রুদ্রনীল ঘোষের চোখে দেবসেনাপতি কার্তিক। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
কার্তিক ঠাকুর, সুদর্শন, শৌখিন এক পুরুষ। সরু গোঁফ, কোঁকড়া চুল, পেশিবহুল শরীর। ঊর্ধ্বাঙ্গ অনাবৃত। উত্তরীয়ের ফাঁকে চওড়া বুকের উঁকিঝুঁকি। সরু কোমরে ধুতির ফাঁস। এমন চেহারার কোনও পুরুষ এসে দাঁড়ালে মেয়েরা তো এমনিই ‘মরে’ যাবে!
আমার অবশ্য এ রকম চেহারা নয়। চাপা গায়ের রং, ছোটখাটো চেহারা। অভিনয়ে আসার পর যা-ও বা কিছু মেয়ের নজরে পড়তাম, সব মাটি হত সুদর্শন নায়কদের ভিড়ে। ধরুন, কোনও অনুষ্ঠানে বিনোদনদুনিয়ার সমস্ত সুপুরুষ জড়ো হয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁদের পাশে আমি টিমটিম করছি! তাই বুঝি কোনও রূপসী ‘কার্তিক’ বলে সম্বোধনই করলেন না! এই প্রসঙ্গে বলি, কার্তিকের মতো চেহারা ছিল অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের। লম্বা-চওড়া সুঠাম চেহারা। গায়ের রং টকটক করছে। কোঁকড়া চুল ঘাড় পর্যন্ত, সরু গোঁফ। ‘কার্তিক ঠাকুর’-এর সমস্ত গুণ ওই অভিনেতার ছিল। তাঁকে দেখতে মেয়েদের ভিড়ও হত খুব।
কার্তিকের মতো দেখতে নই বলে কোনও আফসোস নেই। তার কারণ আছে। আমার মতে, কার্তিকের শুধু রূপ নয়, গুণ-ও ছিল প্রচুর। উনি যে ‘দেবসেনাপতি’, রূপের আড়ালে এই গুণটাই চাপা পড়ে গিয়েছে। অর্থাৎ, কার্তিকের পরিচালনা করার ক্ষমতা রয়েছে। তাই তিনি এই পদাধিকারী। একই সঙ্গে ওঁর অস্ত্র তির-ধনুক। দৃষ্টিশক্তি তীক্ষ্ণ না হলে এই অস্ত্র চালানো যায় না। আমি কার্তিকের এই গুণটি পেতে চাই। কোনও দিন যেন লক্ষ্যভ্রষ্ট না হই। যেন এ ভাবেই নেতৃত্ব দিয়ে সমস্ত সমস্যার মোকাবিলা করতে পারি।
রইল বাকি দেবতার চিরকুমারত্ব। অনেকেই হয়তো জানেন না, পুরাণমতে দেবী ষষ্ঠীকে বিয়ে করেছিলেন কার্তিক। অর্থাৎ, তিনি চিরকুমার নন! আমিও কোনও দিন টুক করে এ ভাবেই কাউকে বিয়ে করে ‘আইবুড়ো’ নাম ঘোচাব।