Academy of Fine Arts

ভেঙে পড়ছে অ্যাকাডেমি! এসি অচল, শিকেয় স্বাচ্ছন্দ্য, সংস্কার হোক, চান নাট্যব্যক্তিত্বরা

১৯৭১ সাল। বাদল সরকার রচিত ‘পাগলা ঘোড়া’ নাটক দিয়ে অ্যাকাডেমি মঞ্চ থিয়েটার হলের পরিচিতি পায়। সেই মঞ্চের দুর্দশায় চুপ থাকা মুশকিল বলে মনে করছেন নাট্যব্যক্তিত্বরা।

Advertisement

তিয়াস বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২২ ১০:০৩
Share:

সকলেই চান সংস্কার হোক অ্যাকাডেমির। আনন্দবাজার অনলাইনকে তেমনই বললেন অর্পিতা ঘোষ, সপ্তর্ষি মৌলিক থেকে শুরু করে অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

মাত্র কিছু দিন আগের কথা। এক নাট্যদলের প্রযোজনায় ‘মহাভারত’ নাটকের শো চলছিল। অর্জুন, কর্ণ, দুর্যোধন নয়, আসনে বসে দর্শকেরা আচমকা দেখলেন, মঞ্চের উপর মহাভারতের যুদ্ধক্ষেত্রে দৌড়ে বেড়াচ্ছে ইঁদুর!

Advertisement

ঘটনাস্থল, কলকাতা শহরের নাট্যচর্চার পীঠস্থান ‘অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস’। প্রতীকী হয়তো, কিন্তু সেখানেও এখন এক মহাভারত চলছে। তার একটিই চরিত্র— দুঃশাসন! সেই চরিত্রের একটিই দোসর— দুঃসময়।

ইতিহাস। ঐতিহ্য। মায়া— সব ছাপিয়ে কখনও কখনও বড় হয়ে দাঁড়ায় দুঃসময়ই। যেমন এখনকার অ্যাকাডেমির প্রেক্ষাগৃহ। মঞ্চে উঠতেই ক্যাঁচকোঁচ শব্দ। নজর চলে যায় সিলিংয়ে। ভেঙে পড়বে না তো? বাতানুকুল যন্ত্রের গোলযোগে দরদর করে ঘামছেন অভিনেতারা। কাঠের চেয়ারে বসে ঘাম মুছতে মুছতে উসখুস করছেন দর্শকও। যখন চেয়ার ছেড়ে উঠছেন, হাঁটুতে ব্যথা। আর যা-ই হোক, আরামকেদারায় বসে আরামের বিনোদন তাঁরা পাচ্ছেন না। শিল্পীরাও গর্ত হয়ে যাওয়া স্টেজ, মাথার ঘাম এবং ইঁদুর সামলে যথাসম্ভব মনঃসংযোগ করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু আর কত দিন? বিষয়টা ক্রমশই ঝুঁকির পর্যায়ে চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলছেন শহরের তাবড় নাট্যব্যক্তিত্বরাই।

Advertisement

লকডাউনের পর আর্থিক ভাবে এখন অ্যাকাডেমি পঙ্গু। নিজস্ব চিত্র।

সকলেই চান সংস্কার হোক অ্যাকাডেমির। দরকারে কিছু দিন হল বন্ধ রাখা হোক। কিন্তু বার বার আবেদন জানিয়েও লাভ হয়নি। আনন্দবাজার অনলাইনকে তেমনই বললেন পঞ্চম বৈদিকের পরিচালক অর্পিতা ঘোষ, নান্দীকারের নিয়ন্তা সপ্তর্ষি মৌলিক থেকে শুরু করে অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য।

অর্পিতার বক্তব্য, ‘‘এত টাকা ভাড়া দিতে হচ্ছে! এ দিকে কোনও সুবিধা পাওয়া যায় না। হলের উপর দিকে তাকালে দেখা যাবে, জাল দিয়ে আটকানো। যে কোনও দিন ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই মঞ্চে অভিনয় চলছে। সংস্কারের নামগন্ধ নেই।’’ পরিচিত এই নাট্যব্যক্তিত্ব আরও বলছেন, ‘‘সরকারি হলগুলোর যেখানে ৪ হাজার টাকা ভাড়া, অ্যাকাডেমিতে এমনি দিনে ভাড়া সাড়ে ১২ হাজার টাকা। ছুটির দিন হলে সেটা প্রায় ১৯ হাজার টাকা ছুঁয়ে ফেলে। তার উপর লাইট, সাউন্ডের নিজস্ব ব্যবস্থা নেই। সব কিছুর জন্য আলাদা করে টাকা দিতে হয়। এত কিছুর পর হলটা তো ভাল হতে পারে! স্টেজের উপর পা ফেললে আওয়াজ হয়। ‘কারুবাসনা’ করলাম সম্প্রতি। এই নাটকে নৈঃশব্দ্য জরুরি। তাই প্রতিমুহূর্তে আমাদের সাবধানে পা ফেলতে হয়েছে। গ্রিনরুমেও একই অবস্থা। দেওয়াল থেকে চাঙড় খসে আসছে। এসি খারাপ। গরমের সময় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন থিয়েটার কর্মীরা। দর্শক বসে থাকতে পারেন না। এ দিকে অ্যাকাডেমি কর্মকর্তাদের কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই।’’

বস্তুত, অর্পিতা জানাচ্ছেন, তাঁরা বাণিজ্যিক অংশীদার হওয়া সত্ত্বেও ট্রাস্টি বোর্ডের সঙ্গে কোনও আলোচনায় আমন্ত্রণ পাননি। পরিচালকের দাবি, ‘‘দলগুলোর জন্যই মূল আয় অথচ তাদেরই পাত্তা না দেওয়া— এ কেমন কথা! প্রয়োজনে অ্যাকাডেমি বন্ধ রেখে সংস্কার করা হোক!’’

ইঁদুরের থেকেও বড় এবং গুরুতর সমস্যা রয়েছে, বলছেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য। নিজস্ব চিত্র।

একই বক্তব্য ‘চেতনা’ নাট্যদলের পরিচালক নীল ওরফে সুজন মুখোপাধ্যায়েরও। বললেন, ‘‘অ্যাকাডেমির সংস্কার আগে যেমন দক্ষতার সঙ্গে হত, সেটা ইদানীং খুবই অবহেলিত। গরমকালে এসি চলে না। হার্ট অ্যাটাক হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। আমার সঙ্গেই এক বার হাতাহাতি হয়ে গিয়েছিল শো-এর দিন। ডবল শো ছিল। এসি চালাতে ভুলেই গিয়েছিলেন সে বার। যিনি চালান, তিনি এসেওছিলেন দেরি করে। আমি প্রায় মারতে উদ্যত হই তাকে।’’ নীলের বক্তব্য, ‘‘আমি কিন্তু মূলত দর্শকের কথা ভেবেই ওই প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলাম সে দিন। টিকিট কেটে যাঁরা নাটক দেখতে আসছেন, তাঁরা কেন এই কষ্ট করবেন? আমাদের কথা নয় বাদ দিলাম।’’ অর্পিতার মতো নীলও চান, দরকারে এক মাস অ্যাকাডেমি বন্ধ থাকুক। সংস্কার শেষে আবার ঠিক ভাবে খুলুক। সে ক'দিন নাটক বন্ধ থাকলে থাকুক!

নাট্যদল ‘সংসৃতি’র পরিচালক দেবেশ চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘এটা একটা ইনফার্নো। যে কোনও দিন জ্বলে উঠতে পারে। দুই কমিটির লড়াইয়ে সব ছারখার। যার জন্য আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। এতগুলো করে ভাড়া দিয়েও এই হাল।’’ দেবেশেরও দাবি, এখনই অ্যাকাডেমি বন্ধ করে দেওয়া উচিত। সারিয়ে আবার শো শুরু করা উচিত।

একই বক্তব্য অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্যেরও। পর্দায় জনপ্রিয় মুখ হওয়া সত্ত্বেও থিয়েটার তাঁকে ছাড়া অসম্পূর্ণ। কিন্তু সমস্যা সেই মঞ্চে। অনির্বাণ বললেন, ‘‘আমি অ্যাকাডেমিতে অভিনয় করছি ২০১১ সাল থেকে। কিন্তু তার থেকেও বেশি সময় ধরে যাঁরা অভিনয় করছেন, তাঁরাও বলতে পারবেন। সব প্রেক্ষাগৃহে একটা সিকিউরিটি চেক বলে বিষয় থাকে। অ্যাকাডেমিতে সেটা হয় বলে আমি দেখিনি। নেতা-মন্ত্রী হোমরা-চোমরারা তো সেখানে যান না!। বিভিন্ন নাট্যদল আসে, আর আসেন দর্শক। যদি নেতা-মন্ত্রীরা আসতেন, নিশ্চয়ই সিকিউরিটি চেক হত।’’

অ্যাকাডেমির অন্দরে অব্যবস্থা। নিজস্ব চিত্র।

কিছু দিন আগেই অর্ণ মুখোপাধ্যায়ের দল ‘নটধা’র প্রযোজনায় ‘মহাভারত’-এর শো চলছিল। দর্শকের আসনে বসে অনেকেই দেখেছেন, স্টেজের উপর মহাভারতের যুদ্ধক্ষেত্রে দৌড়ে বেড়াচ্ছে ইঁদুর! তার পরেই এক দুর্ঘটনা। শো চলাকালীন আলো করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন আলোকশিল্পী। সে প্রসঙ্গ তুলতে অনির্বাণ বললেন, ‘‘ইঁদুরের থেকেও বড় এবং গুরুতর সমস্যা রয়েছে। আমার মনে হচ্ছে, যে কোনও দিন ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে যাবে। উপরের সিলিংয়ে তাকালেই দেখা যায়, জাল দিয়ে ঘেরা। টুকটাক চাঙড় খসতেই থাকছে। তাই এই ব্যবস্থা। কিছু দিন আগে পঞ্চম বৈদিকের ফেস্টিভ্যালের সময় এক আলোকশিল্পী পড়ে গিয়ে প্রায় মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচেছেন। স্টেজের এসি কাজ করে না বললেই চলে। অভিনেতারা তো ঘামেনই, হাউসফুল অ্যাকাডেমিতে শো হলে দর্শকেরও দমবন্ধ হয়ে আসে।’’

অনির্বাণের দাবি, বিরাট নিন্দামন্দ কেউ করেন না। কারণ, সেটা নাটক দেখার ঐতিহ্যের মধ্যে নেই। একটা সমীহ কাজ করে। তাঁর কথায়, ‘‘সমগ্র থিয়েটারের স্বার্থে আমি বলতে চাই, কিছু একটা ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। এই ভাবে চলতে থাকলে আমরা বড় বিপদের দিকে এগিয়ে চলেছি।’’

‘নান্দীকার’এর নতুন নাটক ‘এক থেকে বারো’ গরমকালেই বেশ কয়েক বার মঞ্চস্থ হয়েছে। অ্যাকাডেমিতে শো পড়তেই প্রাণ ওষ্ঠাগত শিল্পীদের। সেই অভিজ্ঞতা স্মরণে রেখে নাট্যদলের সপ্তর্ষি বললেন, ‘‘আমরা যারা কলকাতায় থিয়েটার করি এবং যারা বাইরে থেকে আসতে চায়, সবার কাছেই অ্যাকাডেমি ভালবাসার মঞ্চ। কিন্তু ভাড়াটা অনেক। থিয়েটারের দলের পক্ষে সেটা দেওয়া কঠিন। যখন শো হচ্ছে, তখন আমরা ৩০০-৪০০ টাকার টিকিট রাখছি। দর্শক হিসেবে আমার মনে হয়, একটা ৪০০টাকার টিকিট মানে পিভিআর বা আইনক্সে গেলে গদিওয়ালা সিট পাচ্ছি। চিলড্ এসি পাচ্ছি। তা হলে এক জন দর্শক অ্যাক্যাডেমিতে নাটক দেখতে আসবেন কেন? খুব ভাল নাটক হচ্ছে? বা তিনি অসম্ভব নাট্যপ্রেমী বলে? আমার তা মনে হয় না। নাটক বা সিনেমা দেখা মানে কিন্তু আরাম করতে আসাই। বিনোদন। সেই জায়গা থেকে সিট ভাল হওয়া উচিত। বাথরুমের ফ্ল্যাশটা কাজ করা উচিত।’’ সপ্তর্ষি জানান, এমনও ভাবা হয়েছিল যে, সব দল থেকে টাকা তুলে সংস্কারের ব্যবস্থা যদি করা যায়। কিন্তু রাজনৈতিক ঝামেলায় তা সম্ভব হয়নি।

যে ‘ঝামেলা’র প্রসঙ্গ সরাসরি বললেন ‘স্বপ্নসন্ধানী’র পরিচালক কৌশিক সেন। তাঁর কথায়, ‘‘অ্যাকাডেমির ম্যানেজমেন্ট পুরো ঘাঁটা জায়গায় চলে গিয়েছে। ট্রাস্টি বোর্ডের এক প্রতিনিধির সঙ্গে আমি যেমন কথা বলেছি, তেমনই কথা বলেছি কর্মচারীদের সঙ্গেও। এক পক্ষ দোষ চাপাচ্ছে অন্য পক্ষের ঘাড়ে। সেই প্রতিনিধি অবশ্য অস্বীকার করছেন না যে, কর্মচারীদের দাবিদাওয়া রয়েছে। কিন্তু এটাও ঠিক যে, কর্মচারীরা সঠিক ভাবে কাজ করেন না ম্যানেজমেন্টের উপর রাগ করে। এ দিকে, ট্রাস্টি বোর্ডে যাঁরা আছেন, তাঁরাও কোনও উদ্যোগ নিচ্ছেন না। রক্ষণাবেক্ষণ বা টাকা আনার জন্য তাঁরা কিছু করছেন না। আসলে তাঁদের বয়স হয়ে গিয়েছে। তাঁরা নিজেরা এসে দেখে কোনও দায়িত্ব নেবেন না। পুরোটা ওই প্রতিনিধির উপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তিনি সব দিক দিয়েই খুব খারাপ অবস্থায় আছেন।’’

কৌশিকের দাবি, হয় সরকার অ্যাকাডেমির দায়িত্ব নিক। নয়তো কোনও বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হোক যারা সাজিয়েগুছিয়ে মর্যাদা দিয়ে এর হাল ফেরাবে। কৌশিকের দাবি, প্রেক্ষাগৃহ মোটামুটি ঠান্ডা হয়ে গেলে ইদানীং নাটক শেষের আগেই চুপিসারে এসি বন্ধ করে দেওয়া হয়। নইলে টানা যাবে না।

৬০ বছর ধরে অ্যাকাডেমির সার্বিক দেখাশোনার দায়িত্বে আছেন কল্লোল বসু। ট্রাস্টি বোর্ডের প্রতিনিধি তিনি। তাঁর সঙ্গেই কথা হয়েছিল অর্পিতা, নীল, দেবেশ, কৌশিক-সহ অন্যান্য নাট্যব্যক্তিত্বদের। আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল তাঁর সঙ্গে। কল্লোল জানালেন, তিনি সত্যিই ‘নিরুপায়’। আসল ক্ষমতা ট্রাস্টি বোর্ডের হাতে। তিনি শুধু প্রতি দিনের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে। কল্লোলের কথায়, ‘‘প্রচণ্ড ঝুঁকি রয়েছে আমি নিজেও জানি। দেওয়াল থেকে চাঙড় খসে পড়ছে। ছাদ থেকে জল পড়ছে। দুটো এসির মধ্যে একটা খারাপ। বন্ধ করে সারাতে ছ’মাস লাগবে। যাঁরা শো করছেন এবং যাঁরা দেখছেন, সবারই যে কোনও সময় বিপদ হতে পারে। কিন্তু উপায় কী! বহু বছর আগের যে অবস্থা ছিল, সেটা আর নেই।’’

কল্লোল আরও জানাচ্ছেন, লকডাউনের পর আর্থিক ভাবে এখন অ্যাকাডেমি পঙ্গু। গোটা বিল্ডিং সারাতে হবে। অডিটোরিয়াম, গ্যালারি চললে যে টাকা ওঠে, সেটা কর্মচারীদের বেতন দিতেই চলে যায়। সংস্কার করার খরচ বহন করার মতো অবস্থা নেই। সব কিছুই তিনি দেখছেন। বুঝছেন। কিন্তু নিজের সামর্থ্য নেই। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘আমি মাঝখানে পড়ে গিয়েছি। সবাই আমাকে বলছেন। কিন্তু আমার কী-ই বা ক্ষমতা! শিল্পীদের অভিযোগ পেয়ে ট্রাস্টি বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। ১০০ বার চিঠি দিয়েছি। কিন্তু কাজ হয়নি। তারা আসেও না, দেখেও না। তাদের বক্তব্য— টাকা নেই। এ ভাবে যত দিন চলে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রসূন মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার অভিযোগ শুনেই প্রথমে পাল্টা বলেন, ‘‘এ সব কে বলেছে? সব মিথ্যে কথা!’’ তবে তার পরে তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগগুলো খুবই অলীক বলে মনে হচ্ছে। আমার সঙ্গে তো যোগাযোগ রয়েছে বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিদের। তাঁরা তো কেউ অভিযোগ করেননি! আগে একটা মিটিংয়ে যা সমস্যার কথা উঠেছিল, সেগুলো ঠিক করা হয়েছে। বাকি সব বাজে কথা।’’ একটু থেমে, ‘‘তবে হ্যাঁ, এসির সমস্যা আছে ঠিকই। কিন্তু চলছে না এমন তো নয়! ছাদ ভেঙে পড়ার সম্ভাবনাও একেবারেই নেই। সদ্য সারানো হয়েছে।’’

নাট্যকর্মীরা জানাচ্ছেন, জাল দিয়ে নাকি ঘিরে রাখা হয়েছে প্রেক্ষাগৃহের ছাদ! তাকেই কি ‘সারানো’ বলছেন প্রসূন? তবে তিনি সরাসরিই বললেন, ‘‘এখনই সবটা সারানো প্রচুর টাকার ব্যাপার। অ্যাকাডেমিতে এই মুহূর্তে ফান্ডের সমস্যা রয়েছে। গত দু’বছর লকডাউনে কোনও আয় হয়নি। উল্টে কর্মচারীদের বেতন দিতে হয়েছে। তা ছাড়াও অনেক নিয়মিত খরচ রয়েছে। সব মিলিয়ে এখন তহবিল একেবারে শূন্য। কেউ কোনও অনুদান দেন না। হল ভাড়া, আর্ট গ্যালারি আর কনফারেন্স থেকে যেটুকু টাকা ওঠে। সব তুলে নেওয়া হয়েছে এর মধ্যে। সঞ্চয় শূন্য।’’ তবে তাঁর আশ্বাস, অর্থ এলেই ধীরে ধীরে সংস্কার করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন