আয়ুষ্মান খুরানা।
প্র: ২০১৭তে এতগুলো হিট। নিশ্চয়ই দারুণ কাটল?
উ: অসাধারণ। আমি সাধারণত বছরে একটা ছবি করি। এ বার তিনটে ছিল। প্রত্যেকটার চরিত্র আলাদা। তাই বছরটা ব্যস্ত গেলেও বেশ ভাল কেটেছে।
প্র: ‘ভিকি ডোনার’ থেকেই অন্য ধরনের ছবি শুরু করেছেন। সেই মানটা বজায় রাখতে চাপ লাগে?
উ: আনকনভেনশনাল চরিত্রের খোঁজ থাকেই। তবে আমি এমন দুনিয়ায় আছি, যেখানে চাই দর্শকরা আমায় বিশ্বাস আর গ্রহণ করুন। ১০০ কোটির জন্য ছুটছি না।
প্র: কিন্তু এখন তো অনেকেরই লক্ষ্য ১০০ কোটি!
উ: পুরোপুরি নয়। সব ছবিকেই ১০০ কোটির হিট কেন দিতে হবে? সেটা তো প্রতিটা আলাদা ছবির নানা রকম বাজেটের উপর নির্ভর করছে।
প্র: অভিনয়, রেডিয়ো জকি, অ্যাঙ্কর, ভিডিয়ো জকি, নাটক, গান কম্পোজ ও গাওয়া, লেখালিখি— বহুমুখী প্রতিভার মধ্যে সবচেয়ে কাছের কোনটা?
উ: যা থেকে তৃপ্তি পাব, সেটাই কাছের। আসলে প্রতিটা মাধ্যমই আমাকে দিয়ে অভিনয় করিয়েছে। আমি তো বরাবর অভিনেতাই হতে চেয়েছি। চণ্ডীগড় থেকে এসেছি, কাউকে চিনতাম না। অনেক কিছু করতে হয়েছে। তাই জার্নিটাও দারুণ। আর যা-ই করি না কেন, ট্যালেন্টই শেষ কথা। বরুণ, রণবীর (কপূর), আলিয়াকেই দেখুন। প্রতিভার জন্যই তো টিকে আছে।
প্র: থিয়েটার আর পথনাটিকা— দুটোই করেছেন। কোনটা বেশি কঠিন?
উ: সবচেয়ে জরুরি হল কোনও বার্তা দেওয়া। আর পথনাটিকাই কঠিন বেশি। কারণ, তক্ষুনি একটা ভিড়কে টেনে আনতে হয় নিজের দিকে। তাঁদের কনভিন্স করে নাটক শুরু করতে হয়।
আরও পড়ুন: জন্মদিনে ভক্তদের বিশেষ বার্তা দিলেন বিদ্যা, দেখুন ভিডিও
প্র: হিন্দিতে ব্লগ লেখার কারণটা ঠিক কী?
উ: হিন্দি তো প্রথম ভাষা, ভীষণ ভালবাসি। তাই লেখালিখিটাও হিন্দিতেই। পরে কনভেন্টে গিয়েছি, ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়েছি। তবু হিন্দির টান কমেনি।
প্র: বলিউড কি বদলাচ্ছে?
উ: আমার মনে হয়, এটাই তো বলিউডের সেরা সময়। ‘বদ্রীনাথ...’, ‘গোলমাল...’-এর মতো কমার্শিয়াল ছবি চলছে। ‘বাহুবলী’ও চলছে। আবার লোকে ‘হিন্দি মিডিয়াম’-এর মতো বিষয়ভিত্তিক ছবিও দেখছে। একই সঙ্গে কমার্শিয়াল, প্যারালাল ফিল্ম উপার্জন করছে। আর এটাই তো এই যুগের সেরা ব্যাপার।
প্র: আপনি তো শ্রীরাম রাঘবনের পরের ছবি করছেন?
উ: হ্যাঁ, ‘শ্যুটআউট দ্য পিয়ানো প্লেয়ার’ আমার প্রথম থ্রিলার ছবি। এত দিন যা করেছি, তা থেকে একদম আলাদা। অন্ধ পিয়ানোবাদকের চরিত্র। খুব চ্যালেঞ্জিং। আর আমিও ভীষণ উত্তেজিত।
প্র: তব্বুর সঙ্গে অভিনয় করে কেমন লাগল?
উ: তব্বু অসাধারণ অভিনেত্রী। কাছ থেকে দেখলাম, বিভিন্ন শেডের ইমোশন কী সহজে করতে পারেন! আর আমি তো ওঁর খুব বড় ফ্যান।
প্র: শোনা যাচ্ছে, ‘বধাই হো’তে আপনি নাকি সিদ্ধার্থ মলহোত্রকে রিপ্লেস করেছেন?
উ: কোনও আইডিয়াই নেই। যখন ‘বধাই হো’ পেয়েছিলাম, এক বারও জানতে চাইনি সেটা আগে কাউকে অফার করা হয়েছে কি না। জানতে চাওয়া উচিতও নয়। শুধু জানি, আমি ছবিটা করছি। ব্যস।
প্র: বাড়িতে সময় দিতে পারেন?
উ: খুব কঠিন হয়ে যায়। আমি তো ইয়ং ফাদার। বিরাজবীর (ছেলে) আর বরুষ্কা (মেয়ে) খুবই ছোট। পাঁচ আর তিন বছর বয়স মাত্র। শুধু মনে হয়, ওরা বড় হয়ে যাচ্ছে, সময় দিতে পারছি না। শ্যুটিং থেকে কয়েক দিন পর ফিরে হয়তো দেখি, ওরা আরও বেশি কথা বলতে শিখে গিয়েছে। বেশি বুঝতে পারছে। এত তাড়াতাড়ি বড় হচ্ছে! তবে আমি খুব গর্বিত ওদের নিয়ে। দু’জনেই এত মিষ্টি আর বুদ্ধিমান!
প্র: কলকাতায় ছিলেন তো কিছু দিন। কেমন লাগল?
উ: এখানে থাকার পর শহরটাকে বেশি ভালবেসে ফেলেছি। এত বড় ব্যস্ত শহর, অথচ মানুষজন ঢিমে তালে চলতে জানে! (হেসে) এখানে থাকার পর আরও বেশি করে রবীন্দ্রনাথের লেখা পড়ছি। ওঁর গান শুনছি!
প্র: নতুন বছরের রেজোলিউশন কী?
উ: আমার কাছে এটা আর একটা নতুন দিন মাত্র। কেউ চাইলে রোজ রেজোলিউশন নিতে পারেন। তবে আমি চাই, আরও বেশি করে অন্য ধরনের ছবি করতে।
কথোকপথন শেষ হওয়ার আগেই আয়ুষ্মান আবদার জানালেন, দেখা হলে ওঁকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বই দিতে হবে। ফোন রাখলেন ‘ধন্যবাদ’ জানিয়ে। সত্যিই ভালবেসে ফেলেছেন বাংলাকে!