BJP Candidate List

Bengal Polls: ‘উড়ে এসে জুড়ে প্রার্থী’! নিশানায় লকেট, রেললাইনে শুয়ে পড়লেন বিজেপি নেতা

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ত্রিবেণী শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২১ ২০:০৮
Share:

রেললাইন থেকে নিরুপমকে সরিয়ে আনেন বিজেপি কর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র।

প্রার্থিতালিকায় লকেট চট্টোপাধ্যায় ‘প্রভাব’ খাটিয়েছেন। এই অভিযোগ তুলে হুগলির ত্রিবেণীতে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করলেন নিরুপম মুখোপাধ্যায় নামের স্থানীয় এক বিজেপি নেতা। রেললাইনে শুয়েও পড়েন তিনি। দীর্ঘ ক্ষণের চেষ্টায় তাঁকে কোনও রকমে নিরস্ত করেন স্থানীয় বিজেপি কর্মীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয় রেল পুলিশ (জিআরপি)-ও। আপাতত তাঁকে নিরস্ত করা গেলেও পুরনো কর্মীদের গুরুত্ব দেওয়া না হলে দলের জেলা দফতরের সামনে গায়ে আগুন দেবেন বলে হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছেন নিরুপম।

Advertisement

নীলবাড়ির লড়াইয়ে রবিবার বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তৃতীয় ও চতুর্থ দফার প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করেছেন। তা নিয়ে জেলায় জেলায় বিক্ষোভ মাথাচাড়া দিয়েছে। হুগলিতেও তার প্রভাব পড়েছে। তৃণমূলত্যাগী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, প্রবীর ঘোষালকে প্রার্থী করায় সিঙ্গুর এবং উত্তরপাড়াতেও বিক্ষোভ হয়েছে। হুগলির সাংসদ লকেটকে প্রার্থী করায় রাজনীতি থেকেই অবসর ঘোষণা করেছেন চুঁচুড়ার বিজেপি নেতা তথা জেলা বিজেপি-র প্রাক্তন সভাপতি (সংগঠন) সুবীর নাগ।

সেই রেশ গিয়ে পৌঁছল ত্রিবেণীতেও। টিকিট না পেয়ে রবিবার তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দেন দেবব্রত বিশ্বাস। এত দিন হুগলি জেলায় তৃণমূলের সহ-সভাপতি ছিলেন তিনি। চুঁচুড়া-মগরা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিও ছিলেন। বিজেপি-তে যোগদানের পরেই সপ্তগ্রাম আসনে তাঁর নাম নিয়ে দলের অন্দরে ভাবনা-চিন্তা শুরু হয়েছে বলে জল্পনা তৈরি হয়। এর পরেই বিক্ষোভ শুরু হয় ত্রিবেণীতে। হুগলি জেলার ১৭টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলেও, সপ্তগ্রাম আসনে এখনও প্রার্থী ঘোষণা বাকি। সেই আসনে দেবব্রতকে ভাবা হচ্ছে জল্পনা শুরু হতেই প্রতিবাদে নামেন স্থানীয় বিজেপি কর্মীরা। একাধিক জায়গায় দেবব্রতর বিরুদ্ধে পোস্টার ঝোলানো হয়। মহানাদ এলাকায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধ করেন বিজেপি কর্মীরা। মগরার কাঁটাপুকুরে জি়টি রোড অবরোধ করেও বিক্ষোভ দেখানো হয়।

Advertisement

ওই বিক্ষোভে ছিলেন বিজেপি-র মৎস্যজীবী সেলের আহ্বায়ক নিরুপমও। তাঁর অভিযোগ, ‘‘স্থানীয় কর্মী-সমর্থকদের মতামত নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি দলীয় নেতৃত্ব। এত দিন ধরে যাঁরা দলের হয়ে কাজ করলেন, দলীয় নেতৃত্বের কাছে তাঁদের পরিশ্রমের কোনও মূল্য নেই।’’ একই বক্তব্য এলাকার অন্যান্য বিজেপি কর্মীদেরও। তাঁদের অভিযোগ, লকেটের কথাতেই ‘উড়ে এসে জুড়ে বসা’ দেবব্রতকে গুরুত্ব দিচ্ছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

দেবব্রতকে নিয়ে অসন্তোষের যথেষ্ট কারণও রয়েছে বলে মনে করেছেন স্থানীয়েরা। তাঁদের অভিযোগ, দেবব্রত-কে নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই অসন্তোষ জমা হচ্ছিল। একাধিক খুনের মামলা রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তোলাবাজির অভিযোগও রয়েছে। এলাকায় মাটি-মাফিয়ার বাড়বাড়ন্তের পিছনেও তাঁর হাত রয়েছে। এমনকি রাতের অন্ধকারে ডানলপের বন্ধ কারখানার যন্ত্রপাতি বিক্রির পিছনেও দেবব্রতের ভূমিকা রয়েছে বলে অভিযোগ।

বিক্ষোভের খবর পেয়ে হুগলি জেলায় বিজেপি-র সভাপতি গৌতম চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দল বড় হয়েছে। তাই একটু আধটু বিক্ষোভ তো থাকবেই। দল প্রার্থী ঠিক করেছে। কর্মীদের বিক্ষোভের কথা অবশ্যই জানাব দলকে। দেবব্রত দলে যোগ দিয়েছেন ঠিকই। তবে এখনও তাঁকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন