West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls: ভোটে হিংসা নয়, প্রচার লজেন্স বিক্রেতার

‘খেলা হবে’ স্লোগানে ভোটমুখী বঙ্গে রাজনীতির পারদ যখন চড়ছে, তখন নির্বাচনে ‘শান্তিরক্ষার বার্তা’ দিতে গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন পূর্ব বর্ধমানের এক লজেন্স বিক্রেতা। তাঁর বার্তা— ‘খেলা হোক, কিন্তু হিংসা নয়’।

Advertisement

সুপ্রকাশ চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২১ ০৮:১৭
Share:

কিঙ্কর মালিক। নিজস্ব চিত্র।

‘খেলা হবে’ স্লোগানে ভোটমুখী বঙ্গে রাজনীতির পারদ যখন চড়ছে, তখন নির্বাচনে ‘শান্তিরক্ষার বার্তা’ দিতে গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন পূর্ব বর্ধমানের এক লজেন্স বিক্রেতা। তাঁর বার্তা— ‘খেলা হোক, কিন্তু হিংসা নয়’।

Advertisement

‘খেলা হবে’ এবং ‘ভয়ঙ্কর খেলা হবে’র মতো স্লোগান-পাল্টা স্লোগানে একে অপরকে বিঁধছেন শাসক ও বিরোধী পক্ষ। ভোট পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের উপরে চাপ তৈরির এই কৌশল সাধারণ মনুষের মনে অশান্তির আশঙ্কার জন্ম দিয়েছে। এই আবহে হিংসা-মুক্ত নির্বাচনের বার্তা দিচ্ছেন জামালপুরের লজেন্স বিক্রেতা কিঙ্কর মালিক।

ঘুরে ঘুরে লজেন্স, বিস্কুট, চানাচুর বিক্রি করেন কিঙ্কর। গত প্রায় ২৫ বছর ধরে এটাই তাঁর পেশা। নিজের যে মোপেডে ঘুরে বেড়ান, অন্য সময় তাতে বাজে গান। তবে করোনা-কালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতেও মোপেড থেকে সচেতনতার বার্তা প্রচার করেছিলেন। এখন সে সাউন্ড বক্স থেকে ভেসে আসছে বার্তা— ‘আসন্ন নির্বাচনে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখুন। দাঙ্গা-হাঙ্গামা করবেন না। সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বজায় রাখুন। রাজনীতি করুন খুশির সঙ্গে, হিংসার সঙ্গে নয়’।

Advertisement

কিঙ্কর পড়াশোনা করেছেন অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। পরিবারে রয়েছেন তাঁর ৭৫ বছরের বাবা। বছর চল্লিশের কিঙ্কর বলেন, ‘‘ভোটের সময় অনেক খুনোখুনি হয়। কত মায়ের কোল খালি হয়। তাই, এ বার ভেবেছিলাম, ভোটের সময়ে আমি এ নিয়ে প্রচার করব।’’ তার পরে যোগ করেন, ‘‘সবাই বলছে, ‘খেলা হবে’। কী খেলা হবে অত জানি না। কিন্তু যে খেলাই হোক, আমি চাইব, তাতে মানুষের ভাল যেন হয়। মানুষের উন্নতির খেলা হোক।’’ এখন তিনি প্রচার চালাচ্ছেন জামালপুর থেকে বর্ধমান, সর্বত্র।

কিঙ্করের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছে প্রশাসন ও রাজনৈতিক দলগুলি। জেলা প্রশাসনের তরফে জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক কুশল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন সাধারণ মানুষকে সতর্ক করতে এ ধরনের কর্মসূচি নিয়ে থাকে। উনি এক জন সচেতন মানুষ। অন্যকে সচেতন করতে উনি উদ্যোগী হয়েছেন। এর মতো ইতিবাচক পদক্ষেপ আর কিছু হতে পারে না।’’

তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ‘‘আমরা সকলেই অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পক্ষে। ওঁর এই উদ্যোগ প্রশংসার যোগ্য। দলের পক্ষ থেকে ওঁকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’’ সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক অনির্বাণ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘প্রতি বছর ভোটে লাগাম ছাড়া সন্ত্রাস হয়। সাধারণ মানুষ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়। আমরাও ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।’’ বিজেপি নেতা কল্লল নন্দন বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের চেষ্টা করছে। শান্তিরক্ষার জন্য কিঙ্করবাবু যে প্রচার করছেন, সে জন্য ওঁকে কুর্নিশ।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement