মুখ্যমন্ত্রী হতে দেব না, সূর্যকে ঘিরে বিক্ষোভ তৃণমূলের

নারায়ণগড়ের বুথে বুথে শাসক দলের দাপট রুখতে দিনভর নিজে ঘুরে বেড়ালেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। এবং সে কাজ করতে গিয়ে দফায় দফায় তৃণমূলের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল তাঁকে।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

নারায়ণগড় শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৬ ১৭:১৯
Share:

নারায়ণগড়ের বুথে বুথে শাসক দলের দাপট রুখতে দিনভর নিজে ঘুরে বেড়ালেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। এবং সে কাজ করতে গিয়ে দফায় দফায় তৃণমূলের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল তাঁকে।

Advertisement

নারায়ণগড়ের মোট ২৬৯টির মধ্যে ২৩টি বুথে ভোট লুঠের চেষ্টা হতে পারে বলে আশঙ্কা ছিল সিপিএমের। সেই মতো সোমবার সকাল থেকেই নিজের ভোট দেওয়ার পরে ওই বুথগুলিতে পর পর ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন সূর্যবাবু। কোথাও তিনি নিজে গাড়ি করে তুলে নিয়ে গিয়ে বাম এজেন্টকে বুথে ঢুকিয়ে দিয়ে এসেছেন, কোথাও পরিচয়পত্র ছাড়া তৃণমূল কর্মীর ঘুরে বেড়ানো আটকেছেন, কোথাও আবার বুথের ভেতরে রাজ্য পুলিশকে দেখে চালেঞ্জ করেছেন।

তাঁকে এই ভূমিকায় নামতে দেখে দ্রুতই নতুন কৌশল নেয় তৃণমূল। সূর্যবাবুর কনভয় কোনও বুথ এলাকায় ঢুকলেই আগাম বাইকে চেপে তৃণমূল কর্মীরা এলাকায় গিয়ে দলীয় কর্মীদের কাছে বার্তা পৌঁছে দিচ্ছিলেন, তার পরেই শুরু হচ্ছিল বিক্ষোভ। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভে ঘটনাটি ঘটে বেলদার পাতলী হাইস্কুলের বুথে। বুথের লাইনে প্রায় কোনও ভোটারই তখন ছিলেন না। সূর্যবাবু খোঁজ নিচ্ছিলেন, লাইন এত ফাঁকা কেন? আচমকাই এক দঙ্গল লোক তাঁকে ঘিরে ফেলে স্লোগান দিতে থাকে। নিজেদের তৃণমূল কর্মী বলে পরিচয় দিয়ে তারা দাবি করে, কোনও ভাবেই সূর্যবাবুকে মুখ্যমন্ত্রী তারা হতে দেবে না। ৩৪ বছর ধরে নারায়ণগড়ের কোনও উন্নয়ন হয়নি বলে তারা অভিযোগ করে। এবং তারা প্রশ্ন তোলে, এই এলাকায় আগে কেন বিধায়ক সূর্যবাবুকে দেখা যয়ানি।

Advertisement

আরও পড়ুন
নির্বাচন নিয়ে এত অভিযোগ! উদ্বিগ্ন জৈদীর ফোন সুনীলকে

তিনি অবশ্য গোটা বিক্ষোভটাই চুপচাপ দাঁড়িয়ে শুনেছেন। কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলেছেন। বিক্ষোভকারীরা আবার সেই সময়ে টানা শাসিয়ে গিয়েছে সংবাদ মাধ্যমকে। বিক্ষোভের ভিড়ে টের পাওয়া গিয়েছে দু’চার জন মদ্যপের উপস্থিতিও। পরে বাঁকিবাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে সিপিএম সমর্থকেরা যখন সূর্যবাবুর সঙ্গে কথা বলছিলেন, আচমকাই তার মাঝখানে ঢুকে হট্টগোল বাধিয়ে দেয় কিছু তৃণমূল সমর্থক। দু’পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি বাধে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মৃদু লাঠি চার্জ করে কেন্দ্রীয় বাহিনী। এ ব্যাপারে সূর্যবাবু পরে বলেন, ‘‘ওঁদের দলের সর্বোচ্চ নেত্রীর মতোই এটা তৃণমূলের সংস্কৃতি। এঁরা বিপজ্জনক পথে হাঁটছেন। ওঁরা যে আচরণ করলেন, তা দেখে এর পরে ওঁদের দলের নেতারা কেউ বেরোলে যদি চোর চোর বলে বিক্ষোভ শুরু হয়, তা হলে কেমন লাগবে। তবে মানুষকে বলব এই আচরণের প্ররোচনায় পা দেবেন না।’’ সূর্যবাবুর আরও দাবি, তিনি গিয়ে পড়ায় নারায়ণগড়ের কিছু বুথে শাসকদলের ভোট লুঠের চেষ্টা ব্যাহত হয়েছে। সেই হতাশা থেকেই এমন বিক্ষোভ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন