

বৃহস্পতিবার সকালেই ভেকুটিয়ায় এক বিজেপি কর্মীর ‘আত্মহত্যা’র ঘটনা সামনে আসে। পরিবারের অভিযোগ, তৃণমূলের লোকেরা হুমকি দিচ্ছিল। চাপ সহ্য করতে না পেরে ‘আত্মঘাতী’ হয়েছেন উদয় দুবে নামে ওই ব্যক্তি। বিজেপি-র অভিযোগ, তাঁদের কর্মীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছে তৃণমূলের লোকেরা। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। অন্য দিকে, সোনাচূড়ার কালীচরণপুরে বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে বিজেপি-র বিরুদ্ধে। তবে এই ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই বলেই পাল্টা দাবি করেছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব।

Advertisement

বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফার ভোট। রায় দিতে সকাল থেকেই ভোটকেন্দ্রগুলিতে হাজির হয়েছিলেন নন্দীগ্রামবাসী। তাঁদের এই রায়ই ঠিক করে দেবে ২ মে হাসিটা কার মুখে থাকে— মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি শুভেন্দু অধিকারী। এই দফায় ভোট হচ্ছে ৪ জেলার ৩০টি আসনে। তার মধ্যে রয়েছে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা। চার জেলাতে ভোট হলেও দ্বিতীয় দফার এই ভোটে কিন্তু উত্তাপ বাড়াচ্ছে নন্দীগ্রাম। যা রাজ্য রাজনীতি তো বটেই, জাতীয় রাজনীতিতেও বেশ কৌতূহলের সঞ্চার করেছে। অনেক তারকা প্রার্থী আছেন এই দফার ভোটে। কিন্তু নন্দীগ্রামের দুই যুযুধান প্রতিপক্ষ মমতা-শুভেন্দুর লড়াইয়ের দ্যুতিতে সেই তারকারাও যেন কেমন ফিকে হয়ে গিয়েছে। এই দফায় ৩০ আসনে ভোট হলেও নন্দীগ্রাম কেন্দ্রই একা সেই ৩০ আসনের সমান হয়ে দাঁড়িয়েছে কেবলমাত্র মমতা এবং শুভেন্দুর দ্বৈরথে।

জয় ছিনিয়ে নিতেই হবে— এই মন্ত্র নিয়ে দুই প্রতিপক্ষই নন্দীগ্রামের এ প্রান্ত ও প্রান্ত চষে ফেলেছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আসলে দুই প্রতিপক্ষের লড়াই নয়, এটা এখন ‘প্রেস্টিজ ফাইট’-এ পর্যবসিত হয়েছে। যা এ বারের নির্বাচনের লড়াইকে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।

মমতা যে দিন নিজেকে নন্দীগ্রামের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন এবং ঠিক তার পর পরই বিজেপি যখন শুভেন্দুকে এই নন্দীগ্রামেই প্রার্থী করল, সে দিন থেকেই এই নির্বাচনের ২৯৪ আসনের সব নির্যাস শুষে নিয়েছে এই কেন্দ্র। এখন নন্দীগ্রামবাসীর অঙ্গুলি কোন দিকে হেলবে, তার জন্য ২ মে পর্যন্ত অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে হবে গেরুয়া এবং জোড়াফুল শিবিরকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন