কনগ্র্যাচুলেশন।
থ্যাঙ্ক ইউ। কিন্তু কেন?
আরে, ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড…
ওহো! দ্য ওয়াটারফল। (হাসি) থ্যাঙ্ক ইউ। থ্যাঙ্ক ইউ।
কী ভাবে খবরটা পেলে?
আমি সে দিন যাদবপুর ইউনিভার্সিটি থেকে ফিরছিলাম। সোহম ফোন করে বলল, ভাই, ওয়াটারফল জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে। এত ভাল একটা কাজ যে হয়েছে ফাইনালি, সেটাই দারুণ লাগছে।
সোহম?
সোহম মৈত্র। সোহম আর আমাকে নিয়েই শর্টফিল্মটা, ‘দ্য ওয়াটারফল’।
ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড তো এই প্রথম নয়?
না। ‘কহানি’ ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিল। আমার প্রথম ছবি।
এত কম সময়ে এত সাফল্য, লং রানে গিয়ে প্রভাব ফেলবে?
এটা ভাবি মাঝেমধ্যে। এই ভয়টা হয়। শুধু একটা জিনিসই মাথায় রাখতে চাই, ডেভলপমেন্টের দিক থেকে যেন আমি পিছিয়ে না পড়ি। আমার আর ঋদ্ধির এটা নিয়ে আলোচনাও হয়। আমরা যেন দু’জন দু’জনকে আপগ্রেড করতে করতে যেতে পারি।
আরও পড়ুন, ‘বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত ডাকলেও যে লেজ উঠিয়ে যেতে হবে, তার কোনও মানে নেই’
ঋদ্ধি সেন?
হুম।
ও কি তোমার থেকে ভাল অভিনয় করে?
এনিডে ও আমার থেকে ভাল অভিনেতা। আসলে ও একটা প্রসেসের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। ওয়ার্কশপ করেছে। অনেক আগে থেকে এই জিনিসটা ধরতে পেরেছে। আমার ধরতে একটু দেরি হয়েছে।
খুনসুটি। ঋতব্রত ও ঋদ্ধি। ছবি সৌজন্যে: ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়।
হিংসে হয় না?
অফকোর্স। ঋদ্ধিকে আমি হিংসে করি। সেটা আমি ওকে মুখের ওপর বলেওছি। ওর পড়াশোনাটা অনেক বেশি।
তুমি কি বয়সের তুলনায় একটু বেশিই পরিণত?
(মুচকি হাসি) এই রে, এটা আমি কি করে বলি? তবে এঁচোড়ে পাকা, মুখের ওপর কথা বলে— এটা প্রচুর লোক বলেছে।
রাগ হয় না?
আমার এক স্যার বলেছিলেন, যারা তর্ক করে তাদের সব সময় লোকে ঘেন্না করে। আমি প্রায় সব কিছু নিয়েই ডিবেট করি। আমার যেটা জায়গা আমি সেখানে প্রমাণ করব। দেবদা একবার আমাকে বলেছিল, যেটা করার কাজে করে দেখাবি।
সামনে তো পর পর ছবি আসছে।
হ্যাঁ। সবার প্রথম ‘দুর্গা সহায়’। আগামী ২৮ এপ্রিল রিলিজ।
তোমার চরিত্রটা কেমন?
ভৃগু আমার চরিত্রের নাম। ভীষণ বিচ্ছু একটা ছেলে। কিন্তু খুব ভাল। অ্যানালিটিক্যাল, সিচুয়েশন বুঝে কথা বলে। পরিবারের সবচেয়ে ছোট সদস্য। এই পরিবারের আভিজাত্য রয়েছে, গাম্ভীর্য রয়েছে, ভালবাসা রয়েছে। ভৃগু ওর ছোটকাকা-কাকিমা, দাদু আর দুর্গার খুব ক্লোজ।
ছবিটা কেন দেখবেন দর্শক?
আমি বরং দর্শকদের প্রশ্নটা করি। আপনারা কী চান? ফ্যামিলি ড্রামা? রোমান্স? দাদু-নাতির গল্প? ভাই-বোনের গল্প? থ্রিলার? মারামারি? গান? নাচ— আর কী চাই? একটা ছবিতে সব আছে। সবচেয়ে ইমপরট্যান্ট দুর্গাপুজো আছে। যেটা আসতে অনেক দেরি আছে। কিন্তু ফিলটা পাবেন এই ছবিতে।
আর কী কী ছবি করলে?
রঞ্জন ঘোষের ‘রংবেরঙের কড়ি’। সেখানে অসাধারণ চরিত্র। ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত আমার মা। ভীষণ কঠিন একটা চরিত্র। ওই ছবিটা আমার কাছে তিন দিনের একটা প্র্যাকটিস ছিল। আর কৌশিক করের ‘পর্ণমোচী’। ওই ছবিতে অনলের চরিত্রটা আমার কাছে ভীষণ স্যাটিসফ্যাক্টরি কাজ।
আরও পড়ুন, ইন্ডাস্ট্রিতে আমরা সবাই একে অন্যের পিঠ চুলকোচ্ছি
অভিনেতা হিসেবে কোন কোন জায়গায় উন্নতি দরকার বলে মনে হয়?
আমার কিছু বন্ধু আছে, ওরা অনর্গল রাবড়ি নিয়েও কথা বলতে পারবে, আবার কমিউনিজম অফ রাশিয়া নিয়ে কথা বলাটাও অসুবিধের নয়। যেমন ঋদ্ধির কথা বলছিলাম। ওদের পড়া বা জানা এতটাই যে আমার ওদের দেখে খুব হিংসে হয়। অভিনেতা হিসেবে পড়াটা বাড়াতে হবে। আস্তে আস্তে ডেভলপ করতেই হবে।
টিম ‘দুর্গা সহায়’।
পেশাদার জীবনে উন্নতির জন্য ব্যক্তিগত সম্পর্ক ব্যবহারে বিশ্বাসী? যেখানে বাবা (শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়) এই ইন্ডাস্ট্রিরই সদস্য?
আমি চাই সম্পর্কগুলো যেন এমন হয়, ধরুন যদি জানতে পারি অরিন্দম কাকু (অরিন্দম শীল) একটা ছবি করছে আমি ফোন করে বলতে পারি ওই চরিত্রটা ওকে দিলে, তুমি আমাকে চ্যালেঞ্জটা দিয়ে দেখো। আমি করব। সম্পর্কগুলো যেন এমন ফ্রেন্ডলি জায়গায় থাকে।
আরও পড়ুন, ‘দর্শকদের চাহিদা অনুযায়ী মেগার স্টোরি লাইন পাল্টে দেওয়া হয়’
ইন্ডাস্ট্রিতে কাউকে দেখলে খুব বিরক্ত লাগে?
হ্যাঁ। অনির্বাণ ভট্টাচার্য। ওকে দেখলে সত্যি বিরক্ত লাগে।
সেকি! কেন?
অরিন্দম কাকুর পরের ছবি ‘ধনঞ্জয়’-এর শুটিংয়ের জন্য অনির্বাণদা হোয়াটস্অ্যাপ বন্ধ করে দিয়েছে। কারও সঙ্গে কথা বলছে না। কোথাও বেরোচ্ছে না। আমি দেখি আর ভাবি, এটা কে? ওর ডেডিকেশনটা ভীষণ অ্যাপ্রিসিয়েট করি। সে জন্যই তো হিংসে। বলতে পারেন অনির্বাণদা আমার মেল ক্রাশ।
ছবি: অনির্বাণ সাহা।