Raktakarabi theatre

এই প্রথম বাংলা নাটকের নির্দেশনায় চৈতি, ‘রক্তকরবী’কে কেন ফিরিয়ে আনছেন তিনি?

অভিনয়ের পাশাপাশি চৈতি ঘোষালের নির্দেশনায় মঞ্চে ফিরছে ‘রক্তকরবী’। রয়েছে একাধিক চমক।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৫ ০৮:৫৬
Share:

‘রক্তকরবী’ নাটকের সঙ্গীতের রেকর্ডিংয়ের ফাঁকে (বাঁ দিকে) চৈতি ঘোষাল এবং দেবজ্যোতি মিশ্র। ছবি: সংগৃহীত।

তৃপ্তি মিত্রের তত্ত্বাবধানে দশম শ্রেণির ছাত্রীটির সঙ্গে মঞ্চে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘রক্তকরবী’র যে যোগসূত্র তৈরি হয়, তা আজও অটুট। সেই ভাবনা থেকেই তাঁর প্রথম বাংলা নির্দেশনার জন্য এই নাটকের কাছেই ফিরে গিয়েছেন অভিনেত্রী চৈতি ঘোষাল। নাটকের সঙ্গীতের দায়িত্বে দেবজ্যোতি মিশ্র। দুই শিল্পী নেপথ্য ভাবনা ভাগ করে নিলেন আনন্দবাজার ডট কমের সঙ্গে।

Advertisement

অতীতে পরিচালক-নির্দেশক গৌতম হালদারের ‘রক্তকরবী’তে নন্দিনীর চরিত্রে অভিনয় করতেন চৈতি। প্রায় দুশোর উপরে সফল শো। ২০২৩ সালে গৌতমের প্রয়াণের পরে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতেই নাটকটি মঞ্চস্থ করেন চৈতি। এ বারে সম্পাদনা এবং নির্দেশনার দায়িত্ব নিজের কাঁধেই তুলে নিয়েছেন তিনি। এর আগে হিন্দি নাটকের নির্দেশনার কাজ করেছেন চৈতি। বাংলার ক্ষেত্রে এই নাটককেই বেছে নিলেন কেন? চৈতি বললেন, ‘‘কারণ নাটকটি এখনও প্রাসঙ্গিক এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আমার মনে হয়, আগামী একশো বছর ধরেও ‘রক্তকরবী’ প্রাসঙ্গিক থাকবে।’’

‘রক্তকরবী’ নাটকের মঞ্চসজ্জা থেকে শুরু করে সঙ্গীত এবং নন্দিনীর গয়না নিজের হাতে তৈরি করতেন গৌতম। তবে চৈতি জানালেন, ‘রক্তকরবী’র ক্ষেত্রে গৌতমকে তিনি অনুসরণ করছেন না। নির্দেশক হিসেবে অনেক কিছুই বদলেছেন তিনি। চৈতির কথায়, ‘‘নাটকের সম্পাদনা থেকে শুরু করে প্রথম দৃশ্য, সবের মধ্যেই নতুনত্ব থাকছে। গান, অভিনেতা, মঞ্চসজ্জা, আলো, পোশাক পরিকল্পনা— প্রচুর পরিবর্তন করেছি।’’ তবে গৌতমের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই এই নাটকের তাঁর ব্যবহৃত কিছু প্রপ্‌স এবং সঙ্গীতকে রাখতে চেয়েছিলেন চৈতি। কিন্তু জানালেন, কপিরাইট সংক্রান্ত কারণে অনুমোদন পাননি। চৈতির কথায়, ‘‘দাদা যে গয়নাগুলো আমাকে তৈরি করে দেন, সেগুলো আমার কাছেই যত্ন করে রেখে দিয়েছি।’’

Advertisement

‘রক্তকরবী’র মহড়ায় চৈতি ঘোষাল। ছবি: সংগৃহীত।

এই নাটক নিয়ে উচ্ছ্বাস ধরা পড়ল দেবজ্যোতির কণ্ঠেও। বলছিলেন, ‘‘চৈতির তরফে প্রস্তাব আসার পরেই বুঝতে পারি, এটা গুরুদায়িত্ব। কারণ, এই নাটকটার সঙ্গে ওর দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক।’’ তবে ‘রক্তকরবী’ দেবজ্যোতির কাছে ‘বিশ্বনাগরিক’ রবীন্দ্রনাথের প্রতীক। তাঁর কথায়, ‘‘এই নাটকের রাজা বা নন্দিনীর অনুষঙ্গেই আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে ‘তাসের দেশ’, ‘মুক্তধারা’ বা কখনও বা ‘বিসর্জন’।’’

এই নাটকের সঙ্গীতকেও অন্য ভাবে ভেবেছেন দেবজ্যোতি। বললেন, ‘‘লোভ, ঘৃণা, দাসত্ব এবং সর্বোপরি বর্তমান যুদ্ধবিধ্বস্ত পৃথিবীর নিরিখে ‘রক্তকরবী’র সঙ্গীতকে ভাবার চেষ্টা করেছি। অন্য ধরনের বহু বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করেছি।’’ এরই সঙ্গে তিনি যোগ করলেন, ‘‘এই মুহূর্তে আমরা প্রত্যেকেই তো আগুনের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছি! সেখানে মনে হয়, ‘রক্তকরবী’ একটা বিশ্ব-আবেদন তৈরি করে।’’

নাটকে রাজার চরিত্রে রয়েছেন দেবেশ রায়চৌধুরী। অন্যান্য চরিত্রে রয়েছেন জীবন সাহা, পার্থ মুখোপাধ্যায়, পবিত্র কুমার প্রমুখ। মঞ্চ সজ্জা ও পোশাক পরিকল্পনায় দেবব্রত মাইতি এবং নৃত্য পরিকল্পনায় সুকল্যাণ ভট্টাচার্য। প্রায় দু’মাস ধরে নাটকের মহড়ায় ব্যস্ত শিল্পীরা। আগামী ৫ এপ্রিল অ্যাকাডেমিতে ‘রক্তকরবী’র প্রথম শো।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement