CPIM

Bengal Polls: সুজন-তালুকে জোটের মিছিলে রং তারুণ্যেরই

কলকাতায় সংযুক্ত মোর্চার বা আরও নির্দিষ্ট করে বললে বাম ও কংগ্রেস জোটের প্রথম নির্বাচনী রোড-শো লোক টানল ভালই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২১ ০৫:৪৫
Share:

প্রতীকী ছবি।n সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী, শতরূপ ঘোষ, দেবদূত ঘোষ ও আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে অধীর চৌধুরী এবং বিমান বসু। বুধবার যাদবপুর এলাকায়। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

গলি আর বড় রাস্তার সংযোগে জমে আছে মুঠো মুঠো ভিড়। হুডখোলা জিপ সামনে এলেই এগিয়ে যাচ্ছেন মানুষ। দাঁড়িয়ে পড়ছে শোভাযাত্রা। জনতা কথা বলতে চাইছে সওয়ারিদের সঙ্গে। বাকিদের হিড়িক মোবাইলে ছবি তোলার। ভিড়ের মধ্যে মহিলাদের সংখ্যা আলাদা করে চোখে পড়ার মতোই।

Advertisement

কলকাতায় সংযুক্ত মোর্চার বা আরও নির্দিষ্ট করে বললে বাম ও কংগ্রেস জোটের প্রথম নির্বাচনী রোড-শো লোক টানল ভালই। সিপিএমের প্রার্থী তালিকার মতো মহামিছিলেও তরুণ মুখের সারি। ঢাক-ঢোল পিটিয়ে, পতাকা-ফেস্টুন নিয়ে, হরেক রকম স্লোগান দিয়ে তরুণ-তরুণীরাই জমিয়ে রাখলেন গোটা পথ। ঢাকুরিয়া থেকে গড়িয়া পর্যন্ত বুধবার সন্ধ্যার এই রোড-শো’তেই জোট হওয়ার পরে প্রথম বার কলকাতার রাস্তায় বাম নেতাদের সঙ্গে দেখা গেল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে। তিন জন সিপিএম প্রার্থীর সঙ্গে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু এবং এক কংগ্রেস প্রার্থীর সঙ্গে অধীরবাবু একত্রে ছিলেন এ দিনের কর্মসূচিতে।

রোড-শো’র পথের সিংহভাগই যাদবপুর বিধানসভা কেন্দ্র জুড়ে। যাদবপুরের সিপিএম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তীর সমর্থনে ট্যাবলো, ফেস্টুন নিয়ে ‘আমিও সু-জন’ মাস্ক ও টি-শার্টে সজ্জিত বাম কর্মী-সমর্থকদের উদ্দীপনাও ছিল তুঙ্গে। কাছেই বাঘাযতীনে তৃণমূলের সভায় বক্তা ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের প্রচারের সঙ্গে টক্কর নিতে আরও কোমর বেঁধে নেমেছিলেন বাম সমর্থকেরা। কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা অবশ্য ঘটেনি। পথে তৃণমূলের কার্যালয় থেকে শাসক দলের নেতা-কর্মীরা বরং বেরিয়ে বিরোধীদের রোড-শো দেখেছেন।

Advertisement

কসবা, টালিগঞ্জ ও রাসবিহারী কেন্দ্রও ছুঁয়ে গিয়েছে এ দিনের মিছিল। কসবা ও টালিগঞ্জের দুই সিপিএম প্রার্থী শতরূপ ঘোষ ও দেবদূত ঘোষ এবং রাসবিহারীর কংগ্রেস প্রার্থী আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়ও ছিলেন রোড-শো’য়। শিল্প ও সংস্কৃতি জগৎ থেকে সব্যসাচী চক্রবর্তী, চন্দন সেন, শ্রীলেখা মিত্রেরাও যোগ দিয়েছিলেন পথ পরিক্রমায়। সিএএ-এনআরসি এবং বিজেপির বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে ‘আজাদি’র স্লোগান সামনে রেখে ধীর গতিতে এগিয়েছে মিছিল, সঙ্গে জুড়েছে তৃণমূলের আমলে চাকরির পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগও। বিমানবাবু গাড়ি থেকেই সকলকে অনুরোধ করেছেন করোনা আবহে মাস্ক পরে থাকার জন্য। অধীরবাবু করোনার গোড়া থেকেই সাদা কাপড়ে মাথা-মুখ ঢেকে বাইরে বেরোন। মুখ দেখা যাচ্ছে না বলে জনতার আর্জিতে মাঝপথে কাপড়ের ঢাকনা ছেড়ে মাস্ক পরে মুখ দেখাতে হয়েছে তাঁকে!

জোটের এই কর্মসূচির আগে এ দিনই কলকাতা প্রেস ক্লাবে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেছেন, নিজেদের রাজনৈতিক বক্তব্যের জোরেই সংযুক্ত মোর্চা বিজেপি ও তৃণমূলের দ্বিমেরু ভাষ্যের বাইরে আলাদা জায়গা করে নিচ্ছে। মানুষও সাড়া দিচ্ছেন। অধীরবাবু পরিষ্কার করেই জানিয়েছেন, মোর্চার নেতৃত্ব দিচ্ছে সিপিএম এবং তার শরিক হিসেবে কংগ্রেস ও আইএসএফ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ছে। ভোটের পরে ত্রিশঙ্কু সরকারের পরিস্থিতি হলে তৃণমূলকে সমর্থন করা হবে কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে অধীরবাবুর কৌশলী জবাব, ‘‘যদি-কিন্তুর উপরে কোনও উত্তর হয় না। তবে রাজনীতি হল সম্ভাবনার খেলা। এমনও হতে পারে, আমাদের সমর্থন চাইতে হল তৃণমূলকে! সে সব এখন থেকে ভেবে কী হবে?’’

পরে বিমানবাবু এই নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি, মোর্চার সরকার গড়ার লক্ষ্যের উপরেই জোর দিয়েছেন। পাশাপশিই প্রবীণ বাম নেতা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে ভাবে প্রচারে এসে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে ‘দিদি-ই-ই’ সম্বোধনে মন্তব্য করছেন, তা সুরুচির পরিচয় নয়। আবার তৃণমূল নেত্রীর নানা মন্তব্যে হিংসার প্ররোচনা থাকছে বলেও তাঁর অভিযোগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন