প্রধান টিমগুলো কে কী রকম ফল করবে এখনও খুব স্পষ্ট নয়। খেলা সবে শুরু হয়েছে। তবে প্রথম পরীক্ষায় রেফারি এবং লাইন্সম্যান কিন্তু সসম্মানে উত্তীর্ণ হলেন এমনটা বলা যাবে না। লাইন্সম্যান কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কখনও অন্যমনস্ক, কখনও উদাসীন, কখনও বা আত্মমগ্ন দেখাল দিনের বিভিন্ন সময়ে। অন্তত বেশ কয়েকটা জায়গায়। ভোটের ডিউটি ছেড়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান বাজারে বাজারে ঘোরাফেরা করছেন সবজি অথবা জামা কাপড়ের সন্ধানে অথবা ইষৎ বিশ্রাম নিয়ে নিচ্ছেন শান্ত ছায়াতলে— দু-দশটা এরকম ঘটনাও চিন্তায় ফেলত না যদি না বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে তাঁদের উপস্থিতি মোটের উপর অদৃশ্য থাকত। গ্রামকে গ্রাম মৌজা কে মৌজা সেনা বুটের টহলে যে আশ্বাস পেতে চেয়েছিল, বুথের মধ্যেই নিজেদেরকে আটকে রেখে কেন্দ্রীয় বাহিনী তা পূরণে যে ব্যর্থ হয়েছে তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই।
তাঁদের পরিচালনা করতে পারতেন যিনি সেই রেফারি নির্বাচন কমিশন, তাঁদেরও দোর্দণ্ডপ্রতাপ উপস্থিতি টের পাওয়া গেল কোথায়? বিরোধীদের তরফে অভিযোগ উঠল, সাধারণ মানুষের উদ্বেগ বৃদ্ধি পেল— অথচ এ বার অন্তত অন্য রকম কিছু প্রত্যাশা করেছিল পশ্চিমবঙ্গ।
পরীক্ষার এখনও অনেকগুলো দিন বাকি। গণতন্ত্রের অনেকগুলো স্তম্ভে মরচে পড়তে দেখে হতাশ হয়ে যাওয়া মানুষ তাঁদের শেষ অধিকারটুকু রক্ষায় নির্বাচন কমিশনের উপর এখনও তুমুল ভরসা রাখেন। নির্বাচন কমিশনের সেটা বোঝা দরকার। বোঝা দরকার এই সত্যটাকেও, এই রাজ্যে ভোটের এই রাজ্যের রিগিং ‘অবৈজ্ঞানিক’ পথে বিহার স্টাইলে হয় না। বাহুবলীর হুঙ্কার নয়, গ্রামে গ্রামে ঘরে ঘরে নীরব শাসানি স্থির করে দেয় এখানকার ভবিষ্যৎ। এই প্রকৃত মানুষদের যদি বুথ অবধি না আনতে পারে কমিশন তবে জয়ী হবে ভূতেরা। নির্বাচন কমিশনকেই স্থির করতে হবে ভূতকে পিছনে ফেলে রেখে কী ভাবে ভবিষ্যতটাকে তৈরি করা যায়।