চলে গেলেন কণিকা মজুমদার

১৯৩৫ সালে ময়মনসিংহের এক ব্রাহ্ম পরিবারে কণিকার জন্ম। নীতিন বসু তাঁকে প্রথম ছবির প্রস্তাব দেন। তবে পরিবারের অমত থাকায় তিনি তা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। ‘তিন কন্যা’র প্রস্তাব পাওয়ার আগেই ‘পুনশ্চ’তে কাজ শুরু করেন। তবে তাঁর প্রথম মুক্তি পাওয়া ছবি ‘তিন কন্যা’।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:০০
Share:

‘মণিহারা’য় কণিকা

অভিজাত বাড়ির মেয়ে, শিক্ষিতা, অসম্ভব ব্যক্তিত্বময়ী। কণিকা মজুমদারের এই বৈশিষ্ট্যগুলি নজর কেড়েছিল সত্যজিৎ রায়ের। এ হেন অভিনেত্রী শেষ জীবন কাটিয়েছেন লোকচক্ষুর অন্তরালে। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি মারা যান। বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। শেষের বেশ কয়েক বছর তিনি ছিলেন নিউ আলিপুরের একটি বৃদ্ধাশ্রমে। সেখানে থাকার সিদ্ধান্ত নাকি ছিল তাঁর নিজস্ব। একমাত্র মেয়ে বহু বছর প্রবাসে।

Advertisement

১৯৩৫ সালে ময়মনসিংহের এক ব্রাহ্ম পরিবারে কণিকার জন্ম। নীতিন বসু তাঁকে প্রথম ছবির প্রস্তাব দেন। তবে পরিবারের অমত থাকায় তিনি তা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। ‘তিন কন্যা’র প্রস্তাব পাওয়ার আগেই ‘পুনশ্চ’তে কাজ শুরু করেন। তবে তাঁর প্রথম মুক্তি পাওয়া ছবি ‘তিন কন্যা’।

সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘মণিহারা’য় মণিমালিকার চরিত্রে তাঁর অভিনয় বাঙালি ভুলবে না। ভুলবেন না সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ও। তাঁর কথায়, ‘মানিকদার ‘মণিহারা’য় ওঁর কাজ ভুলব না। সপ্রতিভ অভিনেত্রী। আর খুব ফোটোজেনিক ছিলেন।’’ অসিত সেনের ‘আগুন’-এ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের বিপরীতে কাজ করেছেন কণিকাদেবী। দীনেন গুপ্তের ‘বসন্ত বিলাপ’-এ সৌমিত্রের বৌদির চরিত্রেও দর্শক তাঁকে মনে রেখেছেন। অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়ের সঙ্গেও কাজ করেছিলেন। কণিকার মৃত্যুসংবাদ শুনে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘উনি স্কুলেও পড়িয়েছেন। ‘আগুন’ ছবিতে ওঁর সঙ্গে কাজ করেছি। মেকআপ নিয়ে বেশ খুঁতখুঁতে ছিলেন।’’

Advertisement

উত্তমকুমারের বড় প্রিয় অভিনেত্রী ছিলেন তিনি। মহানায়কের সঙ্গে ‘সোনার খাঁচা’, ‘হার মানা হার’, ‘দুটি মন’, ‘চাঁদের কাছাকাছি’ ছবিতে তাঁকে দেখা গিয়েছে। ‘নবরাগ’-এ তাঁর লিপে সুমিত্রা সেনের রবীন্দ্রসঙ্গীতও দাগ কেটেছিল। বাণিজ্যিক ছবির পাশাপাশি মৃণাল সেনের ‘পুনশ্চ’তেও অভিনয় করেছিলেন কণিকা। এ ছাড়া মঞ্চে ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’, ‘বেগম মেরি বিশ্বাস’-এ অভিনয় করেছেন। শম্ভু মিত্রের সঙ্গে বেতারেও ‘রক্তকরবী’ নাটক করেছেন তিনি। নাচ, গান, ছবি আঁকা... সবেতেই প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছিলেন। সেলুলয়েডের সঙ্গে দূরত্ব এতটাই বেড়েছিল যে, মৃত্যুতেও তিনি রইলেন অন্তরালে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন