অপরাজিতা আঢ্য, ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়, সুদীপা চট্টোপাধ্যায় নিয়ম মানেন? গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
শনিবার শনিদেবের বার। এই দেবতাকে বাঙালি শুধু ভয়ই পায় না, রীতিমতো মেনে চলার চেষ্টা করে। কথিত আছে, এই দিনে নিরামিষ খেলে নাকি অনেক সমস্যা মিটে যায়। দেবতার কথিত আছে, এই দিনে নিরামিষ খেলে নাকি অনেক সমস্যা মিটে যায়। দেবতার কোপ থেকেও মুক্তিলাভ সম্ভব। সত্যিই কি নিরামিষ খেলে এ দিন শনিদেবের রোষ থেকে নিস্তার মেলে?
বাংলা বিনোদন দুনিয়ায় এমন অনেক অভিনেতা আছেন যাঁরা সংস্কারী। ঈশ্বরে বিশ্বাস, ভক্তি আছে তাঁদের। কিছু নিয়মও তাই মেনে চলার চেষ্টা করেন এঁরা। তালিকায় অপরাজিতা আঢ্য, ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়, সুদীপা চট্টোপাধ্যায়। সপ্তাহের সাত দিন ক্যামেরার সামনে থেকেও এঁরা শনিবার নিরামিষ খান। দেশের বাইরে থাকলে শনিবার কী করেন তাঁরা? জানতে যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার ডট কম।
অপরাজিতা অন্ধ ঈশ্বরবিশ্বাসী নন। তাঁর যুক্তি, “শনিবার চন্দ্রের আকর্ষণ পৃথিবীর উপরে সবচেয়ে বেশি। এই দিন তাই জোয়ার-ভাটার টান প্রবল। আমাদের শরীরেও জলের আধিক্য বেশি। কথিত আছে, এ দিন তাই সহজপাচ্য খাবার খেলে শরীর সুস্থ থাকে।” অন্য দিকে, মাছ, মাংস, ডিম হজম করতে কষ্ট হয়। সেই নিয়ম মেনেই তিনি শনিবার নিরামিষ খান। শহর বা রাজ্যের বাইরে থাকলেও মেনে চলার চেষ্টা করেন। তাঁর কথায়, “ছোট থেকে দেখেছি, আমাদের বাড়িতে শনিবার নিরামিষ খাওয়ার চল। শ্বশুরবাড়িতেও তাই-ই। ফলে, আমার সমস্যা হয় না।” অপরাজিতা শুধুই শনিবার নয়, আরও তিন দিন নিরামিষ খান। সোম, মঙ্গল, শুক্রবারেও আমিষ চলে না তাঁর।
শনিবারে নিরামিষ খান ভাস্বরও। উপকার পেয়েছেন? “অবশ্যই”, দাবি অভিনেতার। তাঁর কথায়, “আমার শনিবার জন্ম। জন্মসংখ্যা ৮, এই সংখ্যা শনির কারক। তার উপরে সদ্য সাড়ে সাতি দশা কাটল। শুনেছি, শনির সাড়ে সাতি দশায় সংযত হয়ে চললে, ভাল কাজ করলে শনিদেব ভাল ফল দেন। আমি এই আচরণ মেনে চলার চেষ্টা করেছি। পাশাপাশি, নিরামিষ খেয়েছি।” জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, কর্মফলের দেবতা শনি। যিনি যেমন কর্ম করবেন শনিদেব তাঁকে সে রকমই ফল দেবেন, বিশ্বাস অভিনেতার। তাই দেবতাকে সন্তুষ্ট করতে খাওয়া দাওয়ার পাশাপাশি আরও একটি কাজ করেন তিনি। এ দিন কালো পোশাক পরেন না। তাঁর কথায়, “শনিবার কালো পোশাক পরলে, কালো গাড়ি কিনলে বা তাতে চড়ে যাতায়াত করলে অযাচিত সমস্যা হতে পারে। এটি কিন্তু পরীক্ষিত সত্য।”
বাড়িতে জমজমাট দুর্গাপুজো। দেবী দুর্গা ছাড়া আর কি কাউকে মানেন সুদীপা?
অভিনেত্রী জানালেন, শনিদেবকে তুষ্ট করতে নয়, হনুমানজির বার হিসাবে তিনি শনিবার নিরামিষ খান। “সাধারণত মঙ্গলবার হনুমানজির বার হিসাবে চিহ্নিত। আমি শনিবারটাও মানি। এ দিন নিরামিষ খাই। শরীরে-মনে শান্তি পাই।” দেবী দুর্গার প্রতি প্রবল ভক্তি থাকলেও সুদীপার জীবনে অদ্ভুত ভাবে হনুমানজি জুড়ে গিয়েছেন। “আমি, আমার ছেলে স্বপ্নে হনুমানজিকে দেখেছি। তাই পরিবারের সকলে এ দিন নিরামিষ খাই। হনুমান চলিশা পড়ি।” আর মন্দিরে গিয়ে পুজো দেন। তবে ‘বিদেশে নিয়ম নাস্তি’। তাই দেশের নিয়ম মানতে পারেন না।
শুধুই ঈশ্বরভক্তি নয়, নিজেকে সুস্থ-সুন্দর রাখাটাও সমান জরুরি অভিনেত্রী-সঞ্চালিকার কাছে। সুদীপা দেখেছেন, যাঁরা নির্দিষ্ট বয়সের পর নিরামিষাশী তাঁরা অনেক দিন পর্যন্ত সুন্দর থাকেন। তাঁর নিরামিষ খাওয়ার পিছনে এই যুক্তিও কাজ করে।