আনিস বাজমি।
তিনি নানা পটেকরের মতো সিরিয়াস অভিনেতাকে দিয়ে কমেডি করিয়েছেন। হাসির ছবিতে বলিউডে এক চেটিয়া দাপট আনিস বাজমির। ‘নো এন্ট্রি’, ‘ওয়েলকাম’, ‘ওয়েলকাম ব্যাক’ সব ক’টা সুপারহিট। তাঁর শেষ ছবি ‘মুবারকাঁ’ও সফল।
অথচ আনিস কেরিয়ারের শুরুর দিকে সিরিয়াস ঘরানার ছবিও বানিয়েছেন। কমেডি ছবি সফল হচ্ছে দেখেই কি এ দিকে মনোযোগ দিলেন? ‘‘শুরুর দিকে পারিবারিক ছবি বানিয়েছি। ‘পেয়ার তো হোনা হি থা’ রম-কম ছিল। তার পর ‘দিওয়ানগি’র মতো থ্রিলার। আর একটা জিনিস বলি, ডেভিড ধবনের কমেডি ছবিগুলো কিন্তু আমার লেখা। তাই হঠাৎ করে যে কমেডির দিকে ঝুঁকলাম, তা কিন্তু নয়,’’ বললেন আনিস।
‘মুবারকাঁ’র এই সাফল্য আশা করেছিলেন? জবাবে বললেন, ‘‘একটি ছবি তৈরি করার সময় নিজের উপর বিশ্বাসটাই আসল। তাই খুব একটা অবাক হইনি। দর্শক আমার ছবি দেখে প্রাণ খুলে হাসছেন। এর চেয়ে বড় পাওনা আর কী হতে পারে! ’’ তাঁর ‘নো এন্ট্রি’ কিংবা ‘ওয়েলকাম’ টেলিভিশনে নিয়মিত দেখানো হয়। আর সব সময়েই ভাল টিআরপি। উত্তেজিত হয়ে বললেন, ‘‘এই জিনিসটাই পরিচালক হিসেবে অনুপ্রেরণা জোগায়। একটা ছবি সিনেমা হলে সফল হওয়ার পর ১০ বছর ধরে টেলিভিশনেও নিয়মিত দেখানো হচ্ছে। আর দর্শক সেটা দেখে একই ভাবে হাসছেন।’’
আনিসের মতে, কমেডি ছবি তৈরি করাটা সহজ কাজ নয়। বুঝিয়ে বললেন, ‘‘এখানে লেখার কাজটাই আসল। বিনোদন দিয়ে দর্শককে ধরে রাখতে হবে।’’ তাঁর নিজের লার্জার দ্যান লাইফ জঁর পছন্দের। হেসে বললেন, ‘‘ওই আর্ট ফিল্ম আমি বুঝতে পারি না। রুটি বানাচ্ছে তো বানাচ্ছেই। এ দিকে আমার খাওয়া গেল। এই রকম সিনেমা আমার ভাল লাগে না!’’ জেমস বন্ডের ছবি, রাজ কপূর, মনমোহন দেশাই এঁদের ছবির ভক্ত আনিস জানালেন, ৩৫০ বার তিনি ‘মুঘল-এ-আজম’ দেখেছেন। ‘‘পরিচালনার পোকা ওই ছবিটার জন্যই আমার মাথায় ঢোকে। এখনও মন খারাপ হলে ছবিটা দেখি।’’
নানা পটেকরকে দিয়ে ‘ওয়েলকাম’-এ কমেডি করার কথাটা কী ভাবে আপনার মাথায় এল? ‘‘কাস্টিংয়ের সময়েও অনেকে অবাক হয়েছিলেন। আমার মনে হতো, নানাকে দিয়ে কমেডি করালে ভালই হবে,’’ জোর গলায় বললেন।
অজয় দেবগণ, সলমন খান, অনিল কপূর, অক্ষয়কুমার—সকলের সঙ্গেই ছবি করেছেন পরিচালক। কার কমিক টাইমিং তাঁকে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করেছে? তুলনায় যেতে চাইলেন না আনিস, ‘‘সকলেরই আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে। সলমন কমেডিটা খুব সহজে করে ফেলতে পারে। অনিল-আমার জুটি নাকি সবচেয়ে ভাল বলে থাকে লোকে। অক্ষয় তো সব সময়ই দারুণ।’’
তবে পরিচালকের কাছে সবচেয়ে মুশকিল নিয়মিত ছবি বানিয়ে যাওয়াটা। যে কারণে ‘মুবারকাঁ’র পর একটু বিরতি নিতে চান। বললেন, ‘‘আরে, আমি তো ফ্যাক্টরি নই। কমেডি ছবি তৈরি করতে অনেক ভাবতে হয়। পেয়ার-মহব্বত সে বনানা পড়তা হ্যায়। নইলে কী আর দর্শক ১০ বছর ধরে একই জিনিস দেখে হাসতে থাকেন!’’ একটু থেমে নিজেই যোগ করলেন, ‘‘আসলে কী জানেন তো, কমেডি ছবির সেটে একজন পাগল থাকাটা জরুরি। আর আমার সেটে আমিই পাগল!’’ কথাটা শেষ করেই দরাজ গলায় হাসতে থাকলেন।