আবীর চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে পায়েল সরকার। ছবি: ফেসবুক।
অনেক দিন আবীরের সঙ্গে কাজ করিনি। ও কি অনেক পাল্টে গিয়েছে? কথাও হয় না অনেক দিন। তবে বাহ্যিক দিক থেকে আবীর প্রায় একই থেকে গিয়েছে। এটা কিন্তু ঈশ্বরের আশীর্বাদ।
আচ্ছা, শরীরচর্চা, ডায়েট মেনে খাওয়াদাওয়া— এ সব করছে নাকি? নইলে এত সুপুরুষ কী করে! এই নিয়ে আমার কিন্তু তীব্র কৌতূহল। কারণ, আগে যখন কাজ করেছি, তখন ওর এ সব ছিল না।
আমরা একাধিক ছবিতে কাজ করেছি। আবীর শান্তশিষ্ট, নিপাট, পত্নীনিষ্ঠ ভদ্রলোক। অন্তত আমি ওকে এমন কিচ্ছু করতে দেখিনি, যার জন্য ওকে ‘দুষ্টু’ বলা যায়। সহ-অভিনেতা হিসাবে খুব আরামদায়ক। দৃশ্য যাতে ভাল হয় তার জন্য সব রকম সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। এই একজন নায়ককে দেখেছি যে, শুটিং ফুরোলেই বাড়ির দিকে ছোটে। আমরা ঠিক উল্টো। কাজের অজুহাতে যত ক্ষণ পারি বাড়ির বাইরে থাকার চেষ্টা করি!
আবীর ঝগড়াটাও ঠিকমতো পারে না! ওর সঙ্গে তাই কারও ঝগড়াও হয় না। উল্টে কেউ ঝগড়া করলে মধ্যস্থতা করতে চলে আসে। মিটমাটের চেষ্টা করে। তার মানে কিন্তু ওকে খুব নরম স্বভাবের ভাববেন না। মুখের উপর যা বলার, সেটা স্পষ্ট বলে দিতে পারে। অনেক কথা বলার আগে আমরা দু’বার ভাবি। অনেক সময় দ্বিধায় ভুগি। আবীর মুখের উপরে সেই কথা বলে দেয়। তবে অবশ্যই ভদ্রভাবে।
তার মানে কি আবীর ত্রুটিহীন? মোটেই না। ওর মস্ত ত্রুটি, সীমাহীন কিপটেমি! আমি একটি বহুতলে ফ্ল্যাট কিনছি। আবীরের যেন বুকে ব্যথা করছে! সমানে বলেই চলেছে, “কেন কিনছিস? কী দরকার? শুধু শুধু কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচা করছিস!” মানে, আমার টাকা, আমি খরচ করছি। আবীরের তাতেও আপত্তি! পারলে আমার হয়ে ও একটা টাকাও বাঁচিয়ে দেয়, এ রকম। ওর যাঁরা খুব কাছের, তাঁরা এই অভ্যাসের কথা জানেন।
শুধু অন্যের নয়, নিজের টাকাও সমান ভাবে বাঁচানোর চেষ্টা করে। আমি গাড়ি কিনলাম। “খাওয়া খাওয়া”, বলে আবীর আমার ঘাড় ভেঙে ভালমন্দ খেল। এর কয়েকদিন পরে ও-ও গাড়ি কিনল। আমায় খাওয়ানোর কথাটা তখন বেমালুম ভুলে গেল!