নির্বাক ছবিতে অনুষ্কার সেতার

সত্যজিৎ রায়ের অপু ট্রিলজির সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে তাঁর বাবার নাম। তিনটি ছবিতেই সুর দিয়েছিলেন প্রয়াত পণ্ডিত রবিশঙ্কর। এ বার কালজয়ী এক ভারতীয় সিনেমার সঙ্গে নাম জড়াতে চলেছে রবি-কন্যা অনুষ্কা শঙ্করেরও। এই প্রথম কোনও ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনার কাজ করবেন তিনি।

Advertisement

শ্রাবণী বসু

লন্ডন শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৭ ০২:২৫
Share:

সত্যজিৎ রায়ের অপু ট্রিলজির সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে তাঁর বাবার নাম। তিনটি ছবিতেই সুর দিয়েছিলেন প্রয়াত পণ্ডিত রবিশঙ্কর। এ বার কালজয়ী এক ভারতীয় সিনেমার সঙ্গে নাম জড়াতে চলেছে রবি-কন্যা অনুষ্কা শঙ্করেরও। এই প্রথম কোনও ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনার কাজ করবেন তিনি।

Advertisement

নির্বাক যুগের ছবি ‘সিরাজ’-এর ডিজিটাল পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে ইংল্যান্ডে। আর তাতে লাইভ মিউজিক বাজানোর দায়িত্বে রয়েছেন অনুষ্কা। ভারত-ব্রিটেন সংস্কৃতি-বর্ষ উদ্‌যাপন উপলক্ষে সারা বছর জুড়েই নানা ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তারই অঙ্গ হিসেবে ‘সিরাজ’ প্রদর্শিত হবে লন্ডনের বার্বিকান থিয়েটারে। আগামী ১৪ অক্টোবর। ছবিটি যেহেতু নির্বাক তাই তার ডিজিটাল পুনরুদ্ধারের সময় তাতে নতুন করে যোগ করা হচ্ছে সঙ্গীতও। ছবিটির প্রদর্শনীর সময় তার সঙ্গে যে সঙ্গীত বাজবে, তারই পরিচালনা করবেন সেতারশিল্পী।

১৯২৮ সালে তৈরি ছবি ‘সিরাজ’-এর পরিচালক ছিলেন হিমাংশু রায়। সম্রাট শাহজাহান ও তাঁর স্ত্রী মুমতাজ মহলের প্রেম কাহিনিই ছিল ছবির মূল বিষয়। হিমাংশু রায় নিজেও ছবিতে ছিলেন। তাজমহল তৈরির এক কারিগরের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন তিনি। এ বছরের শেষে ছবিটি আগরায়, তাজমহলের সামনেও প্রদর্শনীর কথা রয়েছে।

Advertisement

ছবিটি পুনরুদ্ধারের দায়িত্বে রয়েছে ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট (বিএফআই)। তার প্রধান কিউরেটর রবিন বেকারকে অনুষ্কা জানিয়েছেন, এই কাজটা পেয়ে তিনি কতটা উত্তেজিত। ছবিটির গল্পই তাঁকে সবচেয়ে বেশি নাড়া দিয়েছে বলে জানিয়েছেন শিল্পী। ‘‘ওই যুগের কোনও ছবি এর আগে আমি দেখিনি। শিরাজ দেখে আবেগে ভেসে গিয়েছিলাম। ছবিতে গ্রামীণ ভারতবর্ষের দৃশ্যপট রয়েছে। রয়েছে তখনকার দিনের বড় বড় প্রাসাদও। এক জন সঙ্গীত পরিচালকের অনেক কিছু করার আছে ছবিটায়,’’ বলছেন উৎসাহী অনুষ্কা।

ছবির সঙ্গীত নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে উঠে এসেছে রবিশঙ্করের নামও। অনুষ্কা জানিয়েছেন, সত্যজিৎ রায়ের ছবিতে সুর দেওয়া নিয়ে বাবা অনেক কথা বলেছেন তাঁকে। তাঁর কথায়, ‘‘বাবা বলেছিলেন আট ঘণ্টা লেগেছিল পথের পাঁচালির জন্য সুর তৈরি করতে। প্রথমে উনি এক একটি দৃশ্য দেখতেন, তার পর সুর ভাঁজতেন। পরিচালক নিজেই তাঁকে ধরে ধরে দৃশ্যগুলি দেখাতেন, বোঝাতেন। বাবার কাজ ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। তাই এত ভাল কাজ করতে পেরেছিলেন। আমারও সে রকমই কিছু করার ইচ্ছে আছে।’’ ‘সিরাজ’-এর জন্য সেতারের মতো ঐতিহ্যশালী ভারতীয় বাদ্যযন্ত্র ব্যবহারের কথাই ভাবছেন অনুষ্কা।

ছবির তাঁর সবচেয়ে প্রিয় দৃশ্য কোনটি? এক সেকেন্ডও না ভেবে অনুষ্কা বলে দিলেন, ‘‘চুমুর দৃশ্যটা। এত আবেগঘন চুম্বন দৃশ্য এর আগে কোনও ভারতীয় ছবিতে আমি দেখিনি। আমি শুধু ভাবছি সঙ্গীত দিয়ে ওই দৃশ্যটা বোঝাব কী করে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন