Abhishek Banerjee

‘নেগেটিভ চরিত্রে নিজেকে মাচো মনে হয়’

কমেডির পরে নেগেটিভ চরিত্রে নজর কাড়ছেন কাস্টিং ডিরেক্টর-অভিনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়‘পাতাল লোক’-এর অন্যতম কাস্টিং ডিরেক্টরও অভিষেক।

Advertisement

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০২০ ০০:২৪
Share:

অভিষেক

তাঁর টুইটার হ্যান্ডলের নাম ‘অভিষেক ব্যানার্জি হাতোড়া ত্যাগী’। অমর কৌশিক পরিচালিত ‘স্ত্রী’ ছবির পরে যে সংখ্যক দর্শক তাঁকে চিনেছিলেন, ‘পাতাল লোক’ ওয়েব সিরিজ়ের দৌলতে সেই সংখ্যা এক লাফে বেড়ে গিয়েছে। ‘‘চরিত্র যখন অভিনেতার চেয়েও বড় হয়ে যায়, তার চেয়ে বেশি খুশি আর কীসে হবে! হাতোড়া ত্যাগীর চরিত্রটা ছিল আমার ‘বেবি’। এত জনপ্রিয়তা পেয়ে খুবই ভাল লাগছে,’’ মুম্বই থেকে ফোনে বলছিলেন অভিষেক।

Advertisement

‘পাতাল লোক’-এর অন্যতম কাস্টিং ডিরেক্টরও অভিষেক। তবে তিনি প্রথমে করতে চেয়েছিলেন আনসারির চরিত্রটি। ‘‘এই জন্য বলে, অভিনেতাদের বুদ্ধি কম হয়। পরিচালকদের কথা শুনতে হয়। এই শোয়ের স্ক্রিপ্ট রাইটার সুদীপ শর্মা হাতোড়া ত্যাগীর চরিত্রটির জন্য আমাকে অডিশন দিতে বলেন। তবে পরিচালক ভেদে দৃষ্টিভঙ্গিও বদলায়। অমর কৌশিকের ‘স্ত্রী’, ‘বালা’ বা ‘ড্রিমগার্ল’-এর মতো ছবি করার সময়ে বারবার বলা হত, আমার মুখ কতটা কোয়ার্কি, লোকে এই মুখ দেখে শুধু হাসতেই পারে...’’ বলছিলেন অভিষেক। তবে তাঁর কাছে হাতোড়া ত্যাগী ভায়োলেন্সের প্রতীক নয়। বরং চরিত্রটা তাঁর কাছে সিস্টেমের প্রতি হতাশা ও রাগের পার্সনিফিকেশন। সুজয় ঘোষের ‘টাইপরাইটার’ ওয়েব সিরিজ়েও ডার্ক চরিত্রে দেখা গিয়েছিল তাঁকে।

কমেডি এবং ডার্ক চরিত্রে সমান্তরাল ভাবে নজর কাড়ছেন অভিষেক। তাঁর পছন্দের জঁর কোনটা? ‘‘বাস্তব জীবনেও আমি হাসিখুশি মেজাজের। তাই কমেডি চরিত্র করলে আলাদা কিছু মনে হয় না। নেগেটিভ চরিত্রে নিজেকে মাচো মনে হয়। যে বাঙালি ছেলে সব সময়ে মাঙ্কি ক্যাপ পরে ঘুরেছে, মা-বাবার কথা মতো ঘরের বাইরে যায়নি, সে যখন এমন চরিত্র করে, সেই নেশা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। ওটা আসলে অভিষেক নয়,’’ তাঁর কণ্ঠে ফুটে উঠল সেই অনির্বচনীয় ম্যাজিক।

Advertisement

আরও পড়ুন: উদারহস্ত অক্ষয়

আগামিকাল ওয়েব প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পাচ্ছে বাংলা ওয়েব সিরিজ় ‘কালী’র সিজ়ন টু। এই সিরিজ় দিয়ে বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে ডেবিউ করছেন অভিষেক। ‘‘ত্যাগীর চেয়ে জিন লিয়াংয়ের চরিত্রটি অনেক আলাদা। ত্যাগী কথাই বলে না, আর জিন এত বেশি কথা বলে যে, আপনি বুঝতে পারবেন না, ওর পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে,’’ বললেন তিনি।

দশ-এগারো বছর আগে অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মুম্বই এসেছিলেন অভিষেক। কিন্তু এসে দেখলেন, স্ট্রাগলিং অভিনেতাদের খুব কষ্ট। অডিশন দেওয়ার প্রক্রিয়াটাও খুব দীর্ঘমেয়াদী। ‘‘বাবার কাছে টাকা চাইতে পারব না। কোনও চাকরি করব কি না ভাবছিলাম। তখনই গৌতম কিষনচন্দানি নামে এক কাস্টিং ডিরেক্টরের সঙ্গে কাজ করতে শুরু করি। উনি ‘দেব ডি’, ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’র মতো ছবির কাস্টিং করেছেন,’’ শুরুর দিনের কথা রোমন্থন করছিলেন অভিষেক। তবে এই কাস্টিং ডিরেক্টর হওয়ার সুবাদেই অভিনয়ের প্রাথমিক পাঠ তাঁর সারা হয়ে গিয়েছিল। ‘‘কাস্টিং করতে গিয়ে এত ধরনের চরিত্র সাজতে হয়, অভিনেতাদের সঙ্গে এত প্র্যাকটিস করতে হয় যে, অভিনয় শেখা হয়ে যায়।’’

‘দ্য ডার্টি পিকচার’, ‘টয়লেট: এক প্রেম কথা’, ‘কলঙ্ক’-এর মতো ছবির কাস্টিং করেছেন অভিষেক। কাস্টিং ডিরেক্টর থেকে অভিনেতা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পরে চারপাশের মানুষের অ্যাটিটিউড কি বদলেছে? ‘‘আমার একটা ভয় ছিল। লোকে আমাকে গ্রহণ করবে কি না, ভাল লাগবে কি না... সেটা কেটে গিয়েছে। কনফিডেন্স আবার অনেক সময়ে ওভার-কনফিডেন্সও হয়ে যায়। তবে এই স্পেস উপভোগ করছি,’’ জবাব তাঁর।

অভিষেককে এর পরে দেখা যাবে সাতরাম রামানির ‘হেলমেট’ ও উমেশ শুক্লর ‘আঁখ মিচোলি’ ছবিতে। দু’টিই কমেডি এবং অঁসম্বল কাস্ট নিয়ে। তার পরে আসবে কর্ণ জোহরের প্রযোজনায় ‘দোস্তানা টু’, যেখানে অভিনয় করেছেন তিনি।

লকডাউনে অভিষেক বেশ বোরড হচ্ছেন। ‘‘আমার কাছে লকডাউনই পাতাল লোক মনে হচ্ছিল। রান্না করতে খুব ভালবাসি। আলুভাজা, ডাল, কষা মাংস রাঁধছি। বৌও খুব খুশি,’’ হাসতে হাসতেই বললেন অভিষেক।

আরও পড়ুন: দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর মারা গেলেন সুরকার প্রীতমের বাবা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন